স্বমহিমায় ফিরছে বইমেলা

স্টল নির্মাণে ব্যস্ত শ্রমিকরা

প্রকাশ | ২৯ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০

তাহমিদ জায়িফ, ঢাবি প্রতিনিধি
অমর একুশে বইমেলার শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিতে রংতুলির আচড়ে সাজসজ্জার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন একজন শ্রমিক। ছবিটি শনিবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে তোলা -ফোকাস বাংলা
রাজধানীর বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে হাতুড়ি-পেরেকের ঠুকঠাক আওয়াজ আর শ্রমিকদের ব্যস্ততা জানান দিচ্ছে- বইমেলা চলে এসেছে। আর দু'দিন পরই শুরু হবে বাঙালির প্রাণের এ বইমেলা। বইমেলার প্রস্তুতিও প্রায় শেষের দিকে। শেষ মুহূর্তের সাজসজ্জা ও স্টল নির্মাণে ব্যস্ত সময় পার করছেন শ্রমিকরা। করোনা মহামারির কারণে গত দু'বছর চিরাচরিত নিয়ম থেকে বইমেলা অনেকটা ব্যতিক্রম হলেও মহামারি না থাকায় এবার ফিরছে আপন নিয়মে। শনিবার বিকালে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গিয়ে দেখা যায়, স্টল নির্মাণকারী শ্রমিকদের ব্যস্ততা। কোথাও রঙের তুলিতে চলছে স্টলের শৈল্পিক কারুকাজ, কোথাও হাতুড়ি-পেরেক-শাবলের ঠুকঠাকে চলছে স্টল নির্মাণ, আবার কোথাও চলছে লাইট বসানোর কাজ। শ্রমিকদের যেন এক মুহূর্তের জন্যও দম ফেলার হুঁশ নেই। বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণেও একই রকম ব্যস্ততা দেখা গেছে। স্টল শ্রমিক ইমন জানান, প্রতিদিন সকাল ৯-১০টা থেকে রাত ৯-১০টা পর্যন্ত একটানা চলে কাজ। এবার তারা কয়েকজন মিলে ছয়টি স্টল নির্মাণ করছেন। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাগৃতির প্রকাশনীর স্টল নির্মাণের তদারকিতে থাকা খালেদুর রহমান বলেন, 'আমরা ২২ তারিখ (২২ জানুয়ারি) লটারিতে স্থান বরাদ্দ পাওয়ার পরপরই কাজ শুরু করেছি। কাজ প্রায় শেষের দিকে। আজই (২৮ জানুয়ারি) স্টল প্রস্তুত হয়ে যাবে।' মেলা ঘুরে দেখা যায়, সব স্টলের প্রস্তুতি সমান নয়। কোনো কোনো প্রকাশনী স্টলের কাজ সবে শুরু করেছে। তবে ৩১ তারিখের মধ্যে স্টল নির্মাণও সম্পন্ন হবে বলে প্রকাশকরা জানান। বরাবরের মতো এবারও মেলার মূল অংশ থাকবে বাংলা একাডেমিতে। আর গ্রন্থ উন্মোচন ও লেখক বলছি মঞ্চ থাকবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে। তবে প্রতিবার স্টল ও প্যাভিলিয়ন মিশ্রভাবে থাকলেও এবারের স্টল ও প্যাভিলিয়নের জন্য আলাদা সারি করা হয়েছে। যা মেলার সৌন্দর্যকে আরও বাড়িয়ে দেবে বলে সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন। এবার বইমেলায় অংশ নিচ্ছে মোট ৫৭৫ প্রতিষ্ঠান। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ৪৭২টি প্রতিষ্ঠানকে ৭১০টি স্টল ও বাংলা একাডেমিতে ১০৩টি প্রতিষ্ঠানকে ১৪৭টি স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া মেলায় ছোট-বড় প্যাভিলিয়ন থাকবে আরও ৩৪টি। গত বছরের বইমেলায় ৫৩৪টি প্রতিষ্ঠানকে ৭৭৬টি ইউনিট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। প্যাভিলিয়নের সংখ্যা ছিল ৩৫টি। সেদিক বিবেচনায় চলতি বছর বইমেলাতে একটি প্যাভিলিয়ন সংখ্যা কমেছে। তবে এ বছর প্রতিষ্ঠান ও স্টল সংখ্যা দুটোই বেড়েছে। এদিকে, একটি বইয়ে ভিন্নমত থাকার অভিযোগে 'আদর্শ' প্রকাশনী এ বছর বইমেলায় স্টল বরাদ্দ পায়নি। বিষয়টি ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়। পরে আদর্শ প্রকাশনী কর্তৃপক্ষের আপত্তি থাকা বইটি সরিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দিয়ে স্টল বরাদ্দের আবেদন জানায়। কিন্তু ২৮ জানুয়ারি পর্যন্ত এর সুরাহা হয়নি। প্রকাশক মাহবুবুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।