বিএনপি অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে ভোটে এসেছিল

মিউনিখে গণসংবধর্নায় প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশ | ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার জামাির্নর মিউনিখে প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেয়া সংবধর্না অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন Ñফোকাস বাংলা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপি একেবারে শুরু থেকেই জাতীয় সংসদ নিবার্চনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য একটি অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে নিবার্চনে অংশগ্রহণ করেছিল। জামাির্নর মিউনিখে বৃহস্পতিবার রাতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেয়া সংবধর্না অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। শেখ হাসিনা বলেন, যদিও বিএনপি নিবার্চনে অংশ নিয়েছিল, কিন্তু তারা জানত, তাদের জনপ্রিয়তায় ধস নেমেছিল, নিবার্চনে জয়ের কোনো সম্ভাবনা নেই, তাই তারা সব সময় নিবার্চনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চেয়েছে। টানা তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর শেখ হাসিনা প্রথম বিদেশ সফরে জামাির্ন রয়েছেন। গত সাধারণ নিবার্চনে বিএনপির পরাজয়ের কারণ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি ২০০৮ সালের সাধারণ নিবার্চনে মাত্র ২৮টি আসনে জিতেছিল। সেই নিবার্চনের স্বীকৃতি সম্পকের্ কেউ প্রশ্ন তোলেনি। শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৮ সালের চেয়েও ভালো ফলাফলের আশা তারা (বিএনপি) কীভাবে করে? গত কয়েক বছরে ২০১৩, ২০১৪ এবং ২০১৫ সালে বিএনপি রাজনৈতিক আন্দোলনের নামে সারাদেশজুড়ে যেসব সন্ত্রাসী তাÐব চালিয়েছিল, জনগণ তা ভুলে যায়নি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি পরাজয়ের বিষয়টি অঁাচ করতে পেরেছিল। তারা নিবার্চনে জয়লাভের জন্য আন্তরিক ছিল না। তাই হেরেছে, এটাই বাস্তবতা। শেখ হাসিনা বলেন, খালেদা জিয়া এতিমদের অথর্ আত্মসাৎ মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। তারেক জিয়া ১০ ট্রাক অস্ত্র ও গোলাবারুদ চোরাচালান মামলার পাশাপাশি গ্রেনেড হামলা মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। সুতরাং, বড় প্রশ্ন হচ্ছে, নিবার্চনে কেন মানুষ তাদের ভোট দেবে? আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, বিএনপি তাদের দলীয় নিবার্চনী প্রতীক ধানের শীষে জামায়াত-শিবিরের নেতাকমীের্দর প্রাথীর্ হিসেবে ভোট করতে দেয়ায় জনসমথর্ন হারিয়েছে। এটিও তাদের পরাজয়ের জন্য অন্যতম প্রধান কারণ। স্বাস্থ্য সুরক্ষায় চাই অথার্য়নের নিশ্চয়তা : প্রধানমন্ত্রী উন্নয়নশীল ও স্বল্পোন্নত দেশগুলোতে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে অথার্য়নের নিশ্চয়তা জরুরি বলে মন্তব্য করে এ বিষয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে এগিয়ে আসার আহŸান জানিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুক্রবার মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে ‘সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিস অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ’ এবং ওয়াল্ডর্ হেলথ অগার্নাইজেশন (ডবিøউএইচও) আয়োজিত ‘হেলথ ইন ক্রাইসিস-ডবিøউএইচও কেয়াসর্’ শীষর্ক এক গোলটেবিল আলোচনায় তিনি এ কথা বলেন। শেখ হাসিনা বলেন, ইবোলা, কলেরা ও যক্ষার মতো সংক্রামক রোগের মহামারি থেকে বিশ্ব এখনো মুক্ত হতে পারেনি। এটাই প্রমাণ করে যে, বিশ্বের বতর্মান স্বাস্থ্য ব্যবস্থার আরও আধুনিকায়ন ও রূপান্তর প্রয়োজন। ‘বিভিন্ন সময় দেখা গেছে, সংকটের ভয়াবহতা এবং সম্পদ ও সামথের্্যর অপ্রতুলতার কারণে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সঠিক পদক্ষেপ নিতে ব্যথর্ হচ্ছে। সুতরাং, স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে উন্নয়নশীল ও স্বল্পোন্নত দেশগুলোর জন্য অথার্য়নের নিশ্চয়তা খুবই জরুরি।’ নিযার্তনের মুখে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মতো কঙ্গো, নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, দক্ষিণ সুদান, ইয়েমেনসহ বিভিন্ন দেশে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে থাকা মানুষদের পাশে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যেভাবে দঁাড়িয়েছে, তার প্রশংসা করেন শেখ হাসিনা। এমডিজি লক্ষ্যমাত্রা অজর্নসহ বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতে বিভিন্নভাবে সহযোগিতার জন্য তিনি ডবিøউএইচওর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। বাংলাদেশে শিশু ও মাতৃমৃত্যুর হার কমিয়ে আনা, টিকাদান কমর্সূচি বাস্তবায়ন, এইচআইভি প্রতিরোধ, ম্যালেরিয়া ও যক্ষাসহ বিভিন্ন পানিবাহিত রোগ প্রতিরোধে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যেভাবে সহযোগিতা দিয়ে গেছে, সে কথাও আলোচনায় তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্যের বিষয়টি সীমান্ত আর নিদির্ষ্ট মাত্রার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গেলে রাষ্ট্রীয় পযাের্য় অঙ্গীকার যেমন জরুরি, তেমনি দরকার নিবিড় আন্তজাির্তক সহযোগিতা। ‘এ বিষয়ে আমাদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে। বিশেষ করে এখনকার উন্নত প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন আমাদের পিছিয়ে পড়া, অসহায়, অরক্ষিত জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে একসঙ্গে কাজ করার সুযোগ করে দিয়েছে।’ সবার জন্য স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে অসংখ্য চ্যালেঞ্জ রয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এটা বিশ্ব সম্প্রদায়ের দায়িত্বেরই অংশ। বিশ্ব সংস্থা হিসেবে ডবিøউএইচওকে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে এ বিষয়ে নেতৃত্ব দিয়ে যেতে হবে।’ টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় স্বাস্থ্য-বিষয়ক লক্ষ্যগুলো অজের্ন কাযর্কর ও ফলাফলভিত্তিক আন্তজাির্তক সমন্বয় ও সহযোগিতার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন প্রধানমন্ত্রী।