ঈদের সময় ঢাকার ফাঁকা রাস্তায় সব ধরনের গাড়ির রেস নিষিদ্ধ

নির্দেশনা অমান্য করলেই শাস্তি হ ড্রাইভিং লাইসেন্স বাতিল বা স্থগিত ও গাড়ি জব্দের নির্দেশ

প্রকাশ | ২৮ জুন ২০২৩, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
ঈদের সময় ঢাকার ফাঁকা রাস্তায় গাড়ির রেস বা প্রতিযোগিতা করা যাবে না। নির্দেশ অমান্যকারীদের শাস্তির আওতায় এনে ড্রাইভিং লাইসেন্স বাতিল অথবা নির্ধারিত সময়ের জন্য লাইসেন্সের কার্যক্রম স্থগিত রাখতে বলা হয়েছে। এছাড়া প্রয়োজনে গাড়ি জব্দের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ঈদের সময় ঢাকার ফাঁকা রাস্তায় দুর্ঘটনাজনিত মৃতু্য কমাতেই এমন নির্দেশনা জারি করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ। মঙ্গলবার ঢাকার মহাখালী আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল পরিদর্শন শেষে এমন নির্দেশনার কথা জানান ডিএমপি কমিশনার পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক খন্দকার গোলাম ফারুক। তিনি বলেন, 'ঈদের সময় নাড়ির টানে মানুষ প্রিয়জনের কাছে গ্রামে চলে যান। এটিই স্বাভাবিক। এতে ঈদের সময় ঢাকার রাস্তাঘাট ফাঁকা হয়ে পড়ে। এমন ফাঁকা রাস্তায় ঢাকায় বসবাসকারীদের অনেকেই মোটর সাইকেল বা প্রাইভেট কার বা বিভিন্ন ধরনের গাড়ি নিয়ে রেস বা গতির প্রতিযোগিতা করেন। যা অত্যন্ত স্পর্শকাতার এবং মারাত্মক। অতীতের অভিজ্ঞতা বলছে, এমন রেস করতে গিয়ে প্রতি বছরই কোনো না কোনো সময় মারাত্মক সব দুর্ঘটনা ঘটে। এতে অনেকের মৃতু্য পর্যন্ত হয়। আবার অনেকেই চিরতরে পঙ্গু হয়ে যান। যা একটি পরিবারের জন্য খুবই বেদনাদায়ক। অনেক মায়ের বুক খালি হয়। ঈদের আনন্দের মধ্যে সন্তান হারানোর বেদনা পুরো পরিবারকে নানাভাবে চাপে ফেলে দেয়। এমন ঘটনা যাতে আর না ঘটে এজন্য এবার পুলিশকে কড়া নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।' তিনি বলেন, 'যে কোনো ধরনের রেস বা গতির প্রতিযোগিতা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। নির্দেশনা অমান্যকারীদের প্রয়োজনে আইনের আওতায় আনা হবে। চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স বাতিল বা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য লাইসেন্সের কার্যক্রম স্থগিত রাখা বা গাড়ি পুলিশ হেফাজতে নেওয়ার নির্দেশনা হয়েছে। কারণ আমরা সড়কে কোনো প্রাণহানি দেখতে চাই না। আমরা চাই না অকালে কোনো প্রাণ ঝরে যাক।' ডিএমপি কমিশনার বলেন, 'মানুষের ঈদযাত্রা নির্র্বিঘ্ন করতে পুলিশ দিন-রাত কাজ করছে। এছাড়া যাত্রীসহ সংশ্লিষ্টদের নিরাপত্তাও জোরদার করা হয়েছে। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে কোথাও কোথাও কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। মহাখালী বাস টার্মিনালটি অল্প জায়গায় এবং ব্যস্ত ঢাকার মাঝখানে হওয়ায় যাত্রীসহ সবাইকে কিছুটা ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।' তিনি যাত্রীদের কাছ থেকে নির্ধারিত পরিমাণের চেয়ে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় না করতে বাস মালিক সমিতি, চালক ও হেলপারদের প্রতি আহ্বান জানান। ডিএমপি কমিশনার বাড়তি ভাড়া দিয়ে যাত্রীদের টিকিট না কেনারও পরামর্শ দেন। এমনকি যে কোনো অভিযোগে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে যাত্রীদের ফোন করে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা নেওয়ার অনুরোধ করেন। অনিয়মের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও তিনি যাত্রীদের আশ্বস্ত করেন। তিনি জানান, এক্ষেত্রে পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা পুলিশও কাজ করছে। মালিক ও শ্রমিক নেতাদের উদ্দেশ্যে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ঈদের সময় চালকরা বাড়িতে অবস্থান করেন তখন হেলপাররা যাতে গাড়ি নিয়ে না বের হন এজন্য যানবাহন মালিকদের সতর্ক থাকতে হবে। অন্যথায় দুর্ঘটনা ঘটা বিচিত্র নয়। ডিএমপি কমিশনার বলেন, 'ঈদকে সামনে রেখে গত এক মাস ধরে চোর, অজ্ঞান পার্টি, মলম পার্টি, ছিনতাইকারী, মাদক কারবারি, জাল টাকার ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধীদের গ্রেপ্তারে ধারাবাহিক অভিযান চলমান আছে। ইতোমধ্যেই এ ধরনের অপরাধে জড়িত থাকার দায়ে ৬শ' জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।' ডিএমপি কমিশনার সঙ্গে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (অ্যাডমিন) একেএম হাফিজ আক্তার, অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) ডক্টর খন্দকার মহিদ উদ্দিন, অতিরিক্ত কমিশনার (লজিস্টিকস, ফিন্যান্স অ্যান্ড প্রকিউরমেন্ট) মুহা. আশরাফুজ্জামান, অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) মো. মুনিবুর রহমানসহ ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।