দিনে কাঠমিস্ত্রি, রাতে মোটর সাইকেল চোর

১৩টি চোরাই মোটর সাইকেল উদ্ধার

প্রকাশ | ১৮ আগস্ট ২০২২, ০০:০০

ম যাযাদি রিপোর্ট
দিনে কাঠমিস্ত্রি। সারাদিন কাঠের আসবাবপত্রে নকশা কাটে। সন্ধ্যা নামলেই পেশা বদলে যায়। হয়ে ওঠে দুর্ধর্ষ মোটর সাইকেল চোর। মোটর সাইকেল চোর চক্রের দলনেতাও সে। সেই দলনেতাসহ চোর চক্রের পাঁচ সদস্য গ্রেপ্তার হয়েছে। গ্রেপ্তারদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে ১৩টি চুরি করা মোটর সাইকেল। গত সাত বছরে চক্রটি পাঁচ শতাধিক মোটর সাইকেল চুরি করে বিক্রি করে দিয়েছে। চক্রের সদস্যরা এক জেলা থেকে মোটর সাইকেল চুরি করে অনেক দূরের জেলায় বিক্রি করতো। বুধবার ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়ে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, গত ১৬ আগস্ট রাতে ঢাকার শনির আখড়া ও ধলপুর এলাকা হতে তাদের গ্রেপ্তার করে ডিবির ওয়ারী বিভাগ। গ্রেপ্তাররা হচ্ছে নূর মোহাম্মদ (২৬), রবিন (২৩), সজল (১৮), মনির (২২) ও আকাশ (২২)। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে চুরি করা ১৩টি মোটর সাইকেল। ডিবি প্রধান জানান, গ্রেপ্তাররা পেশাদার মোটর সাইকেল চোর। তারা বহু বছর যাবৎ ঢাকায় মোটর সাইকেল চুরি করে আসছিল। চক্রের প্রধান নূর মোহাম্মদ। সে ঢাকার জুরাইন এলাকায় একটি কাঠের দোকানে নকশার কাজ করে। আগে তার বাসা ছিল ঢাকার কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদে। হাসনাবাদ গলির ভেতর চা দোকানে গ্রেপ্তার রবিনের সঙ্গে পরিচয় হয়। দুজন মিলে দ্রম্নত অনেক টাকার মালিক হওয়ার পরিকল্পনা করে। তারা মোটর সাইকেল চুরি করে তা বিভিন্ন জেলায় বিক্রি করে রাতারাতি ধনী হয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে মাঠে নেমে পড়ে। তারা মোটর সাইকেলের নকল চাবি বানায়। পরিকল্পনা মোতাবেক পরীক্ষামূলকভাবে রবিনের মোটর সাইকেলের চাবি বানিয়ে টেস্ট করে। তাতে সফল হয়। এরপরই শুরু হয় তাদের মোটর সাইকেল চুরি। তারা কেরানীগঞ্জের শারিঘাট, হাসনাবাদ, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ এলাকায় রাখা মোটর সাইকেল চুরি করতে থাকে। চোরাই মোটর সাইকেল বিক্রি করতে ঢাকার দোহারে সজলকে সঙ্গে নেয়। তারা ঢাকা থেকে চুরি করা মোটর সাইকেল পোস্তগোলা ব্রিজ পার করে মাওয়া রোডের শ্রীনগর বাইপাস হয়ে মেঘুলা বাজার ও দোহার রুট দিয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে বিক্রি করত। প্রতিটি চোরাই মোটর সাইকেল তারা ৪০ হাজার থেকে ৮০ হাজার টাকায় বিক্রি করত। বিক্রির টাকার মধ্যে নূর মোহাম্মদ ৪০ শতাংশ, রবিন ৩০ শতাংশ ও বাকি টাকা অন্যরা সমান ভাগে ভাগ করে নিত। গ্রেপ্তাররা জানায়, তারা এখন পর্যন্ত ৫০০ এর বেশি মোটর সাইকেল চুরি করে বিক্রি করে দিয়েছে। ২০১৫ সাল থেকে তারা এ কাজ করছিল। তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা আছে। সংবাদ সম্মেলনে ডিবির ওয়ারী বিভাগের ডিসি মুহাম্মদ আশরাফ হোসেন, ডিএমপির মিডিয়া বিভাগের উপকমিশনার মো. ফারুক হোসেন, ডিবির এডিসি মো. তরিকুর রহমান ও এডিসি (মিডিয়া) হাফিজ আল আসাদসহ ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।