নিজের ফঁাসি চাইলেন আ’লীগ নেত্রী

প্রকাশ | ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
নাজনীন আলম
জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত আসনে মনোনয়ন না পেয়ে ক্ষোভ, হতাশা, কষ্ট নিয়ে ময়মনসিংহের এক আওয়ামী লীগ নেত্রী ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন ‘আমার ফঁাসি চাই’। এমন ফেসবুক স্ট্যাটাস দিয়ে আলোচনার ঝড় তোলা নেত্রী হলেন ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের কাযির্নবার্হী কমিটির সদস্য নাজনীন আলম। উপনিবার্চন, একাদশ জাতীয় সংসদ নিবার্চনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়ে বঞ্চিত হন তিনি। পরবতীের্ত সংরক্ষিত আসনে এমপির মনোনয়নপত্র জমা দেন। এবারও ভাগ্য সুপ্রসন্ন হয়নি। আওয়ামী লীগের সংরক্ষিত আসনে মনোনীত ৪৩ জনের তালিকায়ও নেই তিনি। এ প্রসঙ্গে নাজনীন আলমের সঙ্গে সেলফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার স্বামী ফেরদৌস আলম ফোন রিসিভ করে বলেন, নাজনীন আলম হাসপাতালে গেছেন। মনোনয়নবঞ্চিত হওয়ায় হাজারো নেতাকমীর্-সমথর্কদের বারবার আশাহতের বিষয়টি তুলে ধরে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। ‘আমার ফঁাসি চাই’ মমের্ ফেসবুক মন্তব্য তাদেরই উল্লেখ করে নাজনীনের স্বামী আরও বলেন, ‘আপনারা জানেন আমার স্ত্রী ও আমি বঙ্গবন্ধুর আদশের্র মানুষ। সাধারণ মানুষের সুখেদুঃখে মিশে আছি। দলের জন্য জীবনের যা অজর্ন ছিল সব দিয়ে দিয়েছি। এরপরও আমরা কী পেলাম?’ বারবার মনোনয়ন না পাওয়ায় নাজনীন শনিবার রাত ৭টা ১১মিনিটের দিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লিখেন ‘আমার ফঁাসি চাই’। ফঁাসির কারণ হিসেবে ভুল ও অপরাধের বণর্নাও দেন তিনি। নাজনীন আলমের ফেসবুকের মন্তব্য পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো। ‘আমার ফঁাসি চাই..!! ১) কেন হাই কমান্ডের আশ্বাসকে সরল মনে বিশ্বাস করেছিলাম! ২) এলাকাবাসী ও দলীয় নেতাকমীের্দর পাশে থাকার প্রয়োজন কেন অনুভব করেছিলাম! ৩) এমপি/সিনিয়র কোনো নেতার পরিবারের সদস্য কেন আমি হলাম না! ৪) কেন দলের নাম ভাঙিয়ে একটি পয়সা রোজগারের ধান্ধা করিনি! ৫) কেন দলের জন্য কাজ করতে গিয়ে দিনে দিনে নিঃস্ব হতে গেলাম! ৬) কেন জনসমথর্ন অজের্নর চেষ্টা করেছিলাম! ৭) কেন তদ্বির/তেলবাজি ঠিকমতো করতে পারলাম না! ৮) কেন সমথর্কদের বার বার কঁাদাচ্ছি!! -সম্ভবত: এ সবই আমার ভুল/অপরাধ...! এজন্য আমার শাস্তি হওয়া উচিত। ১০ম জাতীয় সংসদ নিবার্চনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন ব্যাংক কমর্কতার্ ফেরদৌস আলম। সে নিবার্চনে তিনি মনোনয়নবঞ্চিত হন। সে নিবার্চনে দলীয় মনোনয়ন পান সাবেক স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী মুক্তিযোদ্ধা ডা. ক্যাপ্টেন (অব.) মজিবুর রহমান ফকির। স্বামী মনোনয়নবঞ্চিত হওয়ায় বিদ্রোহী প্রাথীর্ হন তার স্ত্রী নাজনীন আলম। তিনি ছিলেন বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সম্পাদক। সেই থেকে রাজনীতিতে সক্রিয় হন নাজনীন আলম। ছুটে চলেন তৃণমূল মানুষের দ্বারপ্রান্তে। সেই নিবার্চনে নাজনীন আলমের হরিণ মাকার্ পরাজিত হলেও নিযার্তন-নিপীড়নেও মাঠ ছাড়েননি। ‘হরিণ’ আখ্যায় নাজনীন সমথর্কদের অনেকেই হামলা-মামলার শিকার হন। জেলও খাটতে হয়েছে অনেককে। তঁাতী লীগ, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনসহ নানা সংগঠনের ব্যানারে রাজনীতির মাঠে সেই সময় থেকে সরব ছিলেন নাজনীন আলম। সমথর্ক ও দলীয় অসচ্ছল, ত্যাগী নেতাকমীের্দর দুঃসময়ে পাশেও দঁাড়ান তিনি। ক্যাপ্টেন (অব.) মজিবুর রহমান ফকির প্রয়াত হওয়ার পর উপনিবার্চনেও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ‘নৌকা’ প্রতীকের মনোনয়ন চান। সেবারও মনোনয়নবঞ্চিত হয়ে স্বতন্ত্র নিবার্চনের জন্য মনোনয়নপত্র দাখিল করেন তিনি। কিন্তু দলীয় নেতাকমীর্ ও হাইকমান্ডের চাপের মুখে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তিনি।