মুক্তিযোদ্ধা কোটা পরিবতের্নর সুযোগ নেই: মন্ত্রী

প্রকাশ | ১২ জুলাই ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি রিপোটর্
উচ্চ আদালতের রায় অনুযায়ী সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ৩০ শতাংশ কোটা রাখতেই হবে বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। তিনি বলেছেন, মুক্তিযোদ্ধা কোটায় হাত দিতে হলে সরকারকে আগে ওই রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ করে রায় পক্ষে পেতে হবে। ‘চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা সংরক্ষণ এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাম্প্রতিক কাযর্ক্রম’ নিয়ে বুধবার সচিবালয়ে তথ্য অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী এ কথা বলেন। তিনি বলেন, আপিল বিভাগের এক আদেশে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় যোগ্য প্রাথীর্ পাওয়া না গেলে মেধা কোটা থেকে তা পূরণ করার সুযোগ দেয়া হলেও ৩০ শতাংশ কোটা সংরক্ষণের বাধ্যবাধকতা রয়ে গেছে। ‘তাই এ আদেশ অগ্রাহ্য করে বা পাশ কাটিয়ে বা উপেক্ষা করে ভিন্ন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়ার কোনো সুযোগ নেই। এটা করা হলে আদালত অবমাননার শামিল হবে বলে আমি মনে করি।’ বতর্মানে সরকারি চাকরিতে নিয়োগে মোট ৫৬ শতাংশ পদ বিভিন্ন কোটার জন্য সংরক্ষিত; এর মধ্যে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য রয়েছে ৩০ শতাংশ পদ। কোটার মোট পরিমাণ ১০ শতাংশে নামিয়ে আনার দাবিতে কয়েক মাস ধরে আন্দোলন চালিয়ে আসছে ‘বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’। তাদের আন্দোলনের একপযাের্য় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১১ এপ্রিল সংসদে বলেন, সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতিই আর রাখা হবে না। এর ধারাবাহিকতায় গত ২ জুলাই সরকার একটি উচ্চপযাের্য়র কমিটি গঠন করে কোটা ব্যবস্থা পযাের্লাচনা করে প্রতিবেদন দিতে বলে। ওই কমিটি গত ৮ মে তাদের প্রথম বৈঠকে কমর্পন্থা নিধার্রণের পাশাপাশি কোটার বিষয়ে দেশি-বিদেশি তথ্য সংগ্রহের সিদ্ধান্ত নেয়। মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলমের নেতৃত্বাধীন ওই কমিটিকে ২৩ জুলাইয়ের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি পযাের্লাচনা বা সংস্কার বা বাতিলে বিভিন্ন দিকনিদের্শনা দিয়ে প্রয়োজনে বতর্মান কোটা পদ্ধতি সংস্কার বা বাতিলের যৌক্তিকতাসহ সরকারের কাছে সুপারিশ দেবে এই কমিটি। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলছেন, মুক্তিযোদ্ধা কোটার ক্ষেত্রে আইনগত বাধ্যবাধকতা থাকায় আদালতের আদেশে যতক্ষণ না পরিবতর্ন আসছে, ততক্ষণ এর ব্যত্যয় ঘটানোর সুযোগ নেই। ‘আদালতে ভ্যাকেট করাতে হবে। সরকার আপিল বিভাগে রিভিউ পিটিশন করলে আদালত যদি রায় দেয় তবেই পারবে। এই আদেশ বহাল থাকা পযর্ন্ত (মুক্তিযোদ্ধা কোটা পরিবতের্নর) কোনো সুযোগ নাই।’ আদালতের রায়ের কপি বুধবার কোটা পযাের্লাচনা কমিটির কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে জানিয়ে মোজাম্মেল বলেন, সরকারের ওই কমিটি ‘সচেতনতার সঙ্গে’ সিদ্ধান্ত নেবে বলে তারা আশা করছেন। ‘মুক্তিযোদ্ধা কোটা নিয়ে যারা উদ্বিগ্ন, তাদের আশ্বস্ত করে বলতে চাই, এ সরকার যেহেতু আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং ?মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী, তাই আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, মুক্তিযোদ্ধা কোটায় হস্তক্ষেপ করা হবে না এবং মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধা পরিবার বা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী জনগণের উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো কারণ আছে বলে আমি মনে করি না।’ তবে কোটা পযাের্লাচনা কমিটি মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাদে অন্য কোটায় পরিবতর্ন আনার সুপারিশ করতে পারবে বলে মন্তব্য করেন মন্ত্রী। সংবাদ সম্মেলনে তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে আওয়ামী লীগ সরকারের নেয়া বিভিন্ন কাযর্ক্রম বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেন। অন্যদের মধ্যে প্রধান তথ্য কমর্কতার্ কামরুন নাহার সংবাদ সম্মেলনে ?উপস্থিত ছিলেন।