আজকের যায়যায়দিন

মাহমুদা আক্তার মিতু ও বাবুল আক্তারের ছেলে ও মেয়েকে মাগুরায় গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পিবিআই। শিশু দুটির মা মিতু সাত বছর আগে চট্টগ্রামে হত্যাকান্ডের শিকার হন। তাদের বাবা সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল সেই খুনের আসামি হয়ে এখন কারাগারে।

এই হত্যাকান্ডের তদন্তকারী কর্তৃপক্ষ পিবিআই বেশ কিছু দিন ধরে শিশু দুটিকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চাইছিল। কিন্তু বাবুলের পরিবারের কাছে থাকা শিশু দুটিকে পাচ্ছিল না।

বিভিন্ন ঘটনার পর রোববার মাগুরায় গিয়ে জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ে ডেকে এনে শিশু দুটিকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্ত কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম পিবিআইর পরিদর্শক আবু জাফর মো. ওমর ফারুক।

বর্তমানে ১২ ও ৭ বছর বয়সি শিশু দুটিকে সেখানে নিয়ে যান বাবুলের বাবা সাবেক পুলিশ পরিদর্শক আব্দুল ওয়াদুদ। তাদের সঙ্গে পরিবারের আরও কয়েকজন নারী সদস্যও ছিলেন।

নৌ ও রেলপথে চাপ বাড়লেও সড়কে নেই যানজট / নির্বিঘ্নে ফিরছেন কর্মজীবী মানুষ

টানা তিন ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ শেষে পিবিআই পরিদর্শক আবু জাফর সাংবাদিকদের বলেন, 'মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশে জেলা সমাজসেবা অফিসারের কক্ষে শিশু দুটির দাদা আব্দুল ওয়াদুদ মিয়ার উপস্থিতিতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। জেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা, প্রবেশন অফিসারসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। 'হাইকোর্টের আদেশ অনুযায়ী, সংশ্লিষ্ট সবার উপস্থিতিতে সুন্দর পরিবেশে জিজ্ঞাসাবাদ সম্পন্ন হয়েছে।'

মায়ের হত্যাকান্ডের বিষয়ে ছেলেমেয়েদের কাছে কোনো তথ্য মিলেছে কিনা- জানতে চাইলে তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, 'জিজ্ঞাসাবাদের সময় ছেলেটি 'টেকনিক্যাল' উত্তর দিয়েছে। বাবুল আক্তারের বিপক্ষে যায়- এমন কিছু জিজ্ঞাসা করলেই সে 'স্মরণ নেই', 'জানি না' এ ধরনের কথা বলে এড়িয়ে গেছে। ছেলেটি দীর্ঘদিন ধরে দাদার বাড়িতে অবস্থান করছে। যার কারণে তাকে অনেক কিছুই শিখিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে মনে হচ্ছে।' মেয়েটিকে 'তেমন কিছু' জিজ্ঞাসা করা হয়নি বলে জানান পিবিআই কর্মকর্তা আবু জাফর।

এদিকে, বাবুল আক্তারের ভাই আইনজীবী হাবিবুর রহমান লাবু অভিযোগ করেছেন, তদন্ত কর্মকর্তা হাইকোর্টের আদেশ ভঙ্গ করে সাক্ষ্যগ্রহণ চলাকালে বাইরে গিয়ে ফোনে কথা বলেছেন। এ ছাড়া তিনি অতিরিক্ত লোক প্রবেশ করিয়েছেন। তবে তদন্ত কর্মকর্তা আবু জাফর এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন।

জেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আরশাদুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, তিনি হাইকোর্টের নিদের্শনা মেনেই জিজ্ঞাসাবাদে সহায়তা করেছেন।

এদিকে জিজ্ঞাসাবাদের সময় নিয়ে অসন্তোষ জানিয়েছেন শিশু দুটির দাদা ওয়াদুদ। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, 'ছোট বাচ্চাদের টানা তিন ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা অমানবিক।'

ছেলে বাবুল আক্তারের পক্ষ নিয়ে সাবেক এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, 'আমার ছেলে একজন সৎ, বলিষ্ঠ ও ন্যায়নিষ্ঠ পুলিশ অফিসার ছিল। পাঁচবার পিপিএম পদক পেয়েছে। তাকে ষড়যন্ত্র করে এই মামলায় ফাঁসানো হয়েছে।'

তিনি মামলার ন্যায়বিচারের স্বার্থে আসামি মুসাকে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়ে বলেন, 'সে গ্রেপ্তার হলেই মামলার মূল রহস্য উদঘাটন হবে।'