মুক্তিযুদ্ধের ঘাঁটি দখলের চেষ্টায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপি

টাঙ্গাইল-৮

প্রকাশ | ১৯ মার্চ ২০২৩, ০০:০০

জোবায়েদ মলিস্নক বুলবুল ও সাজ্জাত লতিফ
মহান মুক্তিযুদ্ধের সূতিকাগার হিসেবে খ্যাত টাঙ্গাইল-৮ (সখীপুর-বাসাইল) আসন বরাবরই আওয়ামী লীগের শক্ত ঘাঁটি। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে টাঙ্গাইল জেলার রাজনীতিতে বড় ধরনের ইতিবাচক পরিবর্তনের হাওয়া বিরাজমান। বিশেষ করে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর-উত্তম প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করার পর জেলার আওয়ামী রাজনীতিতে পরিবর্তনের বাতাস বইতে শুরু করেছে। মহান মুক্তিযুদ্ধে আবদুল কাদের সিদ্দিকী সখীপুর উপজেলার দুর্গম পাহাড়ি বনাঞ্চলে মুক্তিযোদ্ধাদের অভয়ারণ্য গড়ে তুলেন। গঠন করেন দুর্ধর্ষ কাদেরিয়া বাহিনী। সখীপুরের মহানন্দপুর গ্রামে বাহিনীর সদর দপ্তর ছিল। সখীপুর থেকেই এই বাহিনী সমগ্র টাঙ্গাইল এবং যমুনা-ধলেশ্বরী নদী সংলগ্ন এলাকা এবং গাজীপুর, ময়মনসিংহ, জামালপুর, শেরপুর জেলায় গিয়ে পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযান চালাত। বহেড়াতৈল বাজারের পাশে কাদেরিয়া বাহিনীর মুক্তিযোদ্ধারা শপথ গ্রহণ করতেন। সেখানে একটি শপথ স্তম্ভ নির্মাণ করা হলেও পুরোপুরি সম্পন্ন করা হয়নি। মহান মুক্তিযুদ্ধের নয় মাসে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আশপাশে অপারেশন (তাদের ভাষায়) চালালেও সখীপুরের গহিন বনের একটি অংশ সব সময় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের দখলে ছিল। দুর্ধর্ষ এই বাহিনী মহান মুক্তিযুদ্ধের এক কিংবদন্তি। এজন্য নানা দিক থেকেই টাঙ্গাইলের রাজনীতিতে এ আসন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বঙ্গবীর আবদুল কাদের সিদ্দিকী তার কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটে একীভূত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। জেলার বিভিন্ন স্থানে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভা-সমাবেশে বঙ্গবীরের বক্তব্য সে ধারণাকে পাকাপোক্ত করছে। মহাজোটে একীভূত হলে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ একটি আসন পেলেও তা টাঙ্গাইল-৮। সে ক্ষেত্রে এ আসনে দলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বঙ্গবীর আবদুল কাদের সিদ্দিকী বীর-উত্তম বা তার মেয়ে ব্যারিস্টার কুঁড়ি সিদ্দিকী প্রার্থী হবেন। কুঁড়ি সিদ্দিকী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেন। বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর-উত্তম এ আসন থেকে ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের টিকিটে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর দলের নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে তার মতবিরোধ দেখা দেওয়ায় আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃৃত হয়ে ১৯৯৯ সালে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ নামে নতুন দল গঠন করেন। ২০০১ সালের নির্বাচনে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের ব্যানারে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। বড় কোনো রাজনৈতিক জোটের সঙ্গে গাঁটছড়া না বাঁধলে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি প্রার্থীর সঙ্গেই তাকে নির্বাচনে লড়তে হবে। সে ক্ষেত্রে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হতে পারেন আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি অনুপম শাহজাহান জয় ও বিএনপির অ্যাডভোকেট আহমেদ আযম খান। প্রধান দুই দলের এ দুই নেতার দলীয় মনোনয়ন নিশ্চিত না হলেও তারাই আলোচনার শীর্ষে রয়েছেন। তবে আগামী নির্বাচনে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর-উত্তম আওয়ামী লীগের সঙ্গে যাবেন, এমন গুঞ্জনে কিছুটা উদ্বেগে রয়েছেন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা। টাঙ্গাইল-৮ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট জোয়াহেরুল ইসলাম। তিনি ভিপি জোয়াহের হিসেবে সমধিক পরিচিত। তিনি টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের দ্বিতীয় মেয়াদের সাধারণ সম্পাদক। সজ্জন ও পরিচ্ছন্ন রাজনীতিক হিসেবে তার সুনাম রয়েছে। তবে এ বছরের জানুয়ারিতে সখীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন নিয়ে তিনি বিতর্কে পড়েন। স্থানীয় পর্যায়ে জনশ্রম্নতি রয়েছে- 'দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি প্রার্থী হবেন না' মর্মে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে প্রতিশ্রম্নতি দিয়ে ২০২২ সালের নভেম্বরে দলের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন। তারপরও তিনি এ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী। সুযোগ পেলেই তিনি এলাকায় যাচ্ছেন, মানুষের সুবিধা-অসুবিধার কথা শুনছেন। সভা-সমাবেশ ও সাংগঠনিক কর্মসূচিতে সরকারের উন্নয়নের বিশদ বর্ণনা দিচ্ছেন। উন্নয়নের এ ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে আগামী নির্বাচনে দলীয় প্রতীক নৌকাকে বিজয়ী করতে উদ্বুদ্ধ করছেন। বাসাইল-সখীপুরের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বেশির ভাগই আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী নির্বাচিত হওয়ার মূলে তার দক্ষ প্রার্থী বাছাইকেই প্রকৃত কারণ বলে মনে করেন স্থানীয় নেতৃবৃন্দ। টাঙ্গাইলে আওয়ামী লীগের রাজনীতির মাঠে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় তিনি অগ্রণী ভূমিকা রাখছেন। তার সমর্থকদের দাবি- নির্বাচনে উপজেলা থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ে একমাত্র তার নেতৃত্বেই ঐক্যবদ্ধ হয়ে নৌকার বিজয় ধরে রাখা সম্ভব। তাই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনিই দলীয় মনোনয়ন পাবেন। জানা যায়, ১৯৭৩ সালে প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী টাঙ্গাইল জেলার দেলদুয়ার উপজেলার সুবর্ণতলী গ্রামের অধ্যক্ষ হুমায়ুন খালিদ, ১৯৭৯ সালে দ্বিতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থী মুর্শেদ আলী খান পন্নী, ১৯৮৬ সালে তৃতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী কৃষিবিদ শওকত মোমেন শাহজাহান, ১৯৮৮ সালে চতুর্থ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির মুর্শেদ আলী খান পন্নী, ১৯৯১ সালে পঞ্চম এবং ১৯৯৬ সালের ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থী হুমায়ুন খান পন্নী, ১৯৯৬ সালে সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী বঙ্গবীর আবদুল কাদের সিদ্দিকী, ১৯৯৯ সালের উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী কৃষিবিদ শওকত মোমেন শাহজাহান, ২০০১ সালে অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিজের প্রতিষ্ঠিত কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ প্রার্থী বঙ্গবীর আবদুল কাদের সিদ্দিকী, ২০০৮ সালে নবম এবং ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী কৃষিবিদ শওকত মোমেন শাহজাহান নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে শওকত মোমেন শাহজাহান বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার কয়েক সপ্তাহ পরই তার মৃতু্য হয় এবং উপ-নির্বাচনে তারই ছেলে অনুপম শাহজাহান জয় বিজয়ী হন। ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী অ্যাডভোকেট জোয়াহেরুল ইসলাম (ভিপি জোয়াহের) নির্বাচিত হন। এ আসনের চারবারের এমপি কৃষিবিদ শওকত মোমেন শাহজাহানের মৃতু্যর পর উপ-নির্বাচনে তারই ছেলে অনুপম শাহজাহান জয় এমপি নির্বাচিত হয়ে সখীপুর-বাসাইলের ব্যাপক উন্নয়ন করেন। তিনি বয়সে তরুণ ও রাজনীতিতে নবীন হলেও দল ও সরকার বিতর্কিত হয় এমন কর্মকান্ড থেকে নিজেকে মুক্ত রাখেন। তরুণ সমাজসেবক হিসেবে তিনি জনগণের আত্মার মানুষ হিসেবে পরিগণিত। সখীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অনুপম শাহজাহান জয় এলাকার সন্তান হিসেবে নিয়মিত প্রতিটি এলাকায় আসা-যাওয়া করছেন। বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। তিনি বিভিন্ন সভা-সমাবেশে গিয়ে সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ডের কথা তুলে ধরছেন। এ আসনে সখীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পরপর দুইবারের উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ শওকত শিকদার দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী। এর আগেও দলের কাছে তিনি মনোনয়ন চেয়েছেন। মনোনয়ন পেতে তিনি দুই উপজেলাকে সমানভাবে গুরুত্ব দিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন। আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন পেতে শতভাগ আশাবাদী তিনি ও তার অনুসারী দলীয় নেতাকর্মীরা। ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের ভাইস চেয়ারম্যান প্রকৌশলী আতাউল মাহমুদও এ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী। তিনি এর আগেও মনোনয়ন চেয়েছিলেন। তিনি 'নতুন সখীপুর-বাসাইল' গড়ার প্রত্যয় নিয়ে দলীয় মনোনয়নের আশায় গণসংযোগ করছেন। তিনি একজন পরিচ্ছন্ন ও মেধাবী রাজনীতিক। স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে এ রকম মেধাবী রাজনীতিককেই দল মনোনয়ন দেবে বলে তার অনুসারীদের দাবি। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য অধ্যক্ষ সাঈদ আজাদ এ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী। সখীপুর-বাসাইলের তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে তার নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। দলীয় মনোনয়নের আশায় দীর্ঘদিন ধরে তিনি মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। জনপ্রিয়তা যাচাই করে মনোনয়ন দিলে তিনিই আওয়ামী লীগের যোগ্য প্রার্থী হবেন বলে মনে করেন তার কর্মী ও সমর্থকরা। এছাড়া আরও ২-৩ জন রাজনীতিক আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চাইতে পারেন। তবে তারা এখনও এলাকায় গণসংযোগ বা দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন না- এলাকায় আসছেন না। এদিকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা বেশ আগে থেকে দুই উপজেলার আনাচে-কানাচে সভা-সেমিনার ও গণসংযোগে ব্যস্ত থাকলেও গত বছরের শেষ দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর-উত্তমের দেখা করার পর তাদের মধ্যে উদ্বেগ ও শঙ্কা বিরাজ করছে। কাদের সিদ্দিকী কি আওয়ামী লীগে ফিরে যাচ্ছেন, নাকি মহাজোটে যোগ দিচ্ছেন- এমন প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে স্থানীয় আওয়ামী লীগের ঘরে-বাইরে। এ নিয়ে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মধ্যে আলোচনা-সমালোচনার শেষ নেই। এ বিষয়ে স্থানীয় কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের নেতাকর্মীরা জানান, তাদের নেতা বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর-উত্তম সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্তই নেবেন। তারা সেই সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন। তবে এ আসনে নিজ দল থেকে এককভাবে নির্বাচন করারও পূর্ণ প্রস্তুতি তাদের রয়েছে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতাকর্মীরাও কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন। তারা জানান, বর্তমান ও সাবেক সংসদ সদস্যসহ তাদের বেশ কয়েকজন জনপ্রিয় প্রার্থী মাঠে রয়েছেন। দল যাকেই মনোনয়ন দেবে এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে তারা ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করবেন। সখীপুর-বাসাইল উপজেলায় অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে অনেকটা হতাশ স্থানীয় বিএনপি। সখীপুরে গত পৌর নির্বাচন ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন এবং স্থানীয় কমিটির পদ-পদবি নিয়ে ঘরোয়া কোন্দলে বিএনপির অবস্থা জীর্ণশীর্ণ। নানা কারণে দলের তৃণমূলের নেতাকর্মীদের একটি বড় অংশ বিএনপির রাজনীতি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমেদ আযম খানের মনোনয়ন প্রায় নিশ্চিত বলে মনে করছেন তার কর্মী-সমর্থকরা। জেলা বিএনপির কমিটি গঠনে প্রথমে কিছুটা বিভ্রান্তিতে পড়লেও পরে দায়িত্বশীলতার সঙ্গে নির্বাচনের মাধ্যমে নেতা নির্বাচন করায় তিনি প্রশংসিত হয়েছেন। তিনি প্রচারণায় সরব। ইতোমধ্যেই এলাকাবাসীর সঙ্গে নিয়মিত কুশল বিনিময় করে ব্যস্ত সময় পার করছেন। আযম খান ছাড়াও জেলা বিএনপির প্রতিষ্ঠাকালীন শিল্প বিষয়ক সম্পাদক ও সখীপুর উপজেলা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শেখ মোহাম্মদ হাবিব দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী। স্থানীয় পর্যায়ের রাজনীতিতে তিনি বিএনপি নেতাকর্মীদের প্রিয়মুখ। জনগণের নানা সমস্যায় তিনি আন্তরিকতার সঙ্গে অংশ নেন- সমাধানের চেষ্টা করেন। এ অবস্থানের কারণে তিনি জনগণের দোরগোড়ায় একটা জায়গা করে নিয়েছেন। তাকে মনোনয়ন দিলে তৃণমূলের ভোটে অতি সহজেই নির্বাচিত হয়ে এ আসনটি রক্ষা হতে পারে বলে তার কর্মী-সমর্থকরা মনে করেন। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক ও কেন্দ্রীয় কৃষক দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক কৃষিবিদ শেখ মোহাম্মদ শফি শাওন ব্যানার, পোস্টার ও ফেস্টুন দিয়ে এলাকায় ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেছেন। কেন্দ্রেও তার জোর লবিং চলছে। সখীপুরের সন্তান হওয়ায় তিনি মনোনয়ন পেতে পারেন বলে তার অনুসারীরা মনে করেন। বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ওবায়দুল হক নাসিরও এ আসন থেকে দলীয় মনোনয়ন চাইতে পারেন বলে শোনা যাচ্ছে। বিএনপির তৃণমূলের নেতাকর্মীদের দাবি, সখীপুর-বাসাইলে বিএনপির নিজস্ব ভোট ব্যাংক রয়েছে। অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু ভোট হলে এবং অভ্যন্তরীণ কোন্দল ভুলে দুই উপজেলায় সম্মিলিতভাবে দলীয় প্রার্থীর জন্য কাজ করলে অবশ্যই বিএনপি প্রার্থী বিজয়ী হবেন। জাতীয় পার্টির (এরশাদ) কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা কাজী আশরাফ সিদ্দিকী নিজ দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন। তবে সাধারণ মানুষ ও স্থানীয় নির্বাচন বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এ আসনে তিন দলের অংশগ্রহণে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হলে কারো জন্যই নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়া সহজ হবে না। তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেই নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে হবে। সখীপুর ও বাসাইল উপজেলা নিয়ে মহান জাতীয় সংসদের ১৩৭ টাঙ্গাইল-৮ আসন গঠিত। এ আসনের মোট ভোটার দুই লাখ ৮৮ হাজার ১৭২ জন। সখীপুর উপজেলার একটি পৌর সভা ও ৮টি ইউনিয়নে ভোটার সংখ্যা এক লাখ ৭৬ হাজার ২৭৫ জন। পুরুষ ভোটার ৮০ হাজার ৩২১ জন ও নারী ভোটার ৯৫ হাজার ৯৫৪ জন। বাসাইল উপজেলার একটি পৌর সভা ও ৬টি ইউনিয়নের মোট ভোটার এক লাখ ১১ হাজার ৮৯৭ জন। এর মধ্যে ৫১ হাজার ৬৫৭ জন পুরুষ ও ৬০ হাজার ২৪০ জন নারী ভোটার রয়েছে। আগামীকাল :ভোলা-১ আসনের বিস্তারিত