শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
দেশের বন্যা পরিস্থিতি

সিলেট সুনামগঞ্জ কুড়িগ্রামে উন্নতি মৌলভীবাজারে ঘরে এখনো পানি

ম ডায়রিয়া আক্রান্ত ৬৯৬৩ জন ম ৫ দিনে আরও কমবে বৃষ্টিপাত ম তিস্তা ও যমুনায় বেড়েছে পানি ম হবিগঞ্জে ধীরগতিতে কমছে পানি
যাযাদি ডেস্ক
  ০৩ জুলাই ২০২২, ০০:০০

সিলেট, সুনামগঞ্জ ও কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হয়েছে। আর মৌলভীবাজারে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ দুর্গতদের ঘরে ঘরে এখনো পানি আটকে রয়েছে। তারা চরম দুর্ভোগে দিন কাটাচ্ছে। অন্যদিকে, তিস্তার পানি বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই করছে। বেড়েছে বগুড়ায় যমুনা নদীর পানিও। একই সঙ্গে হবিগঞ্জে ধীগতিতে কমছে পানি। এদিকে, দেশে বন্যায় ২৪ ঘণ্টায় কারও মৃতু্য হয়নি। বন্যার শুরু থেকে এ পর্যন্ত ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে ৬ হাজার ৯৬৩ জন। এছাড়া শুক্রবার রাতের আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে- আগামী পাঁচ দিনে দেশে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা আরও কমতে পারে।

শনিবার সারাদেশে বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দেশে বন্যায় ২৪ ঘণ্টায় কারও মৃতু্য হয়নি। ফলে মৃতু্যর সংখ্যা ৯৫ জনই রয়েছে। বন্যাকবলিত এলাকায় বন্যাসৃষ্ট দুর্ঘটনা এবং বিভিন্ন রোগে তাদের মৃতু্য হয়েছে। এদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৫৬ জনের মৃতু্য হয়েছে সিলেট বিভাগে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়- শুক্রবার পর্যন্ত বন্যাজনিত বিভিন্ন রোগে ১০ হাজার ২০৯ জন আক্রান্ত থাকলেও শনিবার তা বেড়ে ১০ হাজার ৭৭৪ জনে দাঁড়িয়েছে। বন্যার শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে ৬ হাজার ৯৬৩ জন। আর মৃতু্য হয়েছে ১ জনের। আরটিআইয়ে (চোখের রোগ) আক্রান্ত হয়েছে ৪৩২ জন। তবে এতে কারও মৃতু্য হয়নি।

বন্যার প্রকোপের এই সময়ে বজ্রপাতে ১৫ জনের মৃতু্য হয়েছে। সাপে কেটেছে ১৪ জনকে। তাদের মধ্যে দুইজনের মৃতু্য হয়েছে। আর পানিতে ডুবে মৃতু্য হয়েছে ৬৮ জনের।

এদিকে, আগামী পাঁচ দিনে দেশে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা আরও কমবে। ফলে সপ্তাহের শেষের দিকে গরম অনুভূতি আরও বাড়তে পারে। শুক্রবার রাতে এমন পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস। রোববার ও সোমবার ?দুই দিন বৃষ্টিপাতের প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে। এ সময়ের শেষার্ধে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা হ্রাস পেতে পারে।

আমাদের সিলেট অফিস জানায়, শনিবার সিলেটের আকাশ ছিল রৌদ্রোজ্জ্বল, নীল আকাশে সাদা মেঘের ভেলা। এমন অবস্থায় পাউবো দাবি করছে, আগামী ১০ দিন সিলেটে আগাম বন্যার কোনো আশঙ্কা নেই। নদ-নদীর পানি কমবে। একই সঙ্গে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হচ্ছে।

শুক্রবার রাত থেকে বৃষ্টি না হওয়ায় কমেছে নদ-নদীর পানি। দীর্ঘদিন পর সকাল থেকেই সূর্য তাপ ছড়ানোয় সিলেটের বিভিন্ন এলাকার বন্যাকবলিত এবং নগরের বাসিন্দাদের মধ্যে অনেকটা স্বস্তি দেখা দিয়েছে।

বানভাসি মানুষ জানায়, বন্যায় তারা পানিবন্দি প্রায় ১৫ দিন ধরে। কিন্তু দুই দিন বৃষ্টি না হওয়ায় পানি কমতে দেখে আমাদের বেশ ভালো লাগছে। আমাদের আশা আগামী কয়েক দিনের মধ্যে বন্যার পানি পুরোপুরি কমে যাবে।

সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা যায়, শনিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত সিলেটের দুটি নদীর পানি চারটি পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও পানি কমছে। নদীর কোনো কোনো পয়েন্টে শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে শনিবার সকাল ৯টার ব্যবধানে দশমিক ২০ সেন্টিমিটার থেকে দশমিক শূন্য ২ সেন্টিমিটার কমেছে।

শনিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়া কুশিয়ারা নদীর পানি অমলশিদ, শেওলা, কুশিয়ারা পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে শুক্রবার সন্ধ্যার তুলনায় শনিবার সকাল ৯টায় দশমিক ১০ সেন্টিমিটার কমে ১৩ দশমিক ২৪ সেন্টিমিটারে অবস্থান করে। নদীর সিলেট পয়েন্টে শুক্রবার সন্ধ্যার তুলনায় শনিবার সকাল ৯টায় দশমিক শূন্য ৭ সেন্টিমিটার কমে ১০ দশমিক ৬৬ সেন্টিমিটারে অবস্থান করে। কুশিয়ারা নদীর অমলশিদ পয়েন্টে পানি শুক্রবারের তুলনায় শনিবার দশমিক ১৬ সেন্টিমিটার কমেছে। শেওলা পয়েন্টে পানি দশমিক শূন্য ৫ সেন্টিমিটার, ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে দশমিক শূন্য ২ সেন্টিমিটার কমেছে।

সিলেট পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী আসিফ আহমেদ বলেন, বৃষ্টি না হওয়ায় নদ-নদীর পানি কমছে, তবে অনেকটা ধীরগতিতে। আশা করা যাচ্ছে, আরও কয়েক দিন বৃষ্টি না হলে পানি আরও কমবে। তিনি বলেন, সিলেটে আগামী ১০ দিনের মধ্যে বন্যার আগাম কোনো সতর্কতা নেই।

আমাদের সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি জানান- শনিবার সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও এখনো বিভিন্ন উপজেলায় মানুষের বাড়িঘর, রাস্তাঘাটে বন্যার পানি আছে। পানি কিছুটা কমলেও অনেক মানুষ আশ্রয়কেন্দ্র থেকে বাড়িঘরে ফিরতে পারছে না। অনেকের বাড়িঘর বন্যায় মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আবার অনেকের ঘরবাড়ি বানের স্রোতে ভেসে যাওয়ায় আশ্রয়কেন্দ্র থেকে ফিরে কোথায় গিয়ে থাকবে সেই দুশ্চিন্তায় রয়েছে।

সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর গণমাধ্যমকে জানান, দ্বিতীয় দফা বন্যায় সুনামগঞ্জের ১২টি উপজেলার ৮৮টি ইউনিয়নের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। প্রায় ৪৫ হাজার ২৮৮টি ঘরবাড়ির ক্ষতি হয়েছে। সেই তালিকা আমরা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুনামগঞ্জের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ৫ হাজার পরিবারকে ৫ কোটি টাকা অনুদান দিয়েছেন।

আমাদের কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি জানান- কুড়িগ্রামে সবকটি নদ-নদীর পানি কমে দ্বিতীয় দফা বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড শনিবার দুপুরে জানায়, সব নদীর পানি কমে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে জেলায় নতুন করে সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হচ্ছে। কিন্তু এ অবস্থায় দ্বিতীয় দফা বন্যায় জেলা সদর, নাগেশ্বরী, ফুলবাড়ী ও উলিপুর উপজেলার চর ও দ্বীপচরের নিম্নাঞ্চলসমূহ পস্নাবিত থাকায় পানিবন্দি মানুষের দুর্ভোগ কমেনি।

বানভাসি মানুষের দুর্ভোগ এখনো রয়েছে। অনেকের ঘরবাড়ি বন্যার পানিতে ভেসে গেছে। বন্যাদুর্গত এলাকায় দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানি ও গবাদিপশুর খাদ্য সংকট। অনেক এলাকায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ ঘরবাড়িতে এখনো পানি থাকায় স্বাভাবিক হয়নি জীবনযাত্রা। এছাড়াও পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে নদীভাঙনও শুরু হয়েছে।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম গণমাধ্যমকে জানান, বন্যা ও নদীভাঙনে জেলার সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত সদর ও উলিপুর উপজেলার কয়েকটি এলাকা। উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের তালিকা করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে আপাত তিন শতাধিক পরিবার নদীতে তাদের বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানান তিনি।

আমাদের মৌলভীবাজার প্রতিনিধি জানান- মৌলভীবাজারের হাওড় অঞ্চলের বন্যাকবলিত বাসিন্দারা চরম দুর্ভোগে দিন কাটাচ্ছে। জেলার হাওড় তীরবর্তী এলাকার ৭০-৮০ শতাংশ ঘরে এখনো পানি। অনেকেই আশ্রয় কেন্দ্রে আবার কেউ কেউ ঘরে পানির মধ্যে দিনাতিপাত করছে। কিছু পরিবার উজান এলাকায় আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে।

দীর্ঘস্থায়ী বন্যায় মানুষের মধ্যে পানিবাহিত বিভিন্ন রোগ দেখা দিয়েছে। শুকনো জায়গা না থাকায় পানিতে চলাফেলা করায় অধিকাংশ মানুষের পায়ে ঘা দেখা দিয়েছে। শহর কিংবা শহরতলির সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় বন্যার্ত মানুষ হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নিতে পারছে না। সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা যায়, পানিবাহিত রোগ ডায়রিয়ায় ৪৯ জন, চর্মরোগে ৫০ জন, জ্বরে ১৪ জন, চোখের ভাইরাসে ১২ জন, চোখে আঘাতপ্রাপ্ত ৬ জন, সাপে দংশনে ৪ জন ও অন্যান্য রোগে ৩৭ জনসহ মোট ১৭২ জন শিশু, নারী ও পুরুষ আক্রান্ত হয়েছে। এদিকে গত ৮ দিনে জেলায় পানিবাহিত বিভিন্ন রোগে মোট ৭৩০ জন আক্রান্ত হয়েছে।

এদিকে পানিবন্দি এলাকায় কাজ না থাকায় চরম বিপাকে পড়েছেন দিনমজুররা। সব মিলিয়ে দুর্বিষহ জীবনযাপন করছেন জেলার কুলাউড়া, জুড়ী ও বড়লেখা উপজেলার কয়েক লাখ মানুষ। নিঃস্ব হয়ে পড়েছে হাওড় তীরের বাসিন্দারা।

সরেজমিন কুলাউড়া উপজেলার ভুকমিশইল ইউনিয়নে গেলে দেখা যায়, ইউনিয়নে যাতায়াতের প্রতিটি রাস্তা এখন পানির নিচে। স্কুল, কলেজ, মসজিদ, মাদ্রাসা ও মন্দির তলিয়ে গেছে। প্রতিটি হাটবাজার এখনো পানির নিচে। মানুষের চলাচলের কোনো জায়গা নেই। দুর্গতরা জানান- দীর্ঘস্থায়ী বন্যার কারণে মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছে। পানিবাহিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে এই অঞ্চলের মানুষ। পানি না কমলে মানুষের দুর্ভোগের অন্ত থাকবে না। অনেকটা বিপর্যয় দেখা দেবে।

আমাদের রংপুর প্রতিনিধি জানান- তিস্তা নদীর পানি আবারও বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই করছে। শনিবার সকাল ৬টায় তিস্তার ডালিয়া পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। তিস্তার পানি বৃদ্ধির ফলে নদী তীরবর্তী মানুষরা আবারও আতঙ্কে সময় পার করছে। সেই সঙ্গে নদীভাঙনের শঙ্কা করছে তারা।

কয়েক দিনের ব্যবধানে একাধিকবার তিস্তার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করায় অনেকের ভুট্টা, বাদাম, আমনের বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তারা নতুন করে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছিল যখন তখনই আবার পানি বৃদ্ধির শঙ্কায় তারা আতঙ্কিত।

রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, শনিবার ভোরে তিস্তার ডালিয়া পয়েন্টে ৫২ দশমিক ৫৫ সেন্টিমিটারে প্রবাহিত হয়েছে। রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান হাবীব গণমাধ্যমকে বলেন, বর্ষা মৌসুমে তিস্তার পানি বাড়বে-কমবে এটাই স্বাভাবিক।

আমাদের স্টাফ রিপোর্টার, বগুড়া জানান- বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে যমুনা নদীর পানি আবারও বাড়তে শুরু করেছে। পানি বাড়ার সংবাদে নদী পাড়ের বাসিন্দারা আবারও দুশ্চিন্তায় পড়েছে। জানা যায়, গত ১৭ জুন বিকাল থেকে যমুনা নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে। এরপর পানি বেড়ে গত ২১ জুন বিপৎসীমার সর্বোচ্চ ৬৪ সে. মি ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। পানি বেড়ে সারিয়াকান্দি উপজেলার ৮৪টি গ্রাম পস্নাবিত হয়। গত ২২ জুন থেকে যমুনা নদীর পানি কমতে থাকে। বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসে। ২৮ জুন পর্যন্ত যমুনার পানি বিপৎসীমার ৭৬ সে.মি নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। ২৯ জুন সকাল হতে পানি আবারও বাড়তে থাকে। ফলে সারাদিনে পানি বেড়ে বিপৎসীমার ৬৭ সে. মি নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। পানি আবারও বাড়তে বাড়তে শনিবার দুপুর ১২টায় সারিয়াকান্দিতে যমুনা নদীর পানির উচ্চতা ছিল ১৬.৪১ মিটার যা বিপৎসীমার ৩১ সে. মি নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়।

সারিয়াকান্দিতে দায়িত্বে থাকা পানি উন্নয়ন বোর্ডের গেজ রিডার পরশুরাম জানিয়েছেন, শনিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত যমুনা নদীতে পানির উচ্চতা ছিল ১৬.৪১ মিটার যা বিপৎসীমার ৩১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। প্রথম দফায় পানি নেমে বিপৎসীমার ৬৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়।

আমাদের হবিগঞ্জ প্রতিনিধি জানান- হবিগঞ্জে বন্যার পানি ধীরগতিতে কমছে। তবে কালনী ও কুশিয়ারা নদীর পানি এখনো বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। যেসব এলাকায় দিয়ে পানি কমছে, সেসব এলাকার দুর্গতরা আশ্রয়ণ প্রকল্প থেকে বাড়িতে ফিরছে। বাড়িতে ফিরলেও বাড়ির উঠানে হালকা পানি রয়েছে। ওই পানি দিয়ে চলাচল করায় তাদের পায়ে চর্মরোগ দেখা দিচ্ছে।

বানভাসিরা জানায়, কিছুটা পানি কমায় অনেকেই বাড়িতে উঠেছে। কিন্তু পচা পানিতে চলাচল করায় পায়ে চর্মরোগ দেখা দিয়েছে। বিশুদ্ধ পানিও পান করতে পারছে না তারা।

হবিগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহনেওয়াজ জানান, কালনী ও কুশিয়ারা নদীর ভাটিতে পলিমাটি জমা হওয়ায় পানি ধীরগতিতে কমছে। এখনো ওই ২টি নদীতে পানি বিপৎসীমার ১ মিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া টানা বৃষ্টি ও উজানের ঢলে চলতি মাসে নতুন করে বন্যা হতে পারে।

হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক ইশরাত জানান, প্রতিদিনই পানি কমছে। আর পানি কমাই বন্যার্তরা আশ্রয় কেন্দ্র থেকে বাড়িতে ফিরছে। জেলার বিভিন্ন স্থানে সাড়ে ৫০০ আশ্রয়ণ কেন্দ্রে ২৪ হাজারের উপরে বন্যার্তরা আশ্রয় নিয়েছিল। কমে এখনো সাড়ে ৩শ' আশ্রয়ণ কেন্দ্রে ১৯ হাজার বন্যার্তরা রয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে