কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে ইতিহাসের সাক্ষী তারা

সিলেটে বন্দি স্থানান্তর

প্রকাশ | ১২ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
শুক্রবার সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে প্রিজনভ্যানে করে শহরতলির বাধাঘাটে নবনিমির্ত কারাগারে বন্দিদের স্থানান্তর করা হয় Ñযাযাদি
প্রিজন ভ্যানের শিক ধরা বৃদ্ধার একজোড়া হাত। শেকলের ফঁাক গলিয়ে উঁকি দিচ্ছে বিবণর্ দু’চোখ। যেন নয়নজুড়ে চেনা মুখের সন্ধান। বন্দি স্থানান্তরের সময় প্রিজন ভ্যানের এমন দৃশ্যই ভাবিয়েছে পথের পাশে দঁাড়িয়ে থাকা লোকজনকেও। সিলেটের পুরনো কারাগারকে বিদায় জানিয়ে নতুন কারাগারে যাচ্ছেন বন্দিরা। ২২৯ বছরের পুরনো কারাগার ছেড়ে যাওয়া যেমন তাদের জন্য ইতিহাস, তেমনি নতুন কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্টের সারথী হয়ে ইতিহাসের সাক্ষী হলেন বন্দিরা। বন্দি স্থানান্তরের এই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে কোলাহল মুখর হচ্ছে সিলেট শহরের উপকণ্ঠে নিমির্ত নতুন কারাগার। শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে প্রিজন ভ্যানে করে কঠোর নিরাপত্তায় শুরু হয় বন্দি স্থানান্তর কাযর্ক্রম। চলবে আজ (১২ জানুয়ারি) পযর্ন্ত। সরেজমিন দেখা গেছে, বন্দি স্থানান্তর প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে শুক্রবার সকাল থেকে নগরীর পুরনো কারাগারের সামনে থেকে শহরতলীর বাধাঘাটে নবনিমির্ত কারাগার পযর্ন্ত রাস্তার মোড়ে মোড়ে পুলিশ মোতায়েন করা হয়। ৭/৮টি প্রিজন ভ্যানে করে বন্দিদের পুলিশি পাহারায় স্থানান্তর করা হয়। বন্দিদের নিয়ে চলাচল করা সড়কে যান চলাচলও সীমিত করা হয়েছে। এ কারণে ১১ ও ১২ জানুয়ারি (শুক্র ও শনিবার) কারাগারে বন্দিদের সঙ্গে স্বজনদের সাক্ষাৎ বন্ধ রাখার নোটিশ জারি করেছে কারা কতৃর্পক্ষ। সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলা সুপার মো. আব্দুল জলিল বলেন, শুক্রবার পযর্ন্ত পুরনো কারাগারে বন্দির সংখ্যা ২ হাজার ৩শ’ জন। এরমধ্যে ৮শ’ হাজতি ছাড়া বাকি সব কয়েদি। সিলেট নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (মিডিয়া) জেদান আল মুছা বলেন, বন্দি স্থানান্তর প্রক্রিয়ায় কারা কতৃর্পক্ষের চাহিদা অনুসারে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ফলে কঠোর নিরাপত্তায় বন্দিদের নতুন কারাগারে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। কারা সূত্র জানায়, ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনামলে ১৭৮৯ সালে সিলেট শহরের অভ্যন্তর ধোপাদীঘির পাড়ে ২৪ দশমিক ৬৭ একর জমির উপর নিমার্ণ করা হয়েছিল জেলা কারাগার। পুরাতন কারাগারের অভ্যন্তরে ১০ একর এবং বাইরে রয়েছে প্রায় ১৫ একর ভূমি। সে হিসেবে প্রতিষ্ঠার ২২৯ বছর পর উদ্বোধনের ৩ মাসের মধ্যেই প্রথমবারের মতো বন্দি স্থানান্তর করা হচ্ছে শহরতলীর বাদাঘাটে নিমির্ত নতুন কারাগারে। ১৯৯৭ সালে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে রূপান্তরের পর এর ধারণক্ষমতা দঁাড়ায় ১ হাজার ২১০ জনে। বতর্মানে এই কারাগারে বন্দি আছেন ধারণক্ষমতার প্রায় দ্বিগুণ। দুই হাজার বন্দির ধারণক্ষমতাসম্পন্ন নবনিমির্ত সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারটির গত বছরের ১ নভেম্বর ১০টায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে নতুন কারাগার হলেও পুরাতন কারাগারটিও ব্যবহার করা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।