বিশ্ব ইজতেমার প্রস্তুতি প্রায় শেষ

প্রকাশ | ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি রিপোটর্
মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধমীর্য় সমাবেশ ৪ দিনের বিশ্ব ইজতেমা শুরু হচ্ছে শুক্রবার থেকে টঙ্গীর তুরাগ তীরে। ইতোমধ্যে মাঠের কাজ প্রায় ৮০ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে। ১৫ ফেব্রæয়ারি শুক্রবার ফজরের নামাজের পর পরই আ’ম বয়ানের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হবে এবারের বিশ্ব ইজতেমা। প্রথম পবের্ আগামী ১৫ ফেব্রæয়ারি থেকে শুরু হয়ে ১৬ ফেব্রæয়ারি পযর্ন্ত অংশ নেবেন তাবলিগ জামাতের শীষর্ মুরুব্বী, কাকরাইল মসজিদের পেশ ইমাম যোবায়ের অনুসারী মুসল্লিরা। ১৬ ফেব্রæয়ারি দুপুরে কোন এক সময় ্আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে প্রথম পবের্র বিশ^ ইজতেমা এবং প্রথম পবের্ আগত মুসল্লিদের মোনাজাত শেষে ওইদিন রাতের মধ্যেই ময়দান ছেড়ে দিতে হবে। সা’দ আহমাদ কান্ধলভীপন্থি অনুসারী মুসল্লিরা আগামী ১৭ ফেব্রæয়ারি ফজর থেকে দ্বিতীয় পবের্র বিশ^ ইজতেমায় শরিক হবেন। ১৮ ফেব্রæয়ারি দুপুরে আখেরী মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে ২০১৯ সালের বিশ^ ইজতেমা। বিগত সময়ে প্রতি বছর মাঝখানে বিরতি দিয়ে ৩দিন করে দুই পবের্র বিশ^ ইজতেমা সম্পন্ন হলেও, এবারই একমাত্র দুই দিন করে বিরতিহীনভাবে দুই পবের্ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এবারের বিশ^ ইজতেমা। টঙ্গীর তুরাগ তীরে পুরো ইজতেমা ময়দান ঘুরে দেখা যায়, ইজতেমাকে সামনে রেখে পুরোদমে এগিয়ে যাচ্ছে সকল প্রস্তুতিমূলক কাজ। গাজীপুর সিটি কপোের্রশনের ভ্যাকু দিয়ে সমান করা হচ্ছে মাঠের বিভিন্ন অংশ ও রাস্তাঘাট। দীনি মুসল্লি ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে ইজতেমা ময়দানে কেউ কেউ বিশাল সামিয়ানা টানাচ্ছে, ঠেলাগাড়ীতে বঁাশ নিয়ে আসছে, মাটির কাজ, মাঠ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নসহ চলছে মাইক টানানোর কাজ। শত শত স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসায় পড়–য়া ছাত্র, আগত মুসল্লি ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ইজতেমায় আগত মুসল্লিদের খেদমতে ও আল্লাহকে রাজি খুশি করার জন্য মাঠে কাজ করে যাচ্ছেন। প্রতিদিন ঢাকা ও গাজীপুরসহ আশপাশের ধমর্প্রাণ মুসল্লিরা দল বেঁধে ইজতেমা ময়দানে এসে স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে বিশাল প্যান্ডেলের কাজ করছেন। ইতোমধ্যেই ইজতেমা ময়দানের সামিয়ানার কাজ অনেকাংশে এগিয়ে যাচ্ছে। জেলা ওয়ারী বিভিন্ন খিত্তায় মুসল্লিরা অবস্থান করবেন। এবারের বিশ্ব ইজতেমায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে মুসল্লির সমাগম ঘটবে বলে আশা করা হচ্ছে। মুসল্লিদের যাতায়াতসহ ময়দানে সুযোগ-সুবিধার লক্ষ্যে তুরাগ নদীতে সেনাবাহিনী ভাসমান সেতুর কাজ করছে। এখানে সবকিছুই হয়ে থাকে বিশ্ব তবলিগ জামায়াতের সবোর্চ্চ মজলিশে সূরার নিদের্শনা অনুযায়ী। ইজতেমার ময়দান জুড়ে বিদ্যুতের তার, গ্যাসের লাইন ও পানির পাইপ টানার কাজও চলছে একই সাথে। বিশ্ব ইজতেমা সফল ও সুন্দরভাবে সম্পন্ন এবং দ্বীনের মেহনত কায়েমের লক্ষ্যে মুসল্লিরা দলে দলে ভাগ হয়ে ইজতেমার মাঠে কাজ করছেন। এছাড়াও প্রতি বছরের ন্যায় স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষাথীর্সহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার ধমর্প্রাণ মুসলমানরা ইজতেমা মাঠে প্রস্ততিমূলক কাজ করছেন। ওজু গোসলের স্থান ও টয়লেট পরিষ্কার পরিচ্ছন্নসহ নানা কাজ করছে জেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর ও সিটি কপোের্রশন। এ পযর্ন্ত প্যান্ডেলের বেশিরভাগ কাজ হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইজতেমার আয়োজক কতৃর্পক্ষ। জেলাওয়ারি ভাগ করা হচ্ছে খিত্তা। বিদেশি মেহমানদের জন্য ময়দানের উত্তর পশ্চিম পাশে তৈরি করা হচ্ছে টিনসেডের আলাদা থাকার জায়গা। মাঠে গিয়ে দেখা যায় অধিকাংশ চটের ছাউনি এখনো বাকি রয়েছে। তবে বঁাশের খুঁটিপুঁতা হয়ে গেছে। মাঠের দক্ষিণ পূবর্ পাশে^র্ ট্রাক ভতির্ করে নতুন চটের বান্ডেল আসছে এবং মুসল্লিরা তা ট্রাক থেকে নামিয়ে মাঠে ছামিয়ানার জন্য কাজ করছেন। মাঠের পূবর্ পাশে বিভিন্ন মাদ্রাসার শিক্ষাথীর্রা বালু দিয়ে মাঠ ভরাটের কাজ করতে দেখা গেছে। বিদেশি মুসল্লিদের জন্য নিমার্ণ করা হয়েছে টিনের ঘর। বিদেশি মেহমানদের কামরার দক্ষিণ পূবর্ পাশে মূল মঞ্চের কাজ করা হচ্ছে। তুরাগ নদী পারাপারের সুবিদাথের্ সেনাবাহিনী অস্থায়ী সেতু নিমার্ণ করছেন। যাতে করে মুসল্লিরা এপার ওপার সেতুবন্ধন তৈরি করতে পারেন। গাজীপুরের জেলা প্রশাসক ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ুন কবীর বিশ্ব ইজতেমার মাঠ পরিদশর্ন শেষে সাংবাদিকদের জানান, মুসল্লিদের নিরাপত্তায় ৯ হাজার পুলিশ, দুই শতাধিক র‌্যাব, তিন শতাধিক আনসার ও তিন শতাধিক ফায়ার সাভির্সকমীর্ নিয়ে ১০ হাজারের বেশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী থাকবেন। বিভিন্ন গুরুত্বপূণর্ পয়েন্টে থাকবে শটর্সাকির্ট ক্যামেরা এবং পুলিশ ও র‌্যাবের পযের্বক্ষণ টাওয়ার। ইতোমধ্যে মাঠের চতুরদিকে পযের্বক্ষণ টাওয়ার তৈরি করা হয়েছে। অন্যান্য বছরের চেয়ে এবার নিরাপত্তা আরো বেশি জোরদার করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এবার যাতায়াতের সুবিদাথের্ বাংলাদেশ রেলওয়ে ১৩৮ টি ট্রেনের ব্যবস্থা করবে এবং বিআরটিসি ৩০০ বাস সাভির্স সেবা দিবে। মুসল্লিদের পয়ঃনিষ্কাশন এর জন্য ৮ হাজার পাকা টয়লেট ও এক হাজার অস্থায়ী টয়লেট এর ব্যবস্থা করা হয়েছে। ওজু গোসলের জন্যও সুব্যবস্থা করা হয়েছে। অন্যান্য বারের চেয়ে এবছর সিসি ক্যামেরাও বৃদ্ধি করা হয়েছে। আগামি ১৪ ফেব্রæয়ারির আগেই সকল প্রস্তুতি শেষ হবে।