আওয়ামী লীগের প্রতিবাদ সমাবেশ

বিএনপিকে রাজপথে মোকাবিলার শপথ

প্রকাশ | ১৮ আগস্ট ২০২২, ০০:০০

ম যাযাদি রিপোর্ট
২০০৫ সালে ১৭ই আগস্ট বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের শাসনামলে সংঘটিত দেশব্যাপী সিরিজ বোমা হামলার প্রতিবাদে বুধবার রাজধানীর রমনা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সামনে আওয়ামী লীগের প্রতিবাদ সমাবেশ -ফোকাস বাংলা
রাজপথে নিজেদের শক্তির জানান দিয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। ১৭ আগস্ট দেশজুড়ে সিরিজ বোমা হামলা দিবস উপলক্ষে বুধবার রাজধানীসহ সারাদেশে সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিলে বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মীকে জমায়েত করেছে দলটি। রাজধানীতে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে বিভিন্ন থানা, ওয়ার্ড থেকে আওয়ামী লীগ ও এর বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মী অংশ নেন। এ সময় রাজধানীর রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, মৎস্যভবন এলাকা লোকারণ্য হয়ে যায়। আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী বিভিন্ন এলাকা থেকে মিছিল নিয়ে সমাবেশে যোগ দেন। এ সময় তারা বিএনপি-জামায়াতের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্স্নোগান দিতে থাকেন। বিকাল ৩টার পর সমাবেশ শুরু হয়ে চলে সাড়ে ৫টা পর্যন্ত। প্রতিবাদ সমাবেশে আওয়ামী লীগ নেতারা জানিয়েছেন, বিএনপিকে রাজপথে মোকাবিলা করা হবে। তারা (বিএনপি) যেখানে সন্ত্রাস করবে, সেখানেই প্রতিরোধ, প্রতিহত করা হবে। সমাবেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, 'বিএনপির মির্জা ফখরুল বলেন, 'আওয়ামী লীগের পায়ের নিচে মাটি নাই।' এই যে জনতার ঢল, বিএনপি এই ঢল কোনোদিন দেখেনি।' তিনি দলের নেতাকর্মীর উদ্দেশে বলেন, 'আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতাকর্মীকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। আজ শপথ নিতে হবে- বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের ঠিকানা বিএনপিকে দেশের রাজপথে মোকাবিলা করতে হবে। প্রস্তুত থাকেন, খেলা হবে, রাজপথে খেলা হবে, রাজপথে মোকাবিলা হবে, আগামী নির্বাচনে খেলা হবে, সেখানে আমরা জয়লাভ করব। নেতাকর্মীকে ঐক্যবদ্ধ রেখে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে হবে।' আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য কৃষিমন্ত্রী ডক্টর আব্দুর রাজ্জাক বলেন, 'এই সরকারের অধীনই নির্বাচন করতে হবে। নির্বাচন পরিচালনা করবে নির্বাচন কমিশন। শেখ হাসিনাই প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করবেন। সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে। উন্নয়ন এগিয়ে নিতে বাংলাদেশের মানুষ আবারও আওয়ামী লীগকে ভোট দেবে।' সভাপতিমন্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, 'বিএনপি-জামায়াত আবারও দেশে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করতে চায়। বিএনপি-জামায়াত যে জায়গায় সন্ত্রাস করবে সেই জায়গায়ই প্রতিরোধ, প্রতিহত করা হবে।' সভাপতিমন্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, 'বাংলাদেশের রাজনীতি থেকে বিএনপি-জামায়াতকে বিতাড়িত করতে হবে। আজকে আমাদের এই শপথ নিতে হবে। বিএনপি-জামায়াত এ দেশের রাজনীতিতে অপশক্তি।' আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ডক্টর হাছান মাহমুদ বলেন, 'বিএনপি-জামায়াতের পেট্রোল বাহিনী আবার পথে নেমেছে। আজ থেকে আমরাও মাঠে নামলাম। বাংলাদেশকে এই অপশক্তিকে আক্রান্ত করতে দেওয়া হবে না।' সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন- আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, মির্জা আজম, এসএম কামাল হোসেন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী প্রমুখ। প্রতিবাদ সমাবেশ শেষে একটি বিশাল মিছিল বের হয়। বিক্ষোভ-মিছিলটি ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন প্রাঙ্গণ থেকে শুরু হয়ে মৎস্যভবন-কদম ফোয়ারা-প্রেস ক্লাব ও জিরো পয়েন্ট হয়ে বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়। রাজধানীজুড়ে যানজট এদিকে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত সমাবেশ ওর্ যালিকে কেন্দ্র করে বুধবার 'যানজটের রাজধানী'তে পরিণত হয়েছিল রাজধানী ঢাকা। অফিস শেষে রাস্তায় বেরিয়েই নগরবাসীর চোখ ছানাবড়া হয়েছে। কোনো দিকেই \হযেন কোনো যানবাহন এগোয় না। সবকিছু যেন স্থবির। অনেকে অবস্থা বেগতিক দেখে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে হাঁটতে শুরু করেন। আর যারা গাড়ির মধ্যে বসেছিলেন প্রচন্ড গরমে তাদের নাস্তানাবুদ হতে হয়েছে। নারী ও শিশুযাত্রীদের ভোগান্তি ছিল অসহনীয়। এ আয়োজনকে কেন্দ্র করে রাজধানীর বিভিন্ন ওয়ার্ড ও আশপাশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে নেতাকর্মী জড়ো হন কাকরাইল ও আশপাশের এলাকায়। রাস্তার পাশে গাড়িগুলো রেখে দেওয়ায় দুপুর থেকেই যানজট বেঁধে যায়। বিকাল ৪টায়র্ যালি শুরুর পর অবস্থা আরও বেগতিক হয়। আশপাশের সব ক্রসিংয়ে যানবাহনের জট তৈরি হয়। গলি-উপগলি সর্বত্রই একই অবস্থা হয়।