হাসপাতালে অগ্নিকাÐ

আইসিইউ চালু হলেও বন্ধ সোহরাওয়াদীর্র শিশু ওয়াডর্

নতুন রোগীও আসছে। ফিরছে পুরাতন রোগীদের অধিকাংশই। তবে এখনও বেশ কিছু বিভাগে বৈদ্যুতিক সংযোগ চালু হয়নি। কোথাও নেই ইন্টারনেট ও টেলিভিশনের সংযোগও

প্রকাশ | ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি রিপোটর্
আকস্মিক অগ্নিকাÐে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর শহীদ সোহরাওয়াদীর্ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের রোগীদের বের করে আনা হয়। আগুন পুরোপুরি নেভানোর পর রাতেই চালু হয় হাসপাতালের কাযর্ক্রম। চলে যাওয়া কয়েকশ রোগী শুক্রবার ফিরেও আসে। শনিবার আইসিইউ বিভাগ চালু করা সম্ভব হলেও এখনও চালু হয়নি হাসপাতালটির শিশু ওয়াডর্। শহীদ সোহরাওয়াদীর্ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কতৃর্পক্ষ জানিয়েছে, আগুন লাগার পর হাসপাতালে ভতির্ শিশু রোগীদের দ্রæত রেসকিউ (উদ্ধার) করে নিরাপদে স্থানান্তর করা গেলেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ওয়াডির্ট। যে কারণে শিশু ওয়াডির্ট চালু করা যায়নি। তবে অন্যান্য ওয়াডর্ চালু আছে। নতুন রোগীও আসছে। ফিরছে পুরাতন রোগীদের অধিকাংশই। তবে এখনও বেশ কিছু বিভাগে বৈদ্যুতিক সংযোগ চালু হয়নি। কোথাও নেই ইন্টারনেট ও টেলিভিশনের সংযোগও। শনিবার দুপুরে শহীদ সোহরাওয়াদীর্ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, নিচতলায় যেখান থেকে আগুনের সূত্রপাত সেখানে ধোয়া-মোছার কাজ চলছে। স্টোররুম এখনও পরিষ্কার করা সম্ভব হয়নি। অন্যদিকে নতুন নতুন রোগী আসতে দেখা যায়। পাশাপাশি পুরাতন রোগীদের ভিড় জমেছে হাসপাতালের প্রশাসনিক ভবনের কমর্কতাের্দর কক্ষে। আগুনে পুড়ে যাওয়া কিংবা জিনিসপত্র ফিরে পাওয়া যাবে কি না- তাই খেঁাজ চলছে সেখানে। সোহরাওয়াদীর্ হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, হাসপাতালটির গেটের পাশেই চেয়ার-টেবিল পেতে ডেস্ক বসানো হয়েছে। সেখানে দায়িত্ব পালন করছেন একাধিক চিকিৎসক ও নাসর্। এখান থেকেই পুরাতন রোগীদের কাগজপত্র পরীক্ষা করে চিকিৎসার জন্য ওয়াডের্ পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে। শহীদ সোহরাওয়াদীর্ হাসপাতালের পরিচালক উত্তম কুমার বড়ুয়া বলেন, ‘হাসপাতালে অগ্নিকাÐের দিন ১১৭৪ জন রোগী ভতির্ ছিল। এর মধ্যে পুরুষ রোগী ৫২৬ জন, নারী ৫৭৬ জন ও শিশু ৭২ জন। আগুন লাগার আধাঘণ্টার মধ্যে আমরা ছাত্র, চিকিৎসক, ফায়ার সাভিের্সর সদস্য, পুলিশ সদস্য, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রসহ সবার সহযোগিতায় রোগীদের বের করে নিয়ে আসি। গুরুতর অসুস্থ রোগীদের অ্যাম্বুলেন্সের মাধ্যমে অন্যান্য হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।’ অগ্নিকাÐে কেউ হতাহত হননি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘অগ্নিকাÐের রাতেই সীমিত পরিসরে হাসপাতালের কাযর্ক্রম চালু করা হয়। শুক্রবার পুরোদমে শুরু হয় সেবাদান। সকাল থেকেই পুরাতন রোগীরা ফিরছেন। শনিবার সকালের তথ্য মতে, ৮৯১ জন রোগী রয়েছে, এরমধ্যে নতুন রোগী হবে সোয়া ১০০, বাকি সবই পুরাতন রোগী।’ শিশু ওয়াডর্ সম্পকের্ শহীদ সোহরাওয়াদীর্ হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. কে এম মামুন মোশের্দ বলেন, ‘আইসিইউ চালু করা গেলেও চালু করা যায়নি শিশু বিভাগটি। কারণ অগ্নিকাÐে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এ বিভাগ। পাশাপাশি এখনও ধেঁায়া রয়েছে, দুগর্ন্ধও বের হচ্ছে। বৈদ্যুতিক সংযোগ চালু করা যায়নি। যথাসম্ভব আমরা চেষ্টা করছি শিশু বিভাগের কাযর্ক্রম চালুর।’ অন্যদিকে শুক্রবার সকাল থেকেই চালু হয়েছে বøাড ব্যাংক। তবে সেখানেও নেই বৈদ্যুতিক সংযোগ। মোমবাতি আর মোবাইলের আলোতে চলছে সেবাদান। সেখানে কতর্ব্যরত এক নারী কমর্কতার্ বলেন, এখানে বিদ্যুতের সংযোগ না থাকায় বøাড-সংক্রান্ত সেবা বিঘিœত হচ্ছে। বøাডের ক্রস ম্যাচিং শেষে মাইক্রোসকপি ¯øাইড দেখতে হয়। বিদ্যুৎ না থাকলে তা সম্ভব হয় না। তবে আজই বৈদ্যুতিক সংযোগ আসার কথা রয়েছে। বিদ্যুৎ এলে শতভাগ সেবা নিশ্চিত করা হবে। হাসপাতালের ১নং ওয়াডের্র ৮৫নং সিটে ভতির্ ছিলেন মোহাম্মপুরের ঢাকা উদ্যান এলাকার আব্দুল গণি খঁা। অগ্নিকাÐের রাতে স্ত্রী ফাতেমা বেগম স্বামীকে নিয়ে হাসপাতাল ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিলেন। তবে আগুন নিভে যাওয়ার পর শুক্রবার সকালে ফের হাসপাতালে পূবের্র বেডে ভতির্ হন। ফাতেমা বলেন, ‘আগুন নিভে যাওয়ায় ভয় কেটে গেছে। অনেকেই ফিরছে। আমাদের যা অবস্থা তাতে বেসরকারি হাসপাতালে ভতির্র টাকা নাই। তাই এখানেই ফেরা।’