পদ্মা সেতু পাড়ি দিতে প্রস্তুত ৩৮ মণের 'সম্রাট'

প্রকাশ | ০৫ জুলাই ২০২২, ০০:০০

ম ফরিদপুর প্রতিনিধি
এবারের কোরবানি ঈদে ঢাকার পশুহাট কাঁপাতে পদ্মা সেতু পাড়ি দেবে ফরিদপুর জেলার সবচেয়ে বড় আকারের ষাঁড় গরু 'সম্রাট'। সাড়ে তিন বছরের এই গরুটি লম্বায় সিনা থেকে পেছন পর্যন্ত ১১ ফুট এবং এর উচ্চতা ফ্লোর থেকে পিঠ পর্যন্ত প্রায় ৬ ফুট। তবে ৩৮ মণ ওজনের এই গরু কেনার মতো যুঁৎসই ক্রেতা মিলছে না ফরিদপুরে। এজন্য এবার তাকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি চলছে। মালিকের আশা, এবার হয়তো তিনি কাঙ্ক্ষিত ক্রেতা পেয়ে যাবেন। জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ফরিদপুরে ৫৩ হাজার ৮শ' পশু কোরবানির জন্য প্রস্তুত রয়েছে। এর মধ্যে শহরের ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর বিলমামুদপুরে অবস্থিত মাইশা ডেইরি ফার্মের ৩৮ মণ ওজনের ফ্রিজিয়ান জাতের এই 'সম্রাট'ই জেলার সবচেয়ে বৃহৎ ষাঁড়গরু। ফরিদপুরে কোরবানির পশুর চাহিদা ৪১ হাজারের কিছু বেশি। সেই হিসেবে প্রায় ১২ হাজারের বেশি গরু উদ্বৃত্ত রয়েছে যেগুলো জেলার বাইরে বিক্রি করা যাবে। জেলায় ৩৩টি পশুর হাট ছাড়াও অনলাইনে গরুর হাটেও এসব পশু বেচাকেনা হবে। মাইশা ফার্মের স্বত্বাধিকারী রফিকুল ইসলাম সবুজ জানান, নিজের ফার্মে ৪২ মাস আগে সম্রাটের জন্ম। সব মিলিয়ে এখন এর শরীরে গোশত রয়েছে ১২শ' কেজি। প্রাকৃতিক ঘাস আর বিশেষ যত্ন নিয়েই তাকে বড় করে তোলা হয়েছে। প্রতিদিনের খাবার হিসেবে তাজা ঘাস, খড়, গম, ভুসি ও খৈল এসবই খাওয়ানো হয়। সঙ্গে বিশেষ খাবার হিসেবে দেওয়া হয় আপেল, কমলা ও আঙুর। সবুজ বলেন, বড় গরু পালন করা খুবই কষ্টসাধ্য। কারণ এখানে কাঙ্ক্ষিত ক্রেতা মেলে না। তবে পদ্মা সেতু উদ্বোধন হওয়ায় আমাদের জন্য একটি বড় সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এবার আমরা সম্রাটকে পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকায় কোরবানির পশুর হাটে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি। অনলাইনেও বিক্রির জন্য তথ্য দেওয়া রয়েছে। ফরিদপুরের মাইশা ডেইরি ফার্মে ১১৮টি গরু রয়েছে। এই খামারের শ্রমিকরা জানান, বড় গরু পালন অনেক কষ্টের কাজ। ভোর চারটা থেকে উঠে আমরা গরুর খামারের কাজ শুরু করি। প্রতি মুহূর্তেই এদের জন্য খাবার তৈরি করা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখাসহ নানা কাজে ব্যস্ত থাকতে হয়। রোগাক্রান্ত হলে সেই গরুকে আলাদা সরিয়ে ফেলতে হয়। বড় ষাঁড় থেকে গাভী ও বাছুর সবই রয়েছে এই ফার্মে। প্রতিদিন প্রায় পাঁচশ' লিটার দুধ সংগ্রহ করা হয়। একেকটি গাভী সকাল ও বিকাল দুই বেলা মিলিয়ে ২০ থেকে ২৫ লিটার পর্যন্ত দুধও দিচ্ছে। ফরিদপুর জেলা প্রাণিসম্পদ অধিপ্তরের কর্মকর্তা নুরুল আহসান বলেন, এ বছর মাঝখানে গবাদি পশুর খাদ্যের মূল্য একটু বেশি ছিল তবে এখন আবার সেটি সহনীয় পর্যায়ে এসেছে। আমরা আশা করছি খামারিরা ভালো দাম পাবে। আমাদের দেশীয় তথা ফরিদপুরের গরু দিয়েই আমাদের চাহিদা পূরণ করে বাইরে পাঠাতে পারব। জেলার কোরবানির পশুর হাটে ৯টি ভেটেরিনারি মেডিকেল টিম কাজ করবে। মাইশা ডেইরির মালিক রফিকুল ইসলাম সবুজের মতো তিনিও একইভাবে ফরিদপুরে বড় গরুর ক্রেতা নেই জানিয়ে বলেন, পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় এসব বড় গরু বিক্রির পথ সুগম হয়েছে।