ইসিতে দেশি-বিদেশি ৩৪৮৩৮ পযের্বক্ষকের আবেদন

প্রকাশ | ১৬ ডিসেম্বর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি রিপোটর্
আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নিবার্চন পযের্বক্ষণের জন্য নিবার্চন কমিশনে (ইসি) নিবন্ধিত ৮১টি দেশি সংস্থার ৩৪ হাজার ৬৭১ জন আবেদন করেছেন। তবে সারাদেশে ২৫ হাজার ৯২০ জন পযের্বক্ষককে অনুমতি দিতে চাইছে ইসি। আর বিদেশি পযের্বক্ষক হিসেবে আবেদন করেছেন ১৬৭ জন। এ ছাড়া এ পযর্ন্ত আটজন বিদেশি সাংবাদিক আবেদন করেছেন। তাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক্সটানার্ল পাবলিসিটি উইংয়ের মাধ্যমে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণের নিদের্শ দিয়েছে নিবার্চন কমিশন। শনিবার নিবার্চন কমিশনে অনুষ্ঠিত কমিশন বৈঠকে উত্থাপিত সভার কাযর্পত্র থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে। প্রধান নিবার্চন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদার সভাপতিত্বে বৈঠকে অন্যান্য কমিশনার ছাড়াও নিবার্চন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ উপস্থিতি ছিলেন। বৈঠকে সাতটি এজেন্ডা নিয়ে আলোচনা হয়। এর মধ্যে দেশি ও বিদেশি পযের্বক্ষক ছাড়া নিবার্চনের সিগনেচার টিউন, টিভিসি, বিদেশি ও স্থানীয় সাংবাদিক, বাংলাদেশ বেতার ও বাংলাদেশ টেলিভিশনের রাজনৈতিক দলের বক্তব্য প্রচার নিয়ে আলোচনা হয়। স্থানীয় পযের্বক্ষক বৈঠকের কাযর্পত্রে উল্লেখ করা হয়, নিবার্চন কমিশনে নিবন্ধিত ১১৮টি সংস্থার মধ্যে ৮১টি সংস্থা থেকে ৩৪ হাজার ৬৭১ জন পযের্বক্ষকের জন্য আবেদন করেছে। কোনো কোনো আসনে অধিক সংখ্যক পযের্বক্ষণের জন্য আবেদন করায় তা কমিয়ে দেয়া হয়েছে। সারাদেশে কেন্দ্রীয়ভাবে ২৫ হাজার ৯২০ জন পযের্বক্ষককে অনুমতি দেয়া হতে পারে। ৮১টি পযের্বক্ষক সংস্থার মধ্যে ১৪টি পযের্বক্ষক সংস্থার বিষয়ে একটি গোয়েন্দা সংস্থার রিপোটর্ রয়েছে। এছাড়া একটি রাজনৈতিক দল থেকে চারটি সংস্থার বিষয়ে অভিযোগ করা হয়েছে। বিদেশি পযের্বক্ষক ফোরাম অব ইলেকশন ম্যানেজমেন্ট বডিস অব সাউথ এশিয়া (এফইএমবিওএসএ), এ-ওয়েব, অ্যাসোসিয়েশন অব আফ্রিকান ইলেকশন অথরিটিসকে (এএইএ) নিবার্চন পযের্বক্ষণের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এদের মধ্যে ভারত, ভুটান ও মালদ্বীপ থেকে নিবার্চন পযের্বক্ষক টিম পাঠানোর বিষয়ে নিশ্চিত করেছে এবং পযের্বক্ষক টিমের সদস্যদের নাম পাঠিয়েছে। আন্তজাির্তক এনজিও নেটওয়াকর্-এনফ্রেল থেকে ৩২ জন এবং নেপালের বেসরকারি সংস্থা ভিপেন্দ্র ইনিশিয়েটিভ কেন্দ্র থেকে তিনজনের জন্য আবেদন জানিয়েছে। বাংলাদেশস্থ ৫২টি কূটনৈতিক মিশন থেকে ১০০ জন বিদেশি এবং লোকাল স্টাফদের বিষয়ে আবেদন জানানো হয়েছে। বিদেশি সংস্থার লোকাল স্টাফদের স্থানীয় পযের্বক্ষক হিসেবে কাডর্ দেয়া হয়। এ ছাড়া ৪ বিদেশি সংস্থা ৩২ জনের জন্য আবেদন জানিয়েছে। এর মধ্যে বিদেশি স্টাফ এবং স্থানীয় স্টাফ রয়েছেন। বিদেশিদের অনুমোদন দেয়া যেতে পারে তবে স্থানীয় স্টাফদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত প্রয়োজন। বিদেশি সাংবাদিক এ পযর্ন্ত ৮ জন বিদেশি সাংবাদিক আবেদন জানিয়েছেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক্সটানার্ল পাবলিসিটি উইংয়ের মাধ্যমে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে তাদের আসতে হবে। স্থানীয় সাংবাদিকদের বিষয়ে নিদের্শনা কাযর্পত্রে আরও উল্লেখ করা হয়, কেন্দ্রীয়ভাবে ঢাকার সাংবাদিকদের অনুমোদন ও কাডর্ নিবার্চন কমিশন সচিবালয় থেকে দেয়া হয়। সব টেলিভিশন চ্যানেল, যেসব পত্রিকা বা সাপ্তাহিকের নাম পিআইডির মিডিয়া গাইড ও ডিএফপির বিজ্ঞাপন তালিকায় রয়েছে সেই সব পত্রিকার সাংবাদিকদের তথ্যাদি যাচাই-বাছাই করে কাডর্ দেয়া হয়। অনলাইন পোটাের্লর ক্ষেত্রে যেসব অনলাইনের অন্তত একজন সাংবাদিকের পিআইডি কাডর্ রয়েছে তাদের কাডর্ দেয়া হয়। পিআইডি থেকে এ তালিকা সংগ্রহ করে তা মিলিয়ে দেখা হয়। তবে কয়েক বছর ধরে অনলাইনের কোনো সাংবাদিককে পিআইডি কাডর্ দেয়া হচ্ছে না। এতে অনেক পরিচিত অনলাইন সাংবাদিকদের অনুমোদন দেয়া হয় না। এতে খুবই সমস্যার সৃষ্টি হয়। এ ছাড়া ঢাকার বাইরে অনলাইন থাকলেও তাদের কাউকে পিআইডি কাডর্ দেয়া হয় না। আসন্ন নিবার্চনে আগের মতো একই নীতিমালা অনুসরণ করা হবে কি না সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত প্রয়োজন। বেতার ও টেলিভিশনে রাজনৈতিক বক্তব্য প্রচার সব জাতীয় সংসদ নিবার্চনে প্রতিদ্ব›দ্বী রাজনৈতিক দলকে তাদের ইশতেহারসহ বক্তব্য প্রচারের সুযোগ দেয়া হয়। একাদশ জাতীয় সংসদ নিবার্চনে এ বিষয়ে কিরূপ ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত প্রয়োজন। অষ্টম ও নবম জাতীয় সংসদ নিবার্চনে বিটিভি বেতার থেকে পলিসি নিধার্রণ করে বক্তব্য প্রচার করা হয়েছিল। তবে এ বিষয়ে গত ২ ডিসেম্বর বিটিভি থেকে জানানো হয়েছে, নিবার্চন কমিশন থেকে যে সিদ্ধান্ত দেয়া হবে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সিগনেচার টিউন নিবার্চনের ১৫ দিন আগে থেকে ভোট গ্রহণের দিন পযর্ন্ত প্রচারের জন্য একটি সিগনেচার টিউনসহ কাউন্ট ডাউন তৈরি করা হয়েছে। এটি অনুমোদিত হলে বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ সব টিভি চ্যানেলে প্রচারের জন্য পাঠানো হবে। এছাড়া নিবার্চন ভবনের রিসিপশনের এলইডি স্ক্রিন এবং ভবনের সামনে পঁাচতলায় স্থাপিত এলইডি স্ক্রিনে প্রচার করা হবে। টিভিসি আচরণবিধি ও তরুণ ভোটার, নারী ভোটার, প্রতিবন্ধী ভোটারদের ভোট দেয়ার বিষয়সহ বিভিন্ন বিষয়ে ছয়টি টিভিসি তৈরি করা হয়েছে। এসব টিভিসি অনুমোদিত হলে বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ সব বেসরকারি টেলিভিশনে জনস্বাথের্ প্রচারের জন্য পাঠানো হবে। এ ছাড়া জেলা তথ্য অফিসের মাধ্যমে নিবার্চনী এলাকায় মোবাইল প্রজেক্টরের মাধ্যমে প্রচার করা হবে। সারাদেশে সব ডিস লাইনের মুভি চ্যানেলে প্রচার করা হবে। একই সঙ্গে নিবার্চন ভবনের এলইডি স্ক্রিন, ফেসবুক, ইউটিউব, ওয়েবসাইটেও প্রচার করা হবে। ইতোমধ্যে ইউএনডিপি প্রকল্প থেকে ছয়টি টিভিসি তৈরি করা হয়েছে, যা বিভিন্ন টেলিভিশনে প্রচারিত হচ্ছে।