সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল
ভয়াবহ পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নেমেছে সরকার
প্রকাশ | ০১ জুন ২০২৩, ০০:০০
যাযাদি রিপোর্ট
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আন্দোলনকে বন্ধ করতে সরকার ভয়াবহ পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নেমেছে সরকার। প্রায় সাড়ে ১৩শ' মামলা চিহ্নিত করেছে তারা। আগামী নির্বাচনের আগে কীভাবে এই মামলাগুলো দ্রম্নত শেষ করে বিএনপি নেতাদের সাজা দিয়ে কারাগারে পাঠানো যায় সেই অপকৌশল নিয়েছে। যাতে নির্বাচনে প্রতিপক্ষ ছাড়া খালি মাঠে গোল দিতে পারে।
বুধবার নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সরকার ক্ষমতা টিকে থাকার জন্য রাষ্ট্রযন্ত্রকে বেআইনিভাবে ব্যবহার করছে অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, সরকার রাষ্ট্রের সব গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে আছে। যে মামলা হাইকোর্ট খারিজ করে দিয়েছে পুনরায় শুনানি করে সে মামলায় রাজনৈতিক নেতাদের সাজা দেওয়া হচ্ছে। মৃতু্য ঘনিয়ে আসার আগে যখন কোনো আশা থাকে না তখন কোনো কিছু আঁকড়ে ধরে রাখার চেষ্টার অংশ হিসেবে সরকার হামলা করছে, মামলা দিচ্ছে। পরিকল্পনা হচ্ছে, রাজনীতিকে একেবারে তিরোহিত করা, বিরাজনীতিকরণ করা, রাজনীতিবিদদের রাজনীতির মাঠ থেকে দূরে সরিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে যদি আবার এককভাবে পার হওয়া যায়।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, একইভাবে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও তার স্ত্রী জোবায়দা রহমানের ২০০৭ সালের মামলাগুলো অতি দ্রম্নত চালু করা হয়েছে। আত্মপক্ষের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না। প্রতিদিন সাক্ষী হাজির করা হচ্ছে। এ নিয়ে কোর্টে বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা কথা বলতে চাইলে তাদের ওপর সরকারি দলের আইনজীবীরা হামলা করে এবং পুলিশ দিয়ে নির্যাতন চালায়। প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে সরকার এমন নোংরা ষড়যন্ত্র করছে।
তিনি বলেন, একই ধরনের মামলায় আওয়ামী লীগ নেতা মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়াকে খালাস দেওয়া হয়েছে, অথচ ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও তার স্ত্রীকে সাজা দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, সম্প্রতি সারা দেশে গ্রেপ্তার হয়েছে সাত শতাধিক। গত ১২ দিনে নতুন মামলা হয়েছে ১৫২টি। আসামি সাড়ে পাঁচ হাজার। ভয় ত্রাস সৃষ্টি করে একই কায়দায় নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে চায় আওয়ামী লীগ। কিন্তু মানুষ এবার তা সফল হতে দেবে না।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই দানবীয় সরকারকে সরানো যে আন্দোলন শুরু হয়েছে তা হামলা মামলা দিয়ে দমানো যাবে না। এরা বিএনপির ঘোষিত কর্মসূচিতে আগ বাড়িয়ে সমস্যা সৃষ্টি করে উল্টো বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দিচ্ছে। কেরানীগঞ্জ ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নিপুণ রায়কে মেরে আহত করা হলো, অথচ তাকেই মামলার ১ নম্বর আসামি করা হয়েছে।
দলের আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, রাজনীতির কারণে আইন মন্ত্রণালয়ের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধায়নে সংশ্লিষ্ট আদালত তারেক রহমান ও জোবায়দা রহমানের মামলা তাড়াতাড়ি নিষ্পত্তি করার জন্য দিনে তিন-চারজনের সাক্ষী নিচ্ছেন। রাতেও এই মামলার সাক্ষী চলছে। বিচারের নামে আজকে প্রহসন চলছে, বিচারের নামে আজকে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা ও তাদের বিরুদ্ধে রায় দেওয়া হচ্ছে।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, বরকত উলস্নাহ বুলু, আব্দুল আউয়াল মিন্টু, নিতাই রায় চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক প্রমুখ।