ধষর্ণ মামলায় সাটুরিয়ার সেই দুই পুলিশ কমর্কতার্ রিমান্ডে

প্রকাশ | ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

সাটুরিয়া সংবাদদাতা
ধষর্ণ মামলায় গ্রেপ্তার দুই পুলিশ সদস্য
মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া থানার দুই পুলিশ কমর্কতার্র বিরুদ্ধে এক তরুণীকে দুদিন আটকে রেখে ধষের্ণর অভিযোগে দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার দুই এএসআইকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ছয় দিনের রিমান্ডে পেয়েছে পুলিশ। বাদীপক্ষের আইনজীবী নজরুল ইসলাম বাদশা জানান, মানিকগঞ্জের বিচারিক হাকিম গোলাম সারোয়ার শুনানি শেষে মঙ্গলবার দুপুরে এই আদেশ দেন। পুলিশ ১০ দিনের আবেদন করলেও বিচারক ছয় দিন মঞ্জুর করে আদেশ দেন। দুই আসামি হলেনÑ জেলার সাটুরিয়া থানার এসআই সেকেন্দার হোসেন এবং এএসআই মাজহারুল ইসলাম। সাটুরিয়া থানার ওসি আমিনুল ইসলাম জানান, রোববার সকাল ৯টার দিকে তাদের গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়। এর আগে সোমবার তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেন পটুয়াখালীর মিজার্গঞ্জ উপজেলার এক তরুণী। তিনি বাবার সঙ্গে ঢাকার অদূরে আশুলিয়া এলাকায় থাকেন। মামলায় অভিযোগ করা হয়, ঢাকার আশুলিয়া থানায় কমর্রত থাকা অবস্থায় এসআই সেকেন্দার হোসেনের সঙ্গে আশুলিয়ার এক নারীর পরিচয় হয়। ওই নারীর প্রতিবেশী এই তরুণী। এই পরিচয়ের সূত্র ধরে পঁাচ-ছয় বছর আগে জমি ব্যবসার জন্য ওই নারী এএসআই সেকেন্দারকে এক লাখ টাকা দেন। পরে জমি বিক্রি করে তার অংশের লভ্যাংশসহ তিনি সেকেন্দারের কাছে তিন লাখ টাকা পাওনা হন। দীঘির্দনেও তার সব টাকা পরিশোধ করা হয়নি। এ কারণে ওই টাকার জন্য তিনি মাঝেমধ্যে সাটুরিয়া থানায় সেকেন্দারের কাছে যেতেন বলে মামলায় বলা হয়। তরুণী বলেন, গত বুধবার বিকালে তিনি পরিচিত ওই নারীর সঙ্গে সাটুরিয়া থানায় যান। থানায় যাওয়ার পর সেকেন্দার তাদের থানার পাশে জেলা পরিষদের সাটুরিয়া ডাকবাংলোয় নিয়ে যান। সেখানে একটি কক্ষে বসে পাওনা টাকার বিষয়ে কথাবাতার্ বলার সময় এএসআই মাজহারুল সেখানে উপস্থিত হন। এরপর ওই নারীকে অন্য কক্ষে নিয়ে আটকে রাখা হয়। ‘এর পর তাকে পাশের একটি কক্ষে নিয়ে গিয়ে ওই কমর্কতার্রা ইয়াবা সেবন করেন। এ সময় তাকেও ইয়াবা সেবনে বাধ্য করা হয়। ইয়াবা সেবনের পর তিনি অসুস্থবোধ করেন। এর পর থেকে শুক্রবার সকাল পযর্ন্ত ওই কক্ষে আটকে রেখে ওই দুই কমর্কতার্ তাকে কয়েক দফায় ধষর্ণ করেন।’ এসপি রিফাত রহমান সাংবাদিকদের বলেন, শনিবার রাতে মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে দুই পুলিশ সদস্যকে থানা থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়। এরপর রোববার ওই তরুণী তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। এসপি বলেন, লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর ঘটনা তদন্তে দুই সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিকে দ্রæত সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে নিদের্শ দেয়া হয়। ‘তদন্ত কমিটির সদস্যরা হলেনÑ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সাকের্ল) হাফিজুর রহমান এবং জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার (ডিএসবি) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হামিদুর রহমান সিদ্দিকী।’ হাফিজুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় প্রাথমিক তদন্ত করা হয়। তদন্তে ওই দুই পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। এদিকে সোমবার রাতেই ওই তরুণীর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কমর্কতার্ (আরএমও) লুৎফর রহমান। তিনি বলেন, তিনিসহ চার সদস্যবিশিষ্ট একটি চিকিৎসক দল ওই তরুণীর ডাক্তারি পরীক্ষা করেন। আগামী দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেয়া হবে।