ইভিএম পরিচালনায় তিন সহস্রাধিক সেনাসদস্য

প্রকাশ | ১৬ ডিসেম্বর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি রিপোটর্
আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নিবার্চনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) পরিচালনার জন্য প্রায় তিন হাজার ৩শ’ সেনাসদস্য মোতায়েন করবে নিবার্চন কমিশন (ইসি)। প্রথমবারের মতো ইভিএমে ভোটগ্রহণ হলেও সীমিত পরিসরে মোট ছয়টি আসনকে দ্বৈবচয়ণের ভিত্তিতে বেছে নিয়েছে নিবার্চন আয়োজনকারী সংস্থাটি। এ ক্ষেত্রে রংপুর-৩, খুলনা-২, সাতক্ষীরা-২, ঢাকা-৬ ও ১৩ এবং চট্টগ্রাম-৯ আসনে ইভিএম ব্যবহার করা হবে। এ সব আসনে মোট ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ৮৫৪টি। সূত্র জানায়, ভোটকেন্দ্রে ইভিএমের কারিগরি সহায়তার জন্য থাকবে মোট ২ হাজার ৫৩৫ জন সেনাসদস্য। প্রতি কেন্দ্রের জন্য গঠিত একেকটি টিমে থাকবেন সশস্ত্র বাহিনীর তিনজন করে সদস্য। এদের মধ্যে একজন করপোরাল, দু’জন ল্যান্স করপোরাল অথবা সৈনিক বা সমমযার্দার সেনাসদস্য। তাদের কাছ থেকে তথ্য নেবে ভ্রাম্যমাণ কারিগরি টিম। এই টিমে থাকবেন মোট ৫০৭ সেনাসদস্য। প্রতি পঁাচ কেন্দ্রের জন্য গঠিত প্রতি টিমে থাকবেন তিনজন করে সেনাসদস্য। এদের মধ্যে একজন সাজের্ন্ট, দু’জন করপোরাল অথবা ল্যান্স করপোরাল বা সৈনিক সমমযার্দার সেনাসদস্য নিয়োজিত থাকবেন। ভ্রাম্যমাণ টিমের কাছ থেকে তথ্য নেবে ভ্রাম্যমাণ তদারকি টিম। প্রতি ১৫টি কেন্দ্রের জন্য একটি টিম থাকবে। এ ক্ষেত্রে মোট ১৬৯ জন্য সেনাসদস্য নিয়োজিত থাকবেন। যাদের মধ্যে রয়েছেন একজন জেসিও, দু’জন সাজের্ন্ট অথবা ল্যান্স করপোরাল বা সমমযার্দার সেনাসদস্য। এদের ওপরে কাজ করবে প্রতি ৫০ কেন্দ্রের জন্য গঠিত একটি করে মোট ১৭টি টিম। আর প্রতি টিমে তিনজন করে মোট ৫১ জন সেনাসদস্য কাজ করবেন। এদের মধ্যে রয়েছেন একজন মেজর অথবা ক্যাপ্টেন অথবা লেফটেন্যান্ট, একজন জেসিও এবং করপোরাল অথবা ল্যান্স করপোরাল অথবা সৈনিক সমমযার্দার সেনাসদস্য। এই টিম সহকারী রিটানির্ং অফিসার বা উপজেলা নিবার্চন কমর্কতার্রা কাযার্লয়ে স্থাপিত কন্ট্রোল রুমের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করবে। আর সবগুলো টিমের কাজ তত্ত্বাবধায়ন করবে উচ্চ পযাের্য়র আরেক টিম। প্রতি আসনে পঁাচজন করে সেনাসদস্য নিয়ে এই টিম গঠিত হবে। অথার্ৎ, মোট ছয়টি আসনে ৩০ জন সেনাসদস্য নিয়োজিত থাকবেন। এতে একজন মেজর, দু’জন ক্যাপ্টেন অথবা লেফটেন্যান্ট, একজন জেসিও অথবা সাজের্ন্ট এবং একজন করপোরাল অথবা ল্যান্স করপোরাল অথবা সৈনিক সমমযার্দার সদস্য। এই টিম রিটানির্ং কমর্কতার্র কাযার্লয়ে স্থাপিত কন্ট্রোলরুমের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করবে। ইভিএম পরিচালনা করা হবে দু’টি কন্ট্রোলরুমের মাধ্যমে। যার একটি থাকবে নিবার্চন কমিশনে আর একটি থাকবে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে। সেনাসদস্যরা কাজ করবে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের কন্ট্রোলরুমের অধীনে। আর রিটানির্ং কমর্কতার্ ও সহকারী রিটানির্ং কমর্কতার্র কন্ট্রোলরুম কাজ করবে নিবার্চন কমিশনের কন্ট্রোলরুমের অধীনে। কেন্দ্রীয়ভাবে নিবার্চন কমিশন তার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের উচ্চ পযাের্য়র একটি কারিগরি টিমের মাধ্যমে পুরো কাযর্ক্রম পরিচালনা করবে। সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে, ছয়টি আসনে ইভিএম ব্যবহারের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া সফল করতে ১৫ ডিসেম্বর সশস্ত্র বাহিনী সদস্যদের নিজ নিজ নিবার্চনী এলাকায় মোতায়েন করার বিষয়ে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগকে একটি চিঠি দিয়েছে নিবার্চন কমিশন। ভোটগ্রহণ কাযর্ক্রম শেষে নিবার্চন কমিশনের নিদের্শনা সাপেক্ষে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা নিজ নিজ সেনানিবাসে ফিরে যাবেন বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে। ইসির জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম এ সংক্রান্ত চিঠিটি ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট রিটানির্ং কমর্কতাের্দর পাঠিয়েছেন। যার অনুলিপি সশস্ত্র বাহিনীর প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার, তিন বাহিনীর প্রধানদের একান্ত সচিবের কাছেও পাঠানো হয়েছে। চিঠিতে প্রয়োজন সাপেক্ষে জনবল সংখ্যা পরিবতর্ন করার কথাও উল্লেখ করেছে নিবার্চন কমিশন। ইভিএমের ছয়টি আসনে মোট ভোটার ২১ লাখ ২৪ হাজার ৪১১ জন। নিবার্চন কমিশন ইতোমধ্যে সিদ্ধান্ত দিয়েছে প্রতি ইভিএমে ৪৫০ জনের বেশি ভোট না নিতে। এ েেত্র ৬ আসনে প্রায় ৪ হাজার ৭শ ৫০টির মতো ইভিএমে ভোটগ্রহণ করা হবে। সমসখ্যক ইভিএম ব্যাকআপ হিসেবেও রাখবে নিবার্চন কমিশন। সবমিলিয়ে প্রায় ১০ হাজার ইভিএম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এবারে নিবার্চনে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতেও সেনাসদস্যদের মোতায়েন করা হবে। তবে তারা ভোটের মাঠ নামবে ২৪ ডিসেম্বর। মোতায়েন থাকবে ২০১৯ সালের ২ জানুয়ারি পযর্ন্ত। আগামী ৩০ ডিসেম্বরর ভেষংসদ নিবার্চনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।