গঠনতন্ত্র অনুসরণ করে রেজা কিবরিয়াকে অপসারণ :নুর
প্রকাশ | ০৭ জুলাই ২০২৩, ০০:০০
যাযাদি ডেস্ক
গণ অধিকার পরিষদের সদস্য সচিব ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর বলেছেন, 'শুরু থেকে আমরা একটি নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় গঠনতন্ত্র অনুসরণ করে দুই-তৃতীয়াংশের সমর্থনে প্রথমে দলের আহ্বায়ক ডক্টর রেজা কিবরিয়াকে অপসারণের চিঠি দিয়েছি, সাত দিনের ব্যাখ্যার সময় দিয়েছি, তারপর অপসারণ করেছি।' বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে জাতীয়তাবাদী নবীন দলের আলোচনা সভা শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
নুর বলেন, আগামী ১০ জুলাই গণ অধিকার পরিষদের কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এখন কিছু লোকজন বুঝতে পেরেছে, তারা সুবিধা করতে পারবে না। তারা ষড়যন্ত্র করে অপতৎপরতা চালিয়ে নেতাকর্মীদের কাছে প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। গণ অধিকার পরিষদে তাদের ভবিষ্যৎ নেই। তাই তারা গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে হাত মিলিয়ে টাকা-পয়সা নিয়ে গণ অধিকার পরিষদকে ভাঙার জন্য কাজ করছে। এটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত! এদের পেছনে গোয়েন্দা সংস্থা আছে।
গণ অধিকার পরিষদের সদস্য সচিব বলেন, ইসরাইলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের এজেন্ট মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে মিটিং করেছেন প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়। ২০১৬ সালে সাক্ষাৎ নিয়ে বিবিসিতে নিউজ হয়েছে।
তিনি বলেন, 'মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে মাগুরার সংসদ সদস্য বীরেন শিকদারও মিটিং করেছেন। আমার সঙ্গে মেন্দি এন সাফাদির বৈঠকের অভিযোগ যারা তুলছে, তারা পারলে একটি ভিডিও দেখাও আমি স্পষ্ট বলেছি, মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে আমার কোনো বৈঠক হয়নি।'
নুর বলেন, 'আমার বিষয়ে যদি সরকারের কোনো উদ্বেগ থাকে তাহলে আগে জয় সাহেব, বীরেন শিকদার, শিপন কুমার বসুকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা উচিত। তাদের তো ভিডিও আছে, আমার তো কোনো ডকুমেন্ট তারা পায়নি।'
তিনি আরও বলেন, আগামী ১০ জুলাই কাউন্সিলের মধ্য দিয়ে গণ অধিকার পরিষদের নবজাগরণ ঘটবে। বেইমান মীর জাফর-মোশতাকরা ইতিহাসের আঁস্তাকুড়ে হারিয়ে যাবে। দুই-চার দিন টেলিভিশন টকশোতে এরা কথা বলবে। এরপর আর এদের পাত্তা থাকবে না।
নুরুল হক নুর বলেন, সোশ্যাল মিডিয়া এবং গণমাধ্যমে আসার জন্য অনেকে বেফাঁস কথা বলেন। কারণ অনেকে জানে ভিপি নুরের কাউন্টারে একটি বক্তব্য দিলে বা বিরুদ্ধে কিছু বললে পত্রপত্রিকা লুফে নেবে। সে কারণে অনেকে বেফাঁস মন্তব্য ও বক্তব্য দিয়ে থাকে।
ডাকসুর সাবেক ভিপি বলেন, 'নির্বাচনকে সামনে রেখে সরকারের গোয়েন্দা সংস্থা নানা ধরনের খেলা খেলছে। বিভিন্ন দলকে ভাঙতে সেসব দলের দলছুট-পদবঞ্চিত নেতাদের কোরবানির পশুর মতো টাকা দিয়ে কিনছে নির্বাচনে নেওয়ার জন্য বা সরকারের পক্ষে কাজ করার জন্য। গণ অধিকার পরিষদের একটি বড় কেন্দ্রীয় কার্যালয় আছে। আমরা সমস্ত সংবাদ সম্মেলন সেখানে করেছি। এখন পর্যন্ত আমরা কোনো সংবাদ সম্মেলন প্রেস ক্লাবে করিনি। যারা কার্যালয়ে যেতে পারে না, নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা নেই তারাই গণ অধিকার পরিষদের নেতাকর্মী দাবি করে প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছে। সংবাদ সম্মেলনে তারা কী বলেছে সেটা আমাদের কাছে মুখ্য বিষয় নয়।'
প্রতিমন্ত্রীসহ ৯টি আসন পাওয়ার প্রস্তাবের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, 'এটা যে বলেছে তাদের জিজ্ঞেস করুন। এটা ঠিক যে, বিএনপি একটি ঘোষণা দিয়েছে তারা ক্ষমতায় গেলে সব আন্দোলনকারী দলকে নিয়ে একটি জাতীয় সরকার করবে। আমরা যেহেতু বিএনপির আন্দোলনে আছি সেহেতু আমরা আশা করি বিএনপি আমাদের সুখ-দুঃখে পাশে থাকবে। সেক্ষেত্রে বিএনপি যদি ভবিষ্যতে এমপি-মন্ত্রী বানায় সেটা বানাতে পারে।'
গণ অধিকার পরিষদের ভেতরে দুই পক্ষ হওয়ার কারণ কি জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখানে অনেকে আছে যারা বিভিন্ন অপকর্মের কারণে দলে কোণঠাসা। তারা অনেকদিন ধরে বিভিন্ন ছোট ছোট দলের সঙ্গে মিলে আরেকটি দল করা, অন্য দলে যোগ দেওয়ার মতো কাজ করছে। সরকার যেহেতু বুঝতে পেরেছে গণ অধিকার পরিষদ একটি তারুণ্যের শক্তি, তরুণদের দল, আগামীর আন্দোলনের একটি শক্তি হবে। কাজেই এদের বিভ্রান্ত করা, চরিত্র হরণ করা, ভাগ করার ফাঁদ পেতেছে। কিছু নেতাকর্মী সরকারের সেই ফাঁদে পা দিচ্ছে।