নওগঁা-৪

ভোটের মাঠে অবশেষে শিক্ষক-ছাত্রের লড়াই

প্রকাশ | ১৭ ডিসেম্বর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
ইমাজ উদ্দিন প্রামাণিক সামসুল আলম প্রামাণিক
একাদশ জাতীয় সংসদ নিবার্চনে নওগঁা-৪ (মান্দা) আসনে আওয়ামী লীগের প্রাথীর্ বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী মুহাম্মদ ইমাজ উদ্দিন প্রামাণিকের সঙ্গে লড়াই হবে বিএনপি মনোনীত প্রাথীর্ সাবেক এমপি সামসুল আলম প্রামাণিকের। ইমাজ উদ্দিন প্রামাণিকের ছাত্র ছিলেন সামসুল আলম প্রামাণিক। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মান্দা উপজেলার কালীকগ্রাম দোডাঙ্গী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন মুহাম্মদ ইমাজ উদ্দিন প্রামাণিক। ১৯৬৮ সালে ওই বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র ছিলেন সামসুল আলম প্রামাণিক। ছাত্রজীবনে তিনি প্রায় আড়াই বছর মুহাম্মদ ইমাজ উদ্দিন প্রামাণিককে শিক্ষক হিসেবে পেয়েছিলেন। একাদশ জাতীয় সংসদ নিবার্চনকে ঘিরে সারাদেশে উৎসবমুখর পরিবেশে চলছে প্রচার-প্রচারণা। প্রতীক বরাদ্দের পর নওগঁা-৪ আসনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপিসহ বিভিন্ন দল ও জোটের প্রাথীর্রা নেতাকমীের্দর সঙ্গে নিয়ে বিভিন্ন এলাকায় নিবার্চনী গণসংযোগ করে ব্যস্ত সময় পার করছেন। প্রাথীর্রা উন্নয়নের নানা প্রতিশ্রæতি নিয়ে প্রচারণার মাঠে নেমেছেন। চলছে লিফলেট বিতরণ আর ভোটারদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়। নিজ নিজ দলের প্রাথীর্র পক্ষে ¯েøাগান দিচ্ছেন কমীর্-সমথর্করা। সাদা-কালো পোস্টার ও ব্যানারে ছেয়ে গেছে রাস্তাঘাট ও হাট-বাজার। এবার আসন থেকে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি ছাড়াও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, জাতীয় পাটির্, জাতীয় পাটির্-জেপি ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পাটির্র প্রাথীর্ নিবার্চন করছেন। তবে লড়াই হবে মূলত আওয়ামী লীগ ও বিএনপি প্রাথীর্র মধ্যে। জেলা সাভার্র স্টেশন সূত্রে জানা যায়, এ উপজেলায় ১৪টি ইউনিয়ন। সেখানে মোট ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৮৯ হাজার ২৬৮ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৪২ হাজার ৪১০ ও মহিলা ভোটার ১ লাখ ৪৬ হাজার ৮১৬ জন। এ আসনে ১৯৯১ সালে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী মুহাম্মদ ইমাজ উদ্দিন প্রামাণিক জামায়াত মনোনীত প্রাথীর্ মাওলানা নাসির উদ্দিন জিহাদীর কাছে পরাজিত হন। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ পযর্ন্ত পরপর তিনবার নিবাচির্ত হন বিএনপির সামসুল আলম প্রামাণিক। ২০০৮ সালের আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পান উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আব্দুল লতিফ শেখ। স্বতন্ত্র থেকে নিবার্চন করেন মুহাম্মদ ইমাজ উদ্দিন প্রামাণিক। সেসময় স্বতন্ত্র প্রাথীর্ হিসেবে প্রায় ২০ হাজার ভোটের ব্যবধানে ২০ দলীয় জোটের প্রাথীর্ বিএনপি মনোনীত সামসুল আলম ও আওয়ামী লীগ মনোনীত আব্দুল লতিফ শেখকে পরাজিত করে বিজয়ী হন মুহাম্মদ ইমাজ উদ্দিন প্রামাণিক। এরপর ২০১৪ সালের নিবার্চনে আওয়ামী লীগের প্রাথীর্ হিসেবে আবার মুহাম্মদ ইমাজ উদ্দিন প্রামাণিক নিবাির্চত হন। এরপর তিনি বস্ত্র ও পাটমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। এদিকে মুহাম্মদ ইমাজ উদ্দিন প্রামাণিক মন্ত্রী হয়েও গত ১০ বছরে এলাকার কাক্সিক্ষত তেমন উন্নয়ন করতে পারেননি। জেলার অন্যান্য উপজেলা থেকে উন্নয়নের দিকে এ উপজেলাটি অনেক পিছিয়ে রয়েছে। এ নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তাই এলাকাবাসী এবার দেখেশুনে ও বুঝে ভোট দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। উপজেলার পার-নুরুল্যাবাদ গ্রামের বয়োজ্যেষ্ঠ লিয়াকত আলী মÐল বলেন, অন্য উপজেলাগুলোর তুলনায় আমাদের মান্দা উপজেলাটি অবহেলিত। রাস্তাঘাটের বেহাল অবস্থা। গত ১০ বছরেও তেমন উন্নয়ন হয়নি। যাকে ভোট দিলে এলাকার উন্নয়ন হবে তাকেই আমরা চাই। আওয়ামী লীগের প্রাথীর্ বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী মুহাম্মদ ইমাজ উদ্দিন প্রামাণিক বলেন, যেখানে যাচ্ছি জনগণের দোয়া ও ভালোবাসা পাচ্ছি। আমি সারা জীবন মান্দাবাসীর জন্য করে যাচ্ছি। আবারও বিজীয় হতে পারলে এলাকার উন্নয়নসহ শিক্ষিত বেকার যুবক-যুবতীদের কমর্সংস্থানের সৃষ্টি করব। উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আবারও নৌকাকে জয়ী করার আহŸান জানান তিনি। বিএনপির প্রাথীর্ সাবেক সংসদ সদস্য সামসুল আলম প্রামাণিক বলেন, আমি বিশ্বাস করি মান্দার জনগণ ধানের শীষে ভোট দিয়ে আমাকে বিপুল ভোটে বিজয়ী করবেন। আমি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও তিনবার এমপি থাকতে এলাকার ব্যাপক উন্নয়ন করেছি। অতীতে কোনো এমপি, এমনকি বতর্মান মন্ত্রীও সে কাজ করতে পারেননি। জনগণ এলাকার উন্নয়ন দেখতে প্রাথীর্র পরিবতর্ন চাইছে।