খুলনা-৬

বাবুর জৌলুসপূণর্ প্রচারণা কারারুদ্ধ আবুল কালাম

প্রকাশ | ১৯ ডিসেম্বর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
আখতারুজ্জামান বাবু আবুল কালাম আজাদ
খুলনা-৬ আসনে চলছে আওয়ামী লীগের প্রাথীর্ আখতারুজ্জামান বাবুর (নৌকা) জৌলুসপূণর্ নিবার্চনী প্রচার-প্রচারণা। তফসিল ঘোষণার পর তরুণ এ প্রাথীর্ প্রতিদিন সকাল থেকে মধ্যরাত পযর্ন্ত চালাচ্ছেন গণসংযোগ। তার গণসংযোগ, মিছিলে হাজারো মানুষ। নারী, পুরুষ, তরুণ, যুবা ও বয়োবৃদ্ধ। উচ্ছ¡াসে ভরা ¯েøাগান, ‘জয় বাংলা’, ‘জিতবে এবার নৌকা’, শেখ হাসিনার সরকার, বারবার দরকার’, ‘বাবু ভাইয়ের সালাম নিন, ‘নৌকা মাকার্য় ভোট দিন’। অপরদিকে, জামায়াতের ঘঁাটি হিসেবে পরিচিত কয়রা-পাইকগাছা উপজেলা নিয়ে গঠিত এ আসনের ২০ দলীয় জোটের প্রাথীর্ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কমর্পরিষদ সদস্য ও খুলনা মহানগর আমীর মাওলানা আবুল কালাম আজাদ (ধানের শীষ) কারাবন্দি রয়েছেন। তার অনুপস্থিতিতে দলের নেতাকমীর্রা নীরবে চালাচ্ছেন প্রচারণা। ধানের শীষ প্রতীকে মনোনয়ন পাওয়া জামায়াত প্রাথীর্র সমথর্কদের মাঠে নামতে দেয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। এ আসনে বাবু ও কালাম দুজনই নতুন প্রাথীর্। খেঁাজ নিয়ে জানা গেছে, খুলনা-৬ আসনে প্রচার-প্রচারণায় এগিয়ে রয়েছেন ক্ষমতাসীন দল নৌকা প্রতীক পাওয়া প্রাথীর্ জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আখতারুজ্জামান বাবু। হাজার হাজার নেতাকমীর্ তার প্রচার কাজে নিয়োজিত রয়েছেন। এছাড়া বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে তার নিবার্চনী প্রচারণায় নিযুক্ত করা হয়েছে। প্রতিটি পাড়া-মহল্লা, রাস্তা-ঘাট, অলি-গলিতে নৌকা প্রতীকের প্রাথীর্র পোস্টারে সয়লাব হয়ে গেছে। অপরদিকে, ধানের শীষের প্রাথীর্র কোনো পোস্টার, লিফলেট কিংবা প্রচারণা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। ৯০ দশকের সাবেক ছাত্র নেতারা ও বতর্মান ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতারা বাবুর পক্ষে ভোট চাইছেন। এ আসনটিতে মহাজোটের অংশ জাতীয় পাটির্র (জাপা) প্রাথীর্ রয়েছেন। খুলনা জেলা জাতীয় পাটির্র সভাপতি শফিকুল ইসলাম মধু নিবার্চনে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করছেন। যা বাবুর গলার কাটা হয়ে দঁাড়িয়েছে। এদিকে, নিবন্ধন বাতিল হওয়া জামায়াতে ইসলামীর প্রাথীর্ ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নিবার্চন করলেও বিএনপির অনেক সিনিয়র নেতা মাঠে নেই জামায়াত নেতার পক্ষে। খুলনা-৬ আসনে আওয়ামী লীগের আখতারুজ্জামান বাবু (নৌকা), জামায়াতের মাওলানা আবুল কালাম আজাদ (ধানের শীষ), জাতীয় পাটির্র শফিকুল ইসলাম মধু (লাঙ্গল), ইসলামী আন্দোলনের গাজী নূর আহমেদ (হাতপাখা), জাকের পাটির্র শেখ মতুর্জা আল মামুন (গোলাপ ফুল), কমিউনিস্ট পাটির্র সুবাস চন্দ্র সাহা (কাস্তে) ও বাংলাদেশ ন্যাশনাল পাটির্র মিজার্ গোলাম আজম (টেলিভিশন) নিবার্চনে অংশগ্রহণ করছেন। এ আসনে ৭ জন প্রাথীর্ হলেও আওয়ামী লীগ ও জামায়াতের মধ্যে তুমুল লড়াই হবে। যদিও জামায়াতের প্রাথীর্ আবুল কালাম আজাদ কারাবন্দি অবস্থায় রয়েছেন। খুলনা জেলা নিবার্চন অফিসের তথ্যানুযায়ী, খুলনা-৬ আসনের পাইকগাছা উপজেলায় মোট ভোটার দুই লাখ ১৮ হাজার ৫৬৬ জন আর কয়রা উপজেলায় মোট ভোটার এক লাখ ৫৬ হাজার ৯০৪ জন। জানা গেছে, স্বাধীনতা-পরবতীর্ প্রথম সংসদ নিবার্চনে ১৯৭৩ সালে খুলনা-৬ আসন থেকে সংসদ সদস্য নিবাির্চত হন তৎকালীন আওয়ামী লীগ নেতা স ম বাবর আলী। ১৯৭৯ সালে বিএনপি নেতা শেখ রাজ্জাক আলী এবং ৮৬’র নিবার্চনে জাতীয় পাটির্র মোমিন উদ্দিন সংসদ সদস্য নিবাির্চত হয়েছিলেন। ১৯৯১ সালের নিবার্চনে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কমর্পরিষদ সদস্য শাহ মুহাম্মদ রুহুল কুদ্দুস সংসদ সদস্য নিবাির্চত হন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের শেখ মো. নুরুল হক, ২০০১ সালের চারদলীয় জোটের প্রাথীর্ হিসেবে জামায়াতের শাহ মুহাম্মদ রুহুল কুদ্দুস নিবাির্চত হন। ২০০৮ সালের নিবার্চনে আওয়ামী লীগ নেতা সোহরাব আলী সানা এক লাখ ৩১ হাজার ২১ ভোট পেয়ে নিবাির্চত হন। বিএনপি জোটের প্রাথীর্ জামায়াতের শাহ মুহাম্মদ রুহুল কুদ্দুস পেয়েছিলেন এক লাখ ১৬ হাজার ১৬০ ভোট। ২০১৪ সালে এই আসন থেকে বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় সংসদ সদস্য হন শেখ মো. নূরুল হক। মঙ্গলবার (১৮ ডিসেম্বর) আবুল কালাম আজাদের প্রধান নিবার্চনী এজেন্ট অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ লিয়াকত আলী সরদার বলেন, ‘আমাদের পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হচ্ছে। মিথ্যা-গায়েবি মামলা নিয়ে গণগ্রেপ্তার করা হচ্ছে। সোমবারও (১৭ ডিসেম্বর) ৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ধানের শীষে প্রচার-প্রচারণায় নামলে আমাদের লোকজনদের ধাওয়া দেওয়া হচ্ছে। এসব কারণে আমরা সুষ্ঠুভাবে নিবার্চনী প্রচার-প্রচারণা করতে পারছি না। প্রতিকূলতার মধ্যেও প্রাথীর্ জেলে থাকায় তার সমথর্করা প্রচার কাযর্ক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।’ তিনি বলেন, আবুল কালাম আজাদ সব মামলায় জামিনে থাকার পরও গত ২৭ অক্টোবর ঢাকা যাওয়ার পথে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ওই সময় তাকে দুটি পেন্ডিং মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। আবার এই মুহূতের্ একটি পেন্ডিং মামলায় আসামি করা হয়েছে। খুলনা জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ও কয়রা উপজেলা ছাত্রলীগের নিবার্চনী কাযর্ক্রম মনিটরিং কমিটির সমন্বয়ক মো. আবু সাঈদ খান বলেন, জামায়াত হচ্ছে, নিবন্ধন বাতিল ও ফ্যাসিবাদী একটি সংগঠন। শেখ হাসিনার পুঁজি হচ্ছে উন্নয়ন। আর বিএনপি-জামায়াতের পুঁজি মিথ্যাচার। উন্নয়নের জোয়ারে বিএনপি-জামায়াতের মিথ্যার রাজনীতি দেশ থেকে চিরতরে বিলীন হয়ে যাবে। স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তির বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত মিথ্যাচার ও ষড়যন্ত্র করছে জামায়াত। মিথ্যাচার করে জাতিকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা করছে। চোখ-কান খোলা রেখে সব অপপ্রচারের দঁাতভাঙ্গা জবাব দিতে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগসহ সব সহযোগী সংগঠনের নেতাকমীর্রা সবর্দা সোচ্চার রয়েছেন। আগামী ৩০ ডিসেম্বরের নিবার্চনে জনগণ শেখ হাসিনার উন্নয়নের পক্ষে থাকবেন।