কোরবানির পশুর হাট

দর যাচাইয়ে ব্যস্ত ক্রেতারা

প্রকাশ | ০৭ জুলাই ২০২২, ০০:০০ | আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২২, ০৯:২৩

ম যাযাদি রিপোর্ট

আর মাত্র দু'দিন পর বাংলাদেশে পালন হবে ঈদুল আজহা। সে তুলনায় এখনো রাজধানীর পশুর হাট জমে ওঠেনি। হাটগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় থাকলেও কিনছেন না কোরবানির পশু। অতিরিক্ত দামের কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছন ক্রেতারা। এদিকে ব্যবসায়ীরা বলছেন, হাটে ক্রেতাদের ভিড় বাড়লেও বাড়েনি পশু বিক্রি। দাম শুনে ক্রেতারা চলে যাচ্ছেন। এমন হলে বিশাল ক্ষতির মুখে পড়তে হবে গরু বেপারীদের। বুধবার দুপুর থেকে বিকাল পর্যন্ত রাজধানীর তেজগাঁও, আফতাবনগর ও গাবতলীসহ বেশ কয়েকটি পশুরহাট ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। তেজগাঁও পলিটেকনিক মাঠের গরুর হাটে মানুষের আনাগোনা দেখা গেলেও ক্রেতা দেখা যায়নি খুব একটা। বিক্রি শুরু হওয়ার কথা থাকলেও তা ধারণা অনুযায়ী হয়নি। হাটে ক্রেতা এসে পশুর দরদাম নিয়ে সময় কাটালেও কিনছেন না সেভাবে। জাকির হোসেন নাখালপাড়ার বাসিন্দা। তিনি বলেন, 'আমি গরু কিনব শুক্রবার। এসেছি গরু দেখতে। যে পরিমাণ দাম এখন চাওয়া হচ্ছে তা অবাস্তব। এত দাম দিয়ে গরু কেনা খুবই কষ্টকর হয়ে যাবে। এটা এলাকাভিত্তিক হাট তাই হয়তো দাম একটু বেশি। আর একদিন গেলেই বোঝা যাবে গরুর দাম কেমন হবে।' হাট সংশ্লিষ্ট মুমিন আলম বলেন, 'গত দুই বছর হাট হয়নি। তার আগের বছর প্রচুর গরু এসেছিল। সেই তুলনায় একটু কম এসেছে। তবে আজকে রাতে আরও গরু আসলে বাজারের অবস্থা বোঝা যাবে। মূলত বিক্রি শুরু হবে বৃহস্পতিবার রাত থেকে। সবার অফিস ছুটি হবে সেদিন। বৃহস্পতিবার রাত শেষ হলেই বোঝা যাবে কি হয়।' তবে বেপারীরা বলছেন ভিন্ন কথা। বর্তমানে গরুর খাবারের যে দাম সে অনুযায়ী গরুর দাম হাঁকানো হচ্ছে। তার সঙ্গে রয়েছে আসা-যাওয়া ও হাটে থাকা-খাওয়ার খরচ। এগুলো নিয়ে তাদের লাভের আশাও আছে। তাই লস দিয়ে পশু বিক্রি করতে নারাজ তারা। তারপরও বৃহস্পতিবার ও শুক্রবারের দিকেই প্রধান লক্ষ্য বিক্রেতাদের। গাবতলী হাটের গেট দিয়ে ঢুকলেই চোখে পড়বে এবারের সব বড় ও হরেক নামের ষাঁড় গরুর। হাটের ডানদিকে বিক্রি হচ্ছে ছাগল, খাসি ও ভেড়া। হাটের মাঝে দেখা মিলবে মাঝারি আকারের গরু। আর হাটের শেষ মাথায় রাখা হয়েছে ছোট আকারের গরু। মিরপুর থেকে গাবতলীতে গরু কিনতে এসে মো. আবির বলেন, 'বড় গরুর দাম কম আছে। আমি একটি গরু কিনেছি ২ লাখ ২০ হাজার টাকা দিয়ে। কিন্তু ছোট ও মাঝারি গরুর দাম বেশি।' কুষ্টিয়ার মেহেরপুর থেকে ১২টি গরু নিয়ে আসা সোহান হোসেন বলেন, 'মাঝারি ও ছোট গরু নিয়ে হাটে এসেছি। মাঝারি ও ছোট গরুর দাম বেশি যাবে। আমি আজকে তিনটি ছোট গরু বিক্রি করেছি।' তিনি আরও বলেন, 'হাটে ক্রেতারা খুব কম আসছেন। এখন ক্রেতারা তেমন দাম বলছে না। আশা করি শুক্রবার ক্রেতাদের ভিড় হবে।' টাঙ্গাইলের সফিপুর থেকে ২৫টি গরু গাবতলী নিয়ে আসা মো. বেলাল বলেন, 'হাটে এখন পর্যন্ত ক্রেতা অনেক কম। গত দুই দিনে গরু বিক্রি করেছি মাত্র তিনটি। গরুগুলো বড় বড়। আজকে ক্রেতা এলেও এখনো বিক্রি বাড়েনি আমাদের।' আফতাব নগর হাটের হাসিল ঘরের দায়িত্বে থাকা শরিফ আহমেদ বলেন, 'এখন পর্যন্ত আমাদের প্রস্তুতি নেওয়া হয়নি। কয়েকটি হাসিলঘরে আমাদের লোকজন বসেছে। এখনো তেমন বিক্রি শুরু হয়নি। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে হাসিল ঘরগুলো সব একসঙ্গে কার্যক্রম শুরু করবে। যেহেতু গরু আছে, তাই আশা করছি সবাই কিনতে পারবেন। কিছুটা দাম বেশি আমরাও শুনছি। তবে বিক্রি কার্যক্রম পুরোদমে শুরু হলে বোঝা যাবে বাজারের অবস্থা।' এদিকে, সিটি করপোরেশনের নির্দেশনা অনুযায়ী সকাল থেকে কোরবানির পশুরহাটে বিক্রি কার্যক্রম শুরু হয়। রাজধানীর প্রতিটি হাটে কিছু পশু বিক্রিও হয়েছে। তবে বৃষ্টি এই কার্যক্রমে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। সারাদিন থেমে থেমে বৃষ্টিতে কিছুটা সমস্যায় পড়েছেন হাটে আসা গরু বেপারীরা।