ফজিলা বেগমের পাশে দঁাড়ালেন যশোরের জেলা প্রশাসক

প্রকাশ | ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

যশোর প্রতিনিধি
ফজিলা বেগম
‘নিখেঁাজ স্বামীর ডেথ সাটিির্ফকেট কোথায় পাবেন ফজিলা?’ অসহায় ফজিলাকে নিয়ে যায়যায়দিনসহ কয়েকটি গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর অসহায় নারী ফজিলা বেগমের পাশে দঁাড়িয়েছেন যশোরের জেলা প্রশাসক আবদুল আওয়াল। সোমবার দুপুরে তিনি তার দপ্তরে ফজিলা বেগমকে ডেকে নিয়ে তার কষ্টের কথা শোনেন। এ সময় ফজিলা বেগম তার স্বামী নিখেঁাজ হয়ে যাওয়ার পর গত এক যুগের কষ্টের কথা জেলা প্রশাসককে জানান। ফজিলা বেগম বলেন, তার স্বামী একযুগ ধরে নিখেঁাজ। অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য হিসেবে তার স্বামী আব্দুল হানিফ মোল্লার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পেনশনের টাকা জমা হচ্ছে এবং সঞ্চিত রয়েছে। কিন্তু স্বামীর কোনো সন্ধান বা ‘মৃত্যুসনদ’ না থাকায় নমিনি হিসেবে এই টাকা তিনি তুলতে পারছেন না। এ টাকা তুলতে পারলে তার অভাব অনটন দূর হবে। তিনি সন্তানদের নিয়ে ভালোভাবে বঁাচতে পারবেন। জেলা প্রশাসক আব্দুল আওয়াল তাকে সান্ত¦না দিয়ে বলেন, তিনিসহ প্রশাসন তার পাশে আছে। আব্দুল হানিফ নিখেঁাজের পর ঢাকার কাফরুল থানায় যে জিডি হয়েছিল, তার ফলোআপ আছে কিনা সেটি খেঁাজ নেয়া হবে। আব্দুল হানিফের গ্রামের বাড়ির ঠিকানায় তার সন্ধানের কোনো সূত্র আছে কিনা সেটিও খঁুজে দেখা হবে। সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে এবং তার সবের্শষ কমর্স্থলে যোগাযোগ করে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা হবে। এসবের ভিত্তিতে ফজিলা বেগম যেন নমিনি হিসেবে দ্রæত স্বামীর পেনশনের টাকা পেতে পারেন, সে ব্যাপারে তিনি পদক্ষেপ নেবেন। এ সময় জেলা প্রশাসক ফজিলা বেগমের বতর্মান অবস্থার খেঁাজখবর নেন। তার ছোট মেয়ে উচ্চ মাধ্যমিকের ছাত্রী সাঈদা হুমায়রা খুশি’র লেখাপড়া যাতে অব্যাহত থাকে এজন্য পঁাচ হাজার টাকার চেক প্রদান করেন। অথার্ভাবে ফজিলা বেগমের ছোট ছেলে আবু নাঈমের লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যাওয়া জেলা প্রশাসক দুঃখপ্রকাশ করেন। বতর্মানে একটি বেকারি প্রতিষ্ঠানে কমর্রত নাঈমকে ভালভাবে কাজ শিখতে বলেন এবং ভবিষ্যতেও তাদের পাশে থাকার আশ্বাস দেন। প্রসঙ্গত, যশোর শহরের রায়পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকার একটি ভাড়া বাড়িতে বসবাস করছেন ফজিলা। তার স্বামী আব্দুল হানিফ মোল্লা বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার পঞ্চকরণ গ্রামের মৃত কাদের মোল্লার ছেলে। সেনাবাহিনীর ল্যান্সনায়েক পদ থেকে অবসর গ্রহণের পর তিনি ঢাকায় ট্যাক্সিক্যাব চালাতেন। ২০০৭ সালের ১৬ ফেব্রæয়ারি তিনি ঢাকায় ট্যাক্সিক্যাব নিয়ে নিখেঁাজ হন। এরপর তার আর কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। একমাত্র উপাজর্নক্ষম ব্যক্তি হারিয়ে যাওয়ায় ফজিলা বেগম সন্তানদের নিয়ে অকুলপাথারে পড়েন। অথচ তার স্বামীর পেনশনের একাউন্টে রয়েছে লাখ লাখ টাকা। এ সংক্রান্ত একটি সংবাদ সোমবার যায়যায়দিন’র প্রথম পাতায় প্রকাশিত হয়। এছাড়া কয়েকটি গণমাধ্যমে খবরটি প্রকাশিত হয়। এরপর জেলা প্রশাসক আবদুল আওয়াল তাদের খেঁাজ-খবর নেন।