বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য করে আন্দোলন চায় গণতন্ত্র মঞ্চ

ম যাযাদি রিপোর্ট
  ১২ আগস্ট ২০২২, ০০:০০

সরকারবিরোধী সব রাজনৈতিক দলকে নিয়ে 'বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য' গঠন করে আন্দোলনে নামার ঘোষণা দিয়েছে গণতন্ত্র মঞ্চ। নতুন জোট হওয়ার পর প্রথম বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে এই ঘোষণা দিয়ে মঞ্চের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সাত দলীয় জোট এর মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না তারা। 'স্বৈরাচারের' বিরুদ্ধে আন্দোলনরত সব রাজনৈতিক দলকে নিয়ে বৃহত্তর ঐক্যের মাধ্যমে রাজপথে গণবিক্ষোভ, গণবিস্ফোরণ ঘটিয়ে 'এই স্বৈরাচারকে' হটানোর পথে অগ্রসর হবে তারা।

বৃহস্পতিবার সকালে বিক্ষোভ সমাবেশে গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম শরিক জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল- জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব এসব কথা বলেন। জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে গণতন্ত্র মঞ্চের এই বিক্ষোভ সমাবেশ মঞ্চের লাল ব্যানারে লেখা ছিল- 'ফ্যাসিবাদ হটাও, শাসনব্যবস্থা বদলাও, জ্বালানি তেলের অযৌক্তিক মূল্য বৃদ্ধি রুখে দাঁড়াও'। নেতা-কর্মীদের হাতে 'ফ্যাসিবাদ দুঃশাসন রুখে দাঁড়াও', 'বাজারের আগুন থেকে মানুষকে বাঁচাও', 'রোল মডেলের উন্নয়ন ট্রাকের লাইনে জনগণ', 'রাষ্ট্রীর লুটপাটের সরকার, আর নাই দরকার' ইত্যাদি বক্তব্য সংবলিত পস্ন্যাকার্ড ছিল।

নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নার সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশে বাংলাদেশের বিপস্নবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল হক, আকবর খান, গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি, আবুল হাসান রুবেল, গণঅধিকার পরিষদের নুরুল হক নূর, রাশেদ খান, ভাসানী অনুসারী পরিষদের শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের হাসনাত কাইয়ুম, ইমরান ইমন, জেএসডির তানিয়া রব, নাগরিক ঐক্যের শহীদুলস্নাহ কায়সার বক্তব্য রাখেন। বিক্ষোভ সমাবেশের পর নেতা-কর্মীদের নিয়ে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা একটি মিছিল বের করেন।

সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দল, ছাত্র-শ্রমিক-জনতার উদ্দেশে আ স ম আবদুর রব বলেন, এই লড়াই বাঁচার লড়াই, এই লড়াই গণতন্ত্রের লড়াই। এই লড়াইয়ে জিততে হবে। একতা গড়ে তুলতে হবে। সামনে আছে জোর লড়াই।

তিনি বলেন, জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির ফলে সব জিনিসের দাম বাড়ছে, পরিবহণের ভাড়া বাড়ছে। দেশে সরকার নেই, এখন সার্কার আছে ক্ষমতায়। সরকার সিন্ডিকেটের হাতে চলে গেছে। কুইক রেন্টাল পাওয়ার পস্ন্যান্টের তালিকা দেখেন। কারা মালিক? সুইস ব্যাংকে কাদের টাকা আছে, তালিকা দেখলে বোঝা যাবে কারা এরা? তারা সরকারের কোলের মধ্যে বসে আছে।

রব বলেন, এই লড়াইয়ে শুধু সরকার বদল নয়, শাসন ব্যবস্থা ও সংবিধান সংস্কার করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় জনগণের হাতে ক্ষমতা দিতে হবে। জবাবদিহিতার ব্যবস্থা করতে হবে।

নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, কোনো দেশের টাকা যদি অবৈধভাবে পাচার হয়, সেই দেশ যদি সুইস ন্যাশনাল ব্যাংকের কাছে চিঠি দেয়, তাহলে তারা কারা টাকা পাচার করেছে এবং কত টাকা পাচার করেছে, সেই তথ্য দেয়। কিন্তু গত কয়েক বছরে সরকার এই তালিকা চায়নি। কেন চায়নি? কারণ, থলের বিড়াল বের হবে। এরা যে চোর, অর্থ পাচার করে, এটা প্রমাণিত হবে।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, সরকার মধ্যরাতে ভোট ডাকাতির মতো জনগণের ভাগ্য নির্ধারণও করে মধ্যরাতে। সরকার মুক্তিযুদ্ধ ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার কথা বললেও দেশকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, সাম্য, সামাজিক ন্যায়বিচার ও মানবিক মর্যাদার বিরুদ্ধে পরিচালনা করছে।

গণ অধিকার পরিষদের সদস্য সচিব ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক বলেন, সব জিনিসের দাম বাড়ছে। মানুষের মনে ক্ষোভ তৈরি হচ্ছে। সরকার জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ নয়। তারা জনগণের কথা শুনছে না।

প্রসঙ্গত, গত ৮ আগস্ট জেএসডিসহ নাগরিক ঐক্য, বাংলাদেশের বিপস্নবী ওয়ার্কার্স পার্টি, গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি আন্দোলন, ভাসানী অনুসারী পরিষদ ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন- এই ৭টি দলের সমন্বয়ে 'গণতন্ত্র মঞ্চ' নামে সরকারবিরোধী নতুন রাজনৈতিক জোটের আত্মপ্রকাশ হয়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে