বাসের জন্য আলাদা উড়াল সড়ক হচ্ছে

প্রকাশ | ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০০:০০ | আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০০:০৭

যাযাদি রিপোটর্
রাজধানীর মহাখালীর মোড়ে ফ্লাইওভার থাকা সত্তে¡ও যানজটে ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা Ñফাইল ছবি

ট্রাফিক সপ্তাহ, ট্রাফিক শৃঙ্খলা পক্ষ ও বিশেষ অভিযানÑ কোনোটাই যেন কাজে আসছে না। ফেরানো যাচ্ছে না রাজধানীর যানবাহনের শৃঙ্খলা। ব্যক্তিগত গাড়ির আধিক্যে গণপরিবহনে চলাচল যেন দায় সাধারণ মানুষের। জনসাধারণের একটু স্বাভাবিক চলাচল নিশ্চিত করতে এবার রাজধানীতে নিমির্ত হচ্ছে আলাদা একটি উড়াল সড়ক। সম্ভাব্য হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে এ উড়াল সড়কে আটির্কুলেটেড (দুই বগি জোড়া লাগানো) বাস চলাচল করবে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রাজধানীর গুরুত্বপূণর্ সড়কের মধ্যে প্রধান হচ্ছে মহাখালী-বিমানবন্দর সড়ক। এ রুটে যানজট কিংবা সিগন্যালে দীঘর্ক্ষণ পড়ে থাকা যেন নিত্যসঙ্গী। ফলে বিড়ম্বনায় পড়তে হয় এ সড়কে চলাচলকারী লাখও যাত্রীকে। বিশেষ করে বিদেশ ফেরত প্রবাসী কিংবা বিদেশিরাও বিমানবন্দর থেকে এ সড়কে নেমে যানজটের ভোগান্তিতে পড়েন। এ ভোগান্তি দূর করতে রাজধানীর মহাখালী বাস টামির্নাল থেকে বিমানবন্দর পযর্ন্ত উড়াল সড়ক নিমাের্ণর উদ্যোগ নিয়েছে সড়ক ও জনপথ অধিদফতর (সওজ)। ১০ কিলোমিটার দীঘর্ এ সড়কে পৃথক বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) নিমির্ত হবে। মহাখালী বাস টামির্নাল থেকে আলাদা লেন হয়ে এটি মিলবে মূল উড়াল সড়কের সঙ্গে। বতর্মানে যে ফ্লাইওভার আছে সেটিও থাকবে। এর পূবর্পাশ দিয়ে নতুন ফ্লাইওভারটি নিমির্ত হবে। ‘ঢাকা পাবলিক ট্রান্সপোটর্ ইমপ্রæভমেন্ট’ প্রকল্পের আওতায় এ উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে নকশা চ‚ড়ান্ত এবং মূল প্রকল্পের ব্যয় নিধার্রণে বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় সম্ভাব্যতা যাচাই কাজও শুরু হয়েছে। চলতি বছরের ডিসেম্বরে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের (ফিজিবিলিটি স্টাডি) কাজ শেষ হবে। এ জন্য কনসালটেন্সি ব্যয় নিধার্রণ হয়েছে ৩৯ কোটি টাকা। এরপরই হাতে নেয়া হবে মূল প্রকল্পের কাজ। হাজার কোটি টাকা খরচের ইস্টিমেট (প্রাক্কলন) ধরা হয়েছে। এটি কম বা বেশিও হতে পারে। সওজ সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পের আওতায় সড়কের উভয় পাশে দুই লেনের ডেডিকেটেড বিআরটি লেন নিমির্ত হবে। এ লেন দিয়ে শুধু আটির্কুলেটেড (দুই বগির জোড়া লাগানো) বাস চলবে। দুটি কোচ জোড়া দিয়ে বানানো এ বাসের দৈঘর্্য হবে ১৮ মিটার। সাধারণ বাসের চেয়ে এর যাত্রীধারণ ক্ষমতা হবে দ্বিগুণ। প্রায় দেড়শ’ যাত্রী একটি বাসে চলাচল করতে পারবেন। সংশ্লিষ্টরা জানান, স্মাটর্কাডর্ ও ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে ভাড়া নিয়ন্ত্রণ করা হবে এ বাসে। ডেডিকেটেড রুটে থাকবে সাতটি স্টপেজ। বাসগুলো কয়েকটি নিদির্ষ্ট কোম্পানির মাধ্যমে পরিচালিত হবে। এ রুটে তিন মিনিট পরপর বাস পাওয়া যাবে। থাকবে ইলেকট্রনিক ভাড়া নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থাও। ‘ঢাকা পাবলিক ট্রান্সপোটর্ ইমপ্রæভমেন্ট’ নামের নতুন এ প্রকল্পের পরিচালক সানাউল হক বলেন, ‘প্রকল্পটি এখনও প্রাথমিক পযাের্য়। তবে গত বৃহস্পতিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে এ নিয়ে বৈঠক হয়েছে। সেখানে প্রকল্পের সব প্লান জমা দেয়া হয়েছে। প্রকল্পের অনুমোদন মিললে তখন আমরা কনসালটেন্ট (পরামশর্কারী) নিয়োগ দেব। তিনি আরো বলেন, ‘প্রকল্পের পরিকল্পনা অনুযায়ী বলা যায়, মহাখালী ফ্লাইওভারকে কোনো ডিস্টাবর্ না করেই নতুন উড়াল সড়কটি হবে। নতুন ফ্লাইওভার বনানী সেতু ভবন থেকে শুরু হয়ে নামবে মহাখালী বাস টামির্নালে। মূলত বাস চলাচলের লেনের জন্যই এমন উদ্যোগ নেয়া।’ সানাউল হক বলেন, ‘নানা কারণে বিমানবন্দর থেকে মহাখালী পযর্ন্ত বিআরটি রুট করা হবে। পৃথক রুটে আধুনিক আটির্কুলেটেড বাস চলবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা গেলে যানজটও কমে আসবে। ২০২৪ সালের মধ্যে প্রকল্প বাস্তবায়নের সম্ভাব্য সময় ধরা হয়েছে।’ ‘এখনও জমির অধিগ্রহণ শুরু হয়নি। কারণ প্রকল্পটি প্রাথমিক পযাের্য় রয়েছে। প্রকল্পটি পাস হওয়ার পর বনানী সেতু ভবন থেকে মহাখালী বাস টামির্নাল পযর্ন্ত জমি অধিগ্রহণ করা হবে’Ñ যোগ করেন তিনি।