একাদশ সংসদ নিবার্চন

আওয়ামী লীগের রেকডর্ ভোট বিএনপির অধের্ক জামানত হারা

২৯৮ আসনে ১০ কোটি ৩৫ লাখ ভোটারের মধ্যে প্রায় ৮০ শতাংশ ভোট সেদিন বাক্সে পড়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান নিবার্চন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা

প্রকাশ | ১২ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি রিপোটর্
একাদশ সংসদ নিবার্চনে আওয়ামী লীগ ভোটের হার অতীতের সব রেকডর্ ছাড়িয়ে গেছে, বিএনপির এত বেশি প্রাথীর্ও আর কখনো জামানত হারাননি। নিবার্চন কমিশন ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের ভোটের যে ফলাফল ঘোষণা করেছে, তাতে প্রদত্ত ভোটের ৭৬ দশমিক ৮০ শতাংশ পড়েছে আওয়ামী লীগের নৌকায়। এর আগে ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগ পেয়েছিল প্রদত্ত ভোটের ৭২.১৪ শতাংশ, আর ১৯৭৩ সালে দেশের প্রথম সংসদ নিবার্চনে পেয়েছিল ৭৩.২০ শতাংশ। দেশের ৩০০ আসনের মধ্যে ৩০ ডিসেম্বর ভোট হয় ২৯৯ আসনে। গোলযোগের কারণে একটি আসনের ফল সেদিন স্থগিত রাখা হয়। বাকি ২৯৮ আসনের ফলাফলের গেজেট ইতোমধ্যে প্রকাশ করেছে নিবার্চন কমিশন। ২৯৮ আসনে ১০ কোটি ৩৫ লাখ ভোটারের মধ্যে প্রায় ৮০ শতাংশ ভোট সেদিন বাক্সে পড়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান নিবার্চন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা। ২০০৮ সালে নবম সংসদ নিবার্চনে রেকডর্ ৮৭.১৩ শতাংশ ভোট পড়েছিল। হ ১৯৮৬ সালে তৃতীয় সংসদ নিবার্চন বিএনপি বজর্ন করে হ ১৯৮৮ সালে চতুথর্ সংসদ নিবার্চন আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ অধিকাংশ দল বজর্ন করে হ ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রæয়ারি ষষ্ঠ সংসদ নিবার্চন আওয়ামী লীগসহ অধিকাংশ দল বজর্ন করে হ ২০১৪ সালে দশম সংসদ নিবার্চন বিএনপি ও শরিকরা বজর্ন করে। ১৫৩ আসনে একক প্রাথীর্রা বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় জয়ী হন। ভোট হয় ১৪৭ আসনে এবার আওয়ামী লীগ ও শরিক কয়েকটি দল মিলিয়ে নৌকার প্রাথীর্ ছিলেন ২৭১ জন। তাদের মধ্যে নৌকার প্রাথীর্রা জয়ী হয়েছেন ২৬৫টি আসনে। দলীয়ভাবে আওয়ামী লীগ পেয়েছে ২৫৭ আসন। অন্যদিকে বিএনপির ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্ব›িদ্বতায় ছিলেন মোট ২৮১ জন। সব মিলিয়ে প্রদত্ত ভোটের ১৩.৫১ শতাংশ পেয়েছেন ধানের শীষের প্রাথীর্রা। অতীতে বিএনপির ভোটের হার মোট প্রদত্ত ভোটের ৩০ থেকে ৪০ শতাংশের মধ্যে ঘোরাফেরা করত। এত কম ভোট বিএনপি আর কোনো নিবার্চনে পায়নি। ৩০ ডিসেম্বরের নিবার্চনে বিএনপির প্রাথীর্রা জয় পেয়েছেন পঁাচটি আসনে। আর জোটগতভাবে তারা পায় সাতটি আসন। পরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার স্থগিত আসনেও বিএনপির প্রাথীর্ জয়ী হয়। অন্যদিকে মহাজোটের শরিক জাতীয় পাটির্ ১৭৪ আসনে তাদের লাঙ্গল প্রতীকে প্রাথীর্ দিয়ে মোট প্রদত্ত ভোটের ৫.৩৭ শতাংশ পেয়েছে। লাঙ্গলের ইতিহাসে এটাই সবির্নম্ন ভোট। ভোটের অঙ্কে বিএনপির চেয়ে কম হলেও জাতীয় পাটির্ এবার আসন পেয়েছে ২২টি। জামানত গেছে অধিকাংশের দেশে নিবন্ধিত ৩৯টি রাজনৈতিক দলের সবগুলোই একাদশ সংসদ নিবার্চনে অংশ নেয়। দলীয় ও স্বতন্ত্র মিলে এবার প্রাথীর্ ছিলেন ১ হাজার ৮৫০ জনের বেশি। তাদের মধ্যে ১ হাজার ৪২২ জনের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। ১৯৯১ সালের নিবার্চনে রেকডর্ ১৯৩৪ জনের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়, যা মোট প্রাথীর্র ৬৯ শতাংশ। নিবার্চনী আইন অনুসারে একটি আসনে প্রদত্ত ভোটের আট ভাগের একভাগ না পেলে প্রাথীর্র জামানত বাজেয়াপ্ত হয়। এবার ২০ হাজার টাকা জামানত দিতে হয়েছে প্রাথীের্দর। এবারের একাদশ সংসদ নিবার্চনে সবচেয়ে বেশি আসনে প্রাথীর্ ছিল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের হাতপাখা মাকার্য়। তাদের ২৯৭ জন প্রাথীর্র মধ্যে ২৯৬ জনের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। ধানের শীষের ২৮১ প্রাথীর্র মধ্যে ১৬০ জনের (৫৭ শতাংশ) জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে এবার। আর লাঙ্গলের ১৭৪ প্রাথীর্র মধ্যে ১৫০ জন (৮৬ শতাংশ) জামানত হারিয়েছেন। আওয়ামী লীগের কেউ জামানাত হারাননি। নবম সংসদ নিবার্চনে ৯৬৯ জন জামানত হারিয়েছিলেন। তার মধ্যে আওয়ামী লীগের চারজন, বিএনপির ১৪ জন ও জাতীয় পাটির্র ১৩ জনের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছিল। দশম সংসদ নিবার্চনে আওয়ামী লীগের কেউ জামানত হারাননি, জাতীয় পাটির্র ৪১ জনের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছিল।