অধ্যক্ষ-উপাধ্যক্ষ নিয়োগে নিষেধাজ্ঞা বাতিল হচ্ছে

প্রকাশ | ১৬ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি রিপোটর্
বেসরকারি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ এবং ডিগ্রি কলেজের উপাধ্যক্ষ নিয়োগে নিষেধাজ্ঞা বাতিল হতে যাচ্ছে। চলতি মাসের শেষের দিকে এ নিষেধাজ্ঞা বাতিল করা হবে বলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ থেকে জানা গেছে। এদিকে রাজধানীর ঐতিহ্যবাহী ভিকারুননিসা নূন স্কুল ও কলেজে অধ্যক্ষ নিয়োগে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পষর্দ সভাপতি সোমবার শিক্ষা সচিবের কাছে একটি চিঠি জমা দিয়েছেন। তাতে উল্লেখ করা হয় যে, ২০১০ সাল থেকে প্রতিষ্ঠানটিতে পূণর্কালীন অধ্যক্ষ নেই। এ কারণে প্রতিষ্ঠানের স্বাভাবিক কাযর্ক্রম বিঘিœত হচ্ছে। নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব সোহরাব হোসেন বলেন, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যক্ষ-উপাধ্যক্ষ নিয়োগে স্থগিতাদেশ দ্রæত তুলে দেয়া হবে। যে সমস্যার জন্য নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল তা নিয়ে কাজ চলছে। চলতি মাসের মধ্যে এ বিষয়ে নতুন নিদের্শনা জারি করা হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বিভিন্ন কলেজ ও ডিগ্রি কলেজে অধ্যক্ষ-উপাধ্যক্ষ নিয়োগে অনিয়ম অভিযোগ পাওয়া যায়। প্রভাষক নিয়োগে বাণিজ্য বন্ধ হওয়ায় গভনির্ং বডির এক শ্রেণির সভাপতি ও সদস্য অবৈধ আয়ের পথ হিসেবে এই দুটি পদকে বেছে নেয়। এমন নানা অভিযোগের ভিত্তিতে গত বছর ২৮ আগস্ট এই দুই পদে নিয়োগ কাযর্ক্রম স্থগিত করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। মাউশি সূত্রে জানা গেছে, অধ্যক্ষ-উপাধ্যক্ষ নিয়োগ কাযর্ক্রম গত পঁাচ মাস থেকে বন্ধ থাকায় দেশের এক হাজার ১০০ কলেজে অধ্যক্ষ নিয়োগ দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। তার মধ্যে ঢাকা মহানগরীতে প্রায় ২০০টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে শিক্ষকের কাছে বাবা-মায়ের অপমানের লজ্জায় ছাত্রীর আত্মহত্যার ঘটনার মধ্য দিয়ে গত বছর আলোচনায় উঠে এসেছে ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ। জানা গেছে, ২০১০ সাল থেকে এ প্রতিষ্ঠানে স্থায়ী অধ্যক্ষ নিয়োগ না হওয়ায় নানা ধরনের অনিয়ম করা হচ্ছে। যারাই অস্থায়ী অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ পাচ্ছেন, তারাই নিজের সবর্শক্তি প্রয়োগ করে চেয়ার অঁাকড়ে ধরে রাখার চেষ্টা চালিয়ে গেছেন। এ কারণে গত আট বছর ধরে স্থায়ী অধ্যক্ষ নিয়োগ দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। ভারপ্রাপ্ত দিয়েই চলছে এ প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা গেছে, আত্মহত্যার ঘটনার পর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটির সুপারিশে নিয়োগ কাযর্ক্রম শুরু করলেও বতর্মান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হাসিনা বেগম চেয়ার ধরে রাখতে একদিকে স্থায়ী নিয়োগ পেতে আবেদন দাখিল করেন। এ কারণে স্থায়ী নিয়োগের জন্য আবেদন করায় হাসিনা বেগমকে সরিয়ে এ প্রতিষ্ঠানের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক কেকা রায় চৌধুরীকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দিলেও বল প্রয়োগ করে তাকে সরিয়ে আবারও সেই চেয়ার দখল করেছেন হাসিনা বেগম। শিক্ষকরা জানান, ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের বতর্মান সংকট নিরসনে স্থায়ীভাবে অধ্যক্ষ নিয়োগ কাযর্ক্রম শুরু করলেও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিষেধাজ্ঞা থাকায় তা স্থগিত রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে গত সোমবার পরিচালনা পষর্দ সভাপতি গোলাম আশরাফ তালুকদারের স্বাক্ষরিত একটি চিঠি শিক্ষাসচিবকে দেয়া হয়েছে। সেখানে অধ্যক্ষ নিয়োগে অনুমোদন চাওয়া হয়েছে। এ প্রতিষ্ঠানে অধ্যক্ষ নিয়োগে হাইকোটের্ একটি রিট দায়ের করা হয়েছে বলেও জানান তারা। জানতে চাইলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা সচিব জাবেদ আহমেদ বলেন, বেসরকারি শিক্ষকদের বেতনস্কেল, গ্রেডসহ নানা বৈষম্য দূরীকরণে ও ডিগ্রি কলেজ ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অধ্যক্ষ-উপাধ্যক্ষ নিয়োগে কিছুটা বৈষম্য থাকায় আমার নিয়োগ কাযর্ক্রম স্থগিত রাখার নিদের্শ দেই। তিনি বলেন, এসব সমস্যা সমাধানে ইতোমধ্যে দুটি সভা হয়েছে, আরও দুটি সভার করার প্রয়োজন রয়েছে। চলতি মাসের মধ্যে সকল সমস্যা সমাধান করে নিয়োগ কাযর্ক্রম শুরু করার নিদের্শ দেয়া হবে।