ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪

আনিসুল হকের ইমেজই নির্বাচনে বড় ফ্যাক্টর

প্রকাশ | ২৮ মার্চ ২০২৩, ০০:০০

মো. বাহারুল ইসলাম মোলস্না
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা ও আখাউড়া উপজেলা নিয়ে গঠিত ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ সংসদীয় আসন। এই আসনটি ভারতীয় সীমান্ত ঘেঁষা। এই আসনে সাংগঠনিকভাবে আওয়ামী লীগ শক্তিশালী হলেও বিএনপির রয়েছে নীরব ভোটার। কসবা উপজেলায় রয়েছে আওয়ামী লীগের অপ্রকাশ্যে দ্বন্দ্ব। তবে বর্তমান সংসদ সদস্য ও আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হকের ক্লিন ইমেজ দলকে অনেকটা এগিয়ে রাখবে। দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পান বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি অ্যাডভোকেট আনিসুল হক। পরে তিনি আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী হিসেবে মন্ত্রিসভায় স্থান পান। এই সংসদীয় আসনে রয়েছে ২টি উপজেলা, ২টি পৌরসভা এবং ১৫টি ইউনিয়ন। মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৩৮ হাজার ৪৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৭৭ হাজার ১৮১ জন। এর মধ্যে কসবা উপজেলায় রয়েছে ২ লাখ ২৪ হাজার ৭০১ জন। কসবা পৌর এলাকায় ২৯ হাজার ৪৮০ জন, আখাউড়া উপজেলার মোট ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ১৩ হাজার ৩৪৩ জন। আখাউড়া পৌর এলাকায় মোট ভোটার ২৮ হাজার ৯০৫ জন। এর আগে, নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা, সাবেক সচিব ও সাবেক সংসদ সদস্য মুশফিকুর রহমানকে হারিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও কসবা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মোহাম্মদ শাহ আলম দলীয় মনোনয়ন পাননি। এই আসন থেকে মনোনয়ন পান বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার রাষ্ট্র পক্ষের কৌঁসুলি অ্যাডভোকেট আনিসুল হক। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আনিসুল হক দলীয় মনোনয়ন পেয়ে জয়লাভ করেন। টানা দুইবার বিজয়ী হয়ে তিনি তার সংসদীয় আসনে ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকান্ড বাস্তবায়ন করেছেন। এছাড়াও তিনি গত ১০ বছরে তার সংসদীয় এলাকার প্রায় সাড়ে তিন হাজার বেকারকে সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি দেন। এলাকায় আইনমন্ত্রীর রয়েছে ক্লিন ইমেজ। দলীয় নেতাকর্মীদের কাছে তিনি খুবই জনপ্রিয়। ইতোমধ্যে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দলকেও সুসংগঠিত করেছেন। সম্মেলনের মাধ্যমে আখাউড়া উপজেলা, আখাউড়া পৌর কমিটি, কসবা উপজেলা ও কসবা পৌর আওয়ামী লীগের কমিটি গঠন করা হয়েছে। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক নিজেই কসবা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হয়েছেন। আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অ্যাডভোকেট আনিসুল হক আবারও দলীয় মনোনয়ন চাইবেন। তবে এই আসনে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সাবেক উপ-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ও কসবা উপজেলার সৈয়দাবাদ সরকারি আদর্শ কলেজের সাবেক জিএস শ্যামল কুমার রায়, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপ-কমিটির সাবেক সদস্য ও বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সমিতির সাধারণ সম্পাদক নারায়ণ সাহা মনি আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন চাইবেন বলে জানিয়েছেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক সংসদ সদস্য মুশফিকুর রহমান, কেন্দ্রীয় কৃষকদল নেতা ও জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি নাছির উদ্দিন হাজারী, আখাউড়া উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মুসলেহ উদ্দিন, তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠজন ভূঁইয়া ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান কবীর আহমেদ ভূঁইয়া, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মামুনুর রশীদ মোহন মনোনয়ন চাইবেন বলে এলাকায় আলোচনা আছে। জাতীয় পার্টি থেকে মনোনয়ন চাইবেন ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক ডেপুটি মেয়র, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা জাতীয় পার্টির সাবেক সভাপতি জাহাঙ্গীর মোহাম্মদ আদেলের ছেলে, কসবা উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি তারেক এ. আদেল। জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) থেকে কসবা উপজেলা জাতীয় পার্টির সাবেক সভাপতি আলহাজ সেলিম মাস্টার মনোনয়ন চাইবেন বলে আলোচনা আছে। এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী শ্যামল কুমার রায় বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি মনোনয়ন চাইবেন। দল মনোনয়ন দিলে তিনি নির্বাচন করবেন। তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনে এই আসনে আওয়ামী লীগ জিতবে ইনশা আলস্নাহ। এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী নারায়ণ সাহা মনি বলেন, তিনি দলের কাছে মনোনয়ন চাইবেন। দল মনোনয়ন দিলে অবশ্যই তিনি নির্বাচন করবেন। এ ব্যাপারে বিএনপি থেকে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী কেন্দ্রীয় কৃষকদল নেতা ও জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি নাছির উদ্দিন হাজারী বলেন, আমরা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করছি। শেষ পর্যন্ত দল যদি নির্বাচনে যায় তাহলে আমি দলের কাছে মনোনয়ন চাইব। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে এই আসনে বিএনপির প্রার্থী জিতবে ইনশা আলস্নাহ। আগামীকাল :ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ আসনের বিস্তারিত