একনেক বৈঠক

প্রকল্পে গতি আনতে নজরদারি বাড়ানোর নিদের্শ প্রধানমন্ত্রীর

প্রকাশ | ২৩ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি রিপোটর্
মঙ্গলবার এনইসি সম্মেলন কক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান অথর্মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নানসহ ঊধ্বর্তন কমর্কতার্রা Ñফোকাস বাংলা
৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নিবার্চনের পর আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে নতুন সরকার। টানা তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা। এছাড়াও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় অথৈর্নতিক পরিষদের নিবার্হী কমিটির (একনেক) চেয়ারপারসন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। মঙ্গলবার সকাল ১০টায় শেরে বাংলা নগর এনইসি সম্মেলন কক্ষে নতুন সরকারের প্রথম একনেক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় ১ হাজার ৮৯৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ৮ প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। সভায় প্রকল্প বাস্তবায়নে গতি আনা ও যথাযথভাবে কাজ শেষ করতে নজরদারি বাড়ানোর নিদের্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, নজরদারি বাড়ালে কাজের গতি বাড়বে। সভার শুরুতে দেয়া বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি চাই, যে প্রকল্পগুলো আমরা গ্রহণ করেছি, সেগুলো দ্রæত বাস্তবায়ন শুরু করা এবং সেটা যেন যথাযথভাবে হয় সে ব্যাপারে নজরদারিও বাড়াতে হবে। যত বেশ নজরদারি বাড়ানো হবে কাজের গতি ও মান তত বেশি ভালো হবে। শেখ হাসিনা তার সরকারের লক্ষ্য তুলে ধরে বলেন, আমরা চাই আমাদের লক্ষ্যটা যেন অজর্ন করতে পারি। বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশ। আমাদের প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ৮৬ ভাগে উন্নীত করতে পেরেছি। এটা ধরে রেখে আরও এগিয়ে যেতে হবে। সেকথা মাথায় রেখেই আমাদের প্রকল্প বাছাই করা এবং প্রকল্প প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন- এদিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি দিতে হবে। প্রেক্ষিত পরিকল্পনা প্রণয়ন ও ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ গড়ার লক্ষ্যের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘২০৪১ সালের মধ্যে আমরা বাংলাদেশকে উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। সেই কথাটা মাথায় রেখেই আমাদের সকল কাযর্ক্রম এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।’ শেখ হাসিনা বলেন, ‘যে গুরুদায়িত্ব জনগণ আমাদের দিয়েছে, জনগণের যে আস্থা ও বিশ্বাস, তাদের সেই বিশ্বাসের মযার্দা যেমন আমাদের দিতে হবে, তেমনি তাদের জীবনমান যেন উন্নত হয় বিশেষ করে একেবারে তৃণমূল পযাের্য় সাধারণ মানুষের ভাগ্য যেন পরিবতর্ন হয় সেদিকে লক্ষ্য রেখেই কাজ করতে হবে।’ বতর্মান দারিদ্র্য হার ২১ শতাংশ থেকে আরও নামাতে এবং প্রবৃদ্ধি আরও বাড়াতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর গত সরকারের সময় বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ, পাস করা ও সফলভাবে বাস্তবায়ন করায় সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানান। সভাশেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান বলেন, ‘৮টি প্রকল্প অনুমোদনের মধ্য দিয়ে নতুন সরকারের যাত্রা শুরু হলো। আমরা উন্নয়নের তীথর্যাত্রা শুরু করলাম। আমাদের মূল উদ্দেশ্য দেশের উন্নয়ন করা। উন্নয়নের গতি আরও বাড়াতে চাই। এখন প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ৮৬ শতাংশ, এটাকে আমরা ৮ ও ৯ শতাংশ নিয়ে যাব।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত অভিজ্ঞ, আমার বিশ্বাস তার নেতৃত্বে দেশ আরও এগিয়ে যাবে।’ সভায় সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, খাদ্যমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, গৃহায়ন ও গণপূতর্মন্ত্রী শ. ম. রেজাউল করিম, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবতর্নমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন। একনেক সভায় যাত্রাবাড়ী (মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার)-ডেমরা (সুলতানা কামাল সেতু) মহাসড়ক ৪ লেনে উন্নীতকরণ নামের প্রকল্পটি অনুমোদন দেয়া হয়। প্রকল্পে প্রস্তাবিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৬৮ কোটি টাকা। চলতি বছর থেকে ২০২২ সালের জুনের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন করবে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর। যাত্রাবাড়ী-ডেমরা-শিমরাইল-নারায়ণগঞ্জ সড়কটি একটি গুরুত্বপূণর্ আঞ্চলিক মহাসড়ক, যা দুটি প্রধান জাতীয় মহাসড়ক ঢাকা-চট্টগ্রাম জাতীয় মহাসড়ক ও ঢাকা-সিলেট জাতীয় মহাসড়ককে সংযুক্ত করেছে। প্রস্তাবিত সড়কটি এরইমধ্যে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মূল অংশের অন্তভুর্ক্ত ছিল। কঁাচপুর সেতু ও পোল্ডার সড়ক নিমাের্ণর ফলে এই সড়ক থেকে নতুন সড়কে যান চলাচল বেড়ে যায়। এছাড়া একনেক সভায় ‘পিপিআর রোড নিমূর্ল এবং ক্ষুরারোগ নিয়ন্ত্রণ’, ‘দারিদ্র্য বিমোচনের লক্ষ্যে পুষ্টি সমৃদ্ধ শস্য উৎপাদন ও বাজারজাতকরণ’ প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়। বিদ্যমান সাতটি টেক্সটাইল ভোকেশনাল ইনস্টিটিউটের উন্নয়ন ও নতুন ছয়টি টেক্সটাইল ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট স্থাপন প্রকল্পও মঙ্গলবারের সভায় অনুমোদন দেয়া হয়। এছাড়া বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের জাদুঘর ভবন সম্প্রসারণ এবং অন্যান্য ভৌত অবকাঠামো নিমার্ণ প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়। একনেক সভায় ‘গোপালগঞ্জ বিসিক শিল্পনগরী সম্প্রসারণ’, ‘নেত্রকোনা জেলার সংযোগ সড়ক নিমার্ণ’, ‘গোবিন্দগঞ্জ-ছাতক-দোয়ারীবাজার’ সড়কে ৯টি আরসিসি গাডার্র সেতু নিমার্ণ প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়।