ঢাকা-৫

কমীর্ হত্যার অভিযোগ নবীর প্রচারে ব্যস্ত হাবিবুর

প্রকাশ | ১৭ ডিসেম্বর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি রিপোটর্
হাবিবুর রহমান মোল্লা
ঢাকা-৫ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রাথীর্ নবীউল্লাহ নবী পুলিশের বিরুদ্ধে ঠাÐা মাথায় কমীর্ হত্যার অভিযোগ করেছেন। একই সঙ্গে তিনি পুলিশের বিরুদ্ধে আইন ভঙ্গ করে তাদের প্রচারণায় বাধা এবং কমীের্দর তুলে নিয়ে নিযার্তন করার অভিযোগ করেছেন। তবে এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রাথীর্ হাবিবুর রহমান মোল্লা টানা প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। শনিবার রাত ১০টায় বিএনপি প্রাথীর্র একজন প্রচারকমীর্ এবং স্থানীয় যুবদলের নেতা মো. রিপনকে (৫০) আটক করে পুলিশ। এর মাত্র চার ঘণ্টা পরে রাত এক টায় থানা হেফাজতে তার মৃত্যু হয়। পুলিশ একে হৃদক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যু দাবি করলেও বিএনপি প্রাথীর্ ও পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে সম্পূণর্ সুস্থ অবস্থায় তাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। এর মাত্র চার ঘণ্টা পরে মৃত্যুকে তাই তারা স্বাভাবিক মৃত্যু মানতে নারাজ। দুই ছেলে ও এক মেয়ের পিতা মো. রিপন ডেমরা থানার বড় মসজিদ এলাকার বাসিন্দা। রোববার আসরের নামাজের পর বড় মসজিদে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় বিএনপি প্রাথীর্ নবী ও দলটির ব্যাপক সংখ্যক নেতাকমীর্ উপস্থিতির পাশাপাশি একই আসনের আওয়ামী লীগ প্রাথীর্ হাবিবুর রহমান মোল্লার ছেলের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের নেতারাও অংশ নেন। তারাও পুলিশের ভ‚মিকার নিন্দা জানিয়েছেন। গতকাল সকাল ১০টা থেকে বিএনপি প্রাথীর্ নবীউল্লাহ নবী যাত্রবাড়ী এবং ডেমরা এলাকায় প্রচারণা চালান। দুপুর ১২টার দিকে ডেমরা বাজার এলাকায় গেলে ডেমরা থানার ওসি (তদন্ত) তাকে মাঠ থেকে সরে যেতে বলেন। নবীউল্লাহ নবী যায়যায়দিনকে বলেন, ‘তিনি পুলিশ কমর্কতাের্ক জানান এটা তার আইনগত অধিকার। তিনি কেন আইন ভঙ্গ করে প্রচারণায় বাধা দিচ্ছেন। এর উত্তরে ওই পুলিশ কমর্কতার্ জানান, তিনি যদি এখনি এখান থেকে সরে না যান তবে তার সব কমীের্ক আটক করে হাজতে ঠুকিয়ে দেবেন। তাদের দল থেকে কড়াভাবে নিদের্শ দিয়েছে সংঘষর্ এড়িয়ে চলতে। তাই তারা প্রচারণা বন্ধ করে ফিরে এসেছেন। তারা পুলিশের এ ধরনের আচরণের তীব্র নিন্দা জানান।’ থানায় আটক থাকার সময় বিএনপির কমীর্ নিহত এবং প্রচারণায় বাধা দেয়ার যে অভিযোগ বিএনপি প্রাথীর্ করেছেন সে বিষয়ে জানতে যায়যায়দিনের পক্ষ থেকে ডেমরা থানার অফিসার ইনচাজের্র সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে পুলিশ কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। বিকালে নিহত কমীর্ মো. রিপনের জানাজার পূবের্ নবীউল্লাহ পুলিশকে আইন মেনে চলতে অনুরোধ করার পাশাপাশি কমীের্দর ধযর্ ধরার আহŸান জানান। জানাজা শেষে নিহতের পরিবারের সদস্যদের সান্ত¡না দেন তিনি। উল্লেখ্য, ঢাকা ৫ আসনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির তুলনামূলক সহ-অবস্থান রয়েছে। এখনো পযর্ন্ত এখানে বড় ধরনের সহিংসতার ঘটনা ঘটেনি। এমনকি বিএনপির কমীর্র জানাজায় আওয়ামী লীগের নেতাদের অংশ নেয়ায় তাদের সম্প্রীতির দৃষ্টান্ত হিসেবে তুলে ধরেছেন দুই দলের নেতারাই। পাশাপাশি উভয় দলই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের নিরপেক্ষ আচরণ করারও দাবি করেছেন। এদিকে, রোববার সারাদিন নিজ নিবার্চনী এলকায় বিজয় দিবসের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ও গণসংযোগে ব্যস্ত সময় পার করেছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রাথীর্ ও বতর্মান সাংসদ হবিবুর রহমান মোল্লা। সকাল ৯টায় রাজধানীর মাতুয়াইলে শহীদ হাফিজুর রহমান অলি ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আয়োজিত বিজয় উৎসবে অংশগ্রহণ করেন। বণার্ঢ্য বিজয় র‌্যালির পর অনুষ্ঠিত হয় বিজয় দিবসের আলোচনা সভা। সেখানে বক্তব্য দেন মহাজোট মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রাথীর্ হবিবুর রহমান মোল্লা। এ সময় তিনি বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নে আবারও নৌকাকে বিজয়ী করতে হবে। স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি ক্ষমতায় এলে দেশের সাবির্ক উন্নয়ন থেমে যাবে। এলাকার সাবির্ক উন্নয়নের লক্ষ্যে ৩০ ডিসেম্বর নৌকা মাকার্য় ভোট দেয়ার আহŸান জানিয়ে তিনি আরও বলেন, এই এলাকায় দীঘির্দন ধরে মানুষের সেবা করে যাচ্ছেন। রাস্তাঘাট, অবকাঠামো, শিক্ষা ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে সরকার গৃহীত নানা পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করেন। এরপর দুপুর ১টায় বিজয় দিবসের আলোচনা সভা ও র‌্যালিতে অংশগ্রহণ করেন তিনি। বিকাল ৪টায় মাতুয়াইলে ঢাকা ৫ এর অন্তগর্ত ১৬৫টি কেন্দ্র পরিচালনা কমিটির সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সন্ধ্যা ৭টায় ডেমরার ফুল তলিয়ায় গণসংযোগ করেন তিনি। এ সময় তার সঙ্গে ডেমরা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান মোল্লা সজলসহ স্থানীয় নেতাকমীর্রা অংশ নেন। প্রসঙ্গত, ঢাকা দক্ষিণ সিটির ৫ নম্বর আসনটিতে মোট ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৫০ হাজার ৭২৫ জন। এরমধ্যে ২ লাখ ৩১ হাজার ৫৯২ জন পুরুষ ও ২ লাখ ১৯ হাজার ১৩৩ জন নারী ভোটার রয়েছে।