ফেনীর ভোটের মাঠে সরব নিজাম, নীরব জয়নাল

প্রকাশ | ১৭ ডিসেম্বর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
নিজাম উদ্দিন হাজারী
আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নিবার্চনী প্রচারণার শুরুর দিন থেকেই মাঠে সরব রয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রাথীর্ বতর্মান সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী। শহরের রাস্তা-ঘাট থেকে শুরু করে গ্রামের মেঠো পথও ছেয়ে গেছে নৌকার ব্যানার-পোস্টারে। চারদিকে মাইকে চলছে নিজাম হাজারীর প্রচারণা। অপরদিকে, নিবার্চনী মাঠে তুলনামূলক নীরব রয়েছেন বিএনপি মনোনীত প্রাথীর্ দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা অধ্যাপক জয়নাল আবেদীন ভিপি। প্রচারণা শুরুর পরের দিন শহরের পাগলা মিয়ার মাজার জিয়ারত করে তিনি প্রচারণা শুরু করলেও তা এখনো সীমাবদ্ধ রয়েছে বিএনপি অধ্যুষিত রামপুরেই। কোথাও দেখা মেলেনি ধানের শীষের ব্যানার-পোস্টার। শোনা যায়নি মাইকিংও। তবে বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, বিএনপিসহ জোট নেতাকমীর্রা গ্রেপ্তার আতঙ্কে রয়েছেন। প্রতিদিনই কোনো না কোনো নেতাকমীর্র বাড়িতে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। ইতোমধ্যেই কয়েক শতাধিক নেতাকমীের্ক ধরাও হয়েছে। সরকার দলীয়দের হামলা এবং পুলিশের গ্রেপ্তার ও মামলার ভয়ে নেতাকমীর্রা বাড়িতেই থাকতে পারছেন না, প্রচারণা করাতো দূরের কথা। ফেনী সদর উপজেলার ১২ ইউনিয়ন ও পৌরসভা নিয়ে গঠিত এ আসনে নৌকা প্রতীকের প্রাথীর্ জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন হাজারী জনসভা করে প্রচারণা চালাচ্ছেন। ইতোমধ্যেই বালিগঁাও, ফাজিলপুর, ফরহাদনগর, শশির্দ, ধমর্পুর, পঁাচগাছিয়া ও ছনুয়া ইউনিয়নে জনসভা করেছেন তিনি। তার মধ্যে বালিগঁাওয়ে নিজাম হাজারীর জনসভায় উপস্থিত হয়ে আগত জনগণের কাছে ভোট চান চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন ও ফেনী ইউনিভাসিির্টর ট্রাস্টি বোডের্র সভাপতি এবং কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতা আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম। প্রচারণায় নিজাম হাজারী স্ত্রী নূরজাহান বেগম নাসরিন ও মেয়ে নূর আহাদ জাহান স্নিগ্ধা হাজারীকেও সঙ্গে রেখেছেন। স্ত্রী-কন্যা তার জন্য ভোট চাইছেন। তিনি ফেনী পৌরসভার প্রত্যেকটি ওয়াডের্ করেছেন নিবার্চনী অফিস। এসব অফিসে সরাদিন চলছে নৌকার প্রচারণা। বলা হচ্ছে সরকারের উন্নয়নের কথা। অপরদিকে, ধানের শীষের প্রাথীর্ অধ্যাপক জয়নাল আবদীন ভিপি শহরের পাগলা মিয়ার মাজার জিয়ারতের মধ্য দিয়ে প্রচারণা শুরু করেছিলেন। পরে দলীয় নেতাকমীের্দর নিয়ে শহরের এসএসকে সড়কের সমবায় সুপার মাকেের্টর সামনে সংক্ষিপ্ত পথসভা করেছিলেন। এ সভা থেকে যাওয়ার সময় জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মোশের্দসহ তার কয়েক নেতাকে যুবলীগ নেতাকমীর্রা পিটিয়ে পুলিশে সোপদর্ করেন। এ নিয়ে বিএনপি নেতাদের দাবি যে প্রচারণায় নামছে, তাকে হামলা ও মামলার ভয় দেখানো হচ্ছে। আর সে কারণেই জমানো যাচ্ছে না প্রচার কাযর্ক্রম। এদিকে, বিএনপির তৃণমূলের কয়েকজন নেতাকমীর্ জানিয়েছে, ত্যাগী নেতাকে মনোনয়ন না দেওয়ায় নিবার্চনী প্রচারণা জমে উঠছে না। তারা বলছেন- ভিপি জয়নাল বারবার এ আসন থেকে এমপি নিবাির্চত হয়েছেন। নিবার্চন আসলেই তিনি এলাকায় আসেন, বাকি সময় তাকে দেখা যায় না। দলের নেতাকমীর্রা জেল-জুলুমের শিকার হলেও তিনি তাদের খবর রাখেননি। সে কারণে নেতাকমীর্রা স্বতস্ফূতর্ভাবে নিবার্চনী প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন না। এ ব্যাপারে অধ্যাপক জয়নাল আবদীন জানিয়েছেন, প্রথমদিন প্রচারণায় নেমেই তিনি ব্যাপক সাড়া পেয়েছেন। নেতাকমীের্দর এমন উপস্থিতি দেখে পুলিশের ধরপাকড় অভিযান বেড়ে যায়। রাতে জেলা বিএনপির ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন পাটোয়ারি, যুবদল সাংগঠনিক সম্পাদক নঈম উল্লাহ চৌধুরী বরাত, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক এসএম কায়সার এলিনসহ বেশ কয়েকজন নেতাকমীর্র বাসা-বাড়িতে হানা দেয় তারা। পুলিশের সঙ্গে সরকারি দলের নেতাকমীর্রাও অভিযানে অংশ নিচ্ছে বলে তার অভিযোগ। তার মতে, সারাদেশের মতো ফেনীতেও নিবার্চনের কোনো পরিবেশ নেই। তবে নিজাম উদ্দিন হাজারী জয়নাল আবেদীননের এসব অভিযোগ ভুয়া-বানোয়াট উল্লেখ করে বাংলানিউজকে বলেন, ফেনীতে নিবার্চনী প্রচার-প্রচারণার পূণর্ পরিবেশ বিরাজ করছে। সরকারি দলের পক্ষ থেকে কোথাও কাউকে বাধা দেওয়া হচ্ছে না। বিগত ১০ বছর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থেকে শত শত কোটি টাকার উন্নয়ন করায় নৌকার প্রচারণায় সাধারণ মানুষ স্বতস্ফূতর্ভাবে অংশ নিচ্ছে। ভিপি জয়নাল এবং বিএনপি সরকার ফেনীর উন্নয়নে কোনো ধরনের ভূমিকা রাখেননি। সে কারণেই এ জনপদের মানুষ আর তাদের চায় না। তাছাড়া বিএনপি নিজেদের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণেই নিবার্চনী মাঠে দঁাড়াতে পারছে না। এছাড়া ফেনী-২ আসনে ইসলামী আন্দোলনের নুরুল করিম বেলালী (হাতপাখা) বিপ্লবী ওয়াকার্সর্ পাটির্র প্রাথীর্ জসিম উদ্দিন (কোদাল) ও জাকের পাটির্র নজরুল ইসলাম (গোলাপ ফুল) প্রতীক নিয়ে নিবার্চনী মাঠে রয়েছেন। এ আসনে ভোটকেন্দ্র রয়েছে ১২৬টি। এর মধ্যে নারী ভোটার ১ লাখ ৬৮ হাজার ১৬৯। আর পুরুষ ১ লাখ ৭৯ হাজার ৯৯৩। মোট ভোটার তিন লাখ ৪৮ হাজার ১৬২ জন।