শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

আজ বিশ্ব হাতি দিবস

ম বিশেষ প্রতিনিধি
  ১২ আগস্ট ২০২২, ০০:০০

আজ বিশ্ব হাতি দিবস। ২০১২ সাল থেকে প্রতিবছর ১২ আগস্ট সারাবিশ্বে পালিত হয় হাতি দিবস। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয় এবং বিভিন্ন পরিবেশবাদী সংগঠন দিবটি উপলক্ষে আলোচনা সভার আয়োজন করেছে। বাঘ, সিংহের পর যে প্রাণীটির ছবি সবার চোখে ভেসে উঠে, তা হলো হাতি। বিশালাকার দেহ, বিশাল দুটি কান, বিশাল দুটি দাঁত

এবং বিশাল একটি শুঁড়। হাতির সবকিছু বিশালাকৃতির হলেও, এই হাতিই আজ বিলুপ্তির পথে। বিরল ও সবচেয়ে দীর্ঘকায় এই বন্যপ্রাণীটিকে রক্ষা করতে না পারলে প্রকৃতি বিপন্ন হয়ে উঠতে পারে।

বন্যহাতির মৃতু্যর খবরটা বাংলাদেশের মানুষের অনেকটা গা-সওয়া হয়ে গেছে। বন বিভাগের তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশে বছরে গড়ে ১৮টি হাতি মারা যায়। এর মধ্যে বেশি হাতি হত্যা করা হয় বান্দরবানের লামা, দক্ষিণ চট্টগ্রাম, শেরপুর, নেত্রকোনা এবং কক্সবাজার এলাকায়। হাতির আবাসস্থল, বনাঞ্চল দখল, চাষাবাদ আর হাতির দাঁত বিক্রির জন্য একটি সংঘবদ্ধ চক্র কখনো বিদু্যস্পৃষ্ট কখনো বা গুলি করে আবার কখনো কখনো ফাঁদ পেতে হত্যা করছে হাতি। শেরপুর, কক্সবাজার ও পার্বত্য চট্টগ্রামে হাতি হত্যার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করছে পরিবেশবাদীরা।

ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এশিয়ায় হাতির একের পর এক অস্বাভাবিক মৃতু্য চলতে থাকলে বাংলাদেশ থেকে হাতির বিলুপ্ত হতে বেশি সময় লাগবে না। এমন পরিস্থিতিতে পালিত হবে বিশ্ব হাতি দিবস। সচেতনতার অভাবে কমানো যাচ্ছে না হাতির মৃতু্য। একের পর এক বন্যহাতির মৃতু্যতে এশিয়ান হাতি বিলুপ্ত হওয়ার আশঙ্কা তীব্র হচ্ছে।

শিকারিদের টার্গেট থাকে হাতির দাঁতের দিকে। বিশ্বে হাতির দাঁতের দাম সোনার দামের চেয়ে বেশি। সবচেয়ে বেশি চাহিদা হলো চীনে। সারাদেশে এশিয়ান হাতি রয়েছে ২৬৮টি। এদের দুই-তৃতীয়াংশের বসবাস কক্সবাজার, শেরপুর ও পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে। হাতি চলাচলের জন্য রয়েছে ১২টি করিডর। বনাঞ্চল ধ্বংস, রোহিঙ্গা বসতি, পর্যাপ্ত খাদ্যাভাবসহ চলাচলের করিডর চরমভাবে বাধাগ্রস্ত হওয়ায় লোকালয়ে হানা দিচ্ছে হাতি। নষ্ট করছে ফসলের ক্ষেত, বাড়িঘর। লোকালয়ে হাতি আসা ঠেকাতে দুর্বৃত্তরা ফসলের ক্ষেতে বিদু্যতের তারের সংযোগ বসিয়ে, কখনো-বা গুলি করে হত্যা করছে হাতি। গত এক বছরে কক্সবাজার অঞ্চলে ১৬টি ও শেরপুরে ২টি, নেত্রকোনার দুর্গাপুরে ১টি হাতি হত্যা করা হয়। এভাবে ফাঁদ পেতে হাতি হত্যার প্রবণতা বাড়ছে। কক্সবাজারে হাতি নিরাপদে নেই, আমাদের জীববৈচিত্র্য ও হাতিগুলো রক্ষার জন্য পরিকল্পিতভাবে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

এ বিষয়ে বনবিভাগ জানায়, মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির পাশাপাশি বনাঞ্চলে হাতির করিডর ও আবাসস্থল বৃদ্ধিসহ নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এক শতাব্দী আগেও বিশ্বে ১২ মিলিয়নেরও বেশি হাতি ছিল। কিন্তু আজ এ সংখ্যাটি ৪ লাখেরও কম। বিশ্বে প্রতিবছর প্রায় ২০ হাজার হাতি শিকারিরা হত্যা করছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে