নিজস্ব সম্পদে নির্ভরতা বাড়াতে তাগিদ দিলেন বিশেষজ্ঞরা

দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে নিজস্ব সম্পদের ওপর নির্ভরতা বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। শনিবার রাজধানীর বনানীর ঢাকা গ্যালারিতে এডিটরস গিল্ড বাংলাদেশের 'বিশ্ব জ্বালানি সংকট ও বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ' শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এই তাগিদ দেন। করোনা মহামারি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধসহ নানা কারণে বিশ্বব্যাপী জ্বালানি সংকট দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশেও এটি চ্যালেঞ্জ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। এর পরিপ্রক্ষিতে পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকার বেশকিছু উদ্যোগ নিয়েছে উলেস্নখ করে বক্তারা বলেন, দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে নিজস্ব সম্পদের ওপর নির্ভরতা বাড়াতে হবে। সংগঠনের সভাপতি মোজাম্মেল বাবুর সঞ্চালনায় বৈঠকে অংশ নেন সরকারের সংশ্লিষ্ট শীর্ষ কর্মকর্তা ও বিশেষজ্ঞরা। এডিটরস গিল্ডের অন্যতম সদস্য এবং পাওয়ার অ্যান্ড এনার্জির সম্পাদক মোলস্না এম আমজাদ হোসেন আলোচনার শুরুতে বলেন, এই মুহূর্তে জ্বালানির দাম বৃদ্ধির কোনো বিকল্প নেই, এটা সবাই স্বীকার করছে। কিন্তু আমাদের কি এলএনজি আমদানির সক্ষমতা আছে? আমাদের নিজস্ব সম্পদ উত্তোলন করতে হবে। এগুলো উৎপাদনের কাজে ব্যবহার করতে হবে। গ্যাস-কয়লার অনুসন্ধানে মনোযোগ দিতে হবে। দেশের পুরো পাওয়ার সিস্টেম ভুল পথে রয়েছে। বিপিসি যে প্রক্রিয়ায় জ্বালানি তেলের দাম নির্ধারণ করছে তা সঠিক নয় মন্তব্য করে জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডক্টর ইজাজ হোসেন বলেন, তেলের বিষয়ে কোনো সমস্যা নেই, সমস্যা হচ্ছে প্রাইসিং। তেলের টাকা অন্য খাতে যাবে কেন? অ্যাডমিনিস্ট্রেট প্রাইস ওভাবে তো হয় না। এখন যে লোডশেডিং হচ্ছে, তাও সিস্টেমিক সমস্যা বলে তিনি উলেস্নখ করেন। বিপিসির চেয়ারম্যান এ বি এম আজাদ জানান, সরকার যে সিদ্ধান্ত দেয়, সে অনুযায়ী কাজ করেন তারা। তিনি বলেন, বিপিসিতে দুর্নীতির কোনো সুযোগ নেই। বিপিসি এখন লাভ করছে- অনেকেই এমন কথা বললেও এখনো ২৭ হাজার কোটি টাকা ঋণ রয়ে গেছে। অর্থনীতিবিদ ও পিআরআইর নির্বাহী পরিচালক ডক্টর আহসান এইচ মনসুর বলেন, পৃথিবীর সব দেশেই বাজার দরের সঙ্গে জ্বালানির দাম ওঠানামা করে থাকে। যুদ্ধের কারণে তেলের দাম কোথায় গিয়ে ঠেকবে, তা আমরা জানি না। গ্যাসের দামও কমবে। প্যানিক না হয়ে হওয়ার কিছু নেই। তিন থেকে চার বছর সতর্কভাবে চলতে হবে। বাংলাদেশের বাস্তবতায় তেল-গ্যাসের দাম বার বার বাড়ানো-কমানো সম্ভব নয়। বহির্বিশ্বের চেয়ে দেশে দাম কম, সেজন্য এটি করা যাচ্ছে না মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব ও সাবেক বিদু্যৎ সচিব আবুল কালাম আজাদ বিদু্যতের সমস্যা সমাধানে ব্যাপকভাবে সৌরবিদু্যৎ এবং কয়লাভিত্তিক বিদু্যতের ব্যবহার বাড়ানোর পরামর্শ দেন। বৈঠকে আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক ডক্টর সেলিম মাহমুদ বলেন, বিএনপি গ্যাস এক্সপোর্ট করার প্রতিশ্রম্নতি দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল। কিন্তু তারা সেটা পারেনি। তাতে আন্তর্জাতিক বাজারে নেতিবাচক বার্তা গেছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।