জীবনবীমা কোম্পানির অবৈধ ব্যয় ১৫৩ কোটি টাকা

প্রকাশ | ১৯ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি রিপোটর্
কষ্টে উপাজির্ত পলিসিহোল্ডার ও শেয়ারহোল্ডারদের ১৫৩ কোটি ৪৮ লাখ টাকা অবৈধ ব্যবস্থাপনায় ব্যয় করেছে ২৭ জীবনবীমা কোম্পানি। ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পযর্ন্ত ৯ মাসে (তিন প্রান্তিক) এমডি-চেয়ারম্যান এবং পরিচালনা-পরিষদের সমন্বয়ে এ টাকা হজম হয়েছে। কতৃর্পক্ষ অতিরিক্ত কমিশন দিয়ে, বাড়ি-গাড়ি, খাতাপত্র, চেয়ার-টেবিল এবং বাড়িভাড়াসহ বিভিন্নভাবে খরচ দেখিয়ে এই ১৫৩ কোটি ৪৮ লাখ টাকা তুলে আত্মসাৎ করে বলে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কতৃর্পক্ষ (আইডিআরএ) মনে করছে। কোম্পানিগুলোর আথির্ক প্রতিবেদনে এ চিত্র বেরিয়ে এসেছে। বীমা বিধিমালা ১৯৫৮ এর ৩৯ বিধি অনুসারে, জীবনবীমা কোম্পানি প্রথম বষের্ ব্যবসার জন্য ব্যস্থাপনা ব্যয়ের সবোর্চ্চ ৯০ শতাংশ ব্যয় করতে পারবে। এ আইন মোতাবেক কোম্পানিগুলোর ব্যবস্থাপনা ব্যয়ের পরিমাণ দঁাড়ায় ২ হাজার ৭৭ কোটি ৭০ লাখ টাকা। কিন্তু ব্যবস্থাপনা ব্যয় দেখিয়েছে ২ হাজার ২৩১ কোটি ১৮ লাখ টাকা। অথার্ৎ ১৫৩ কোটি ৪৮ লাখ টাকা বেশি ব্যয় করেছে কোম্পানিগুলো। যা আইনের লঙ্ঘন। সূত্র মতে, বীমা খাতে মোট ৩২টি লাইফ কোম্পানি রয়েছে। এর মধ্যে ২৭টি কোম্পানি প্রথম প্রান্তিকে ৫৪ কোটি ৯ লাখ, দ্বিতীয় প্রান্তিকে ৩২ কোটি ৪৫ লাখ এবং তৃতীয় প্রান্তিকে ৬৬ কোটি ৯৪ লাখ টাকা করে সবের্মাট ১৫৩ কোটি ৪৮ লাখ টাকা বেশি ব্যয় দেখিয়েছে। আর এ অবৈধ ব্যয়ের শীষের্ রয়েছে ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড। কোম্পানিটি তিন প্রান্তিকে ৪৬ কোটি ৫৭ লাখ টাকা বেশি ব্যবস্থাপনা ব্যয় দেখিয়েছে। গত ৯ মাসে কোম্পানি কতৃর্পক্ষ ব্যয় দেখিয়েছে ১৭৮ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। কিন্তু কোম্পানিটি নিয়ম অনুসারে ব্যয় করতে পারে ১৩২ কোটি ৮ লাখ টাকা। এরপর শীষের্ রয়েছে সরকারি প্রতিষ্ঠান জীবনবীমা করপোরেশন। প্রতিষ্ঠানটি গ্রাহকের ১৩৩ কোটি ১ লাখ টাকা ব্যবস্থাপনা ব্যয় দেখিয়েছে। নিয়ম অনুসারে কোম্পানিটি ব্যয় করতে পারত ৮৯ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। অথার্ৎ ৪৩ কোটি ৫৪ লাখ টাকা বেশি ব্যয় দেখিয়েছে। অবৈধ ব্যয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে প্রাইম ইসলামী লাইফ ইন্স্যরেন্স লিমিটেড। কোম্পানিটি ৮১ কোটি ১৪ লাখের জায়গায় ব্যবস্থাপনা ব্যয় করেছে ১০৩ কোটি ৩১ লাখ টাকা। অথার্ৎ ২২ কোটি ১৬ লাখ টাকা বেশি ব্যয় করেছে। এ ছাড়াও ২০ কোটি ৮২ লাখ টাকা বেশি ব্যবস্থাপনা ব্যয় করে চতুথর্ স্থান দখল করেছে পদ্মা ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড। কোম্পানিটি ১০ কোটি ৫২ লাখের জায়গায় ব্যয় করেছে ৩১ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। আর ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ২৩৮ কোটি ৫৪ লাখের জায়গায় ব্যয় করেছে ২৫৭ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। অথার্ৎ ১৮ কোটি ৮০ লাখ টাকা বেশি ব্যয় করেছে। ফলে অবৈধ ব্যয়ের শীষর্ পঁাচে রয়েছে কোম্পানিটি। একইভাবে ৮ কোটি টাকার বেশি ব্যবস্থাপনা ব্যয় করেছে সানফ্লাওয়ার, হোমল্যান্ড, প্রগ্রেসিভ এবং সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড। সন্ধানী ও মেঘনা লাইফ ব্যয় করেছে ৭ কোটির বেশি। ৪ কোটির বেশি খরচ করেছে প্রগতি লাইফ। ৩ কোটির বেশি ব্যয় দেখিয়েছে ডেল্টা, এলআইসি, বেস্ট ও গোল্ডেন লাইফ। অপরদিকে ২ কোটি টাকা ব্যয় দেখিয়েছে চাটার্ডর্ লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড। আর ১ কোটির বেশি ব্যয় দেখিয়েছে স্বদেশ, যমুনা, এনআরবি গেøাবাল, মাকের্ন্টাইল লাইফ, আলফা ও ইসলামী লাইফ। এ ছাড়াও ১ কোটির নিচে অবৈধ ব্যবস্থাপনা ব্যয় করেছে প্রটেক্টিভ, বায়রা, ডায়মন্ড লাইফ এবং ট্রাস্ট ইসলামী লাইফ। সাবির্ক বিষেয়ে আইডিআরএর সদস্য ও মুখপাত্র গোকুল চঁাদ দাস বলেন, বীমা কোম্পানির অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনাসহ অনান্য অনিয়ম খুঁজে বের করতে বিশেষ অডিটের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। রিপোটর্গুলো আসলে পদক্ষেপ নেয়া হবে। তবে একই সময়ে মেটলাইফ, গাডির্য়ান সোনালী পপুলার লাইফ এবং জেনীথ ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি নিধাির্রত ব্যবস্থাপনা ব্যয়ের চেয়ে কম করেছে। গ্রাহকদের আস্থাও ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে বলে জানান তিনি।