'নুরের তৎপরতা দলীয় গঠনতন্ত্র ও মূলনীতির পরিপন্থি'
প্রকাশ | ০৭ জুলাই ২০২৩, ০০:০০
যাযাদি ডেস্ক
সাম্প্রতিক সময়ে গণ অধিকার পরিষদের একাংশের সদস্য সচিব নুরুল হক নুরের সব তৎপরতা দলীয় গঠনতন্ত্র ও মূলনীতির পরিপন্থি বলে অভিযোগ করেছেন দলের আরেকাংশের নেতারা। বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের মাওলানা আকরম খাঁ হলে গণ অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যদের এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন দলের একাংশের আহ্বায়ক ডক্টর রেজা কিবরিয়ার অনুসারীরা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে গণ অধিকার পরিষদের একাংশের যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক হাসান বলেন, গত ১৮ জুলাইয়ের পর থেকে নুরুল হক নুরের সব তৎপরতা দলীয় গঠনতন্ত্র ও মূলনীতির পরিপন্থি। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ডক্টর রেজা কিবরিয়ার কথিত অপসারণ সম্পূর্ণ অবৈধ। আমরা রেজা কিবরিয়ার বিরুদ্ধে অবৈধ অপসারণ প্রক্রিয়াকে সমর্থন করি না এবং তিনি দলের আহ্বায়ক হিসেবে বহাল আছেন বলে মনে করি। সেই সঙ্গে আমরা ঘোষণা করতে চাই, ডক্টর রেজা কিবরিয়াকে বাদ দিয়ে যারা কাউন্সিলের দিন নির্ধারণ করেছেন, তারা পরিকল্পিতভাবে দলকে ভাঙনের দিকে ঠেলে দিতে চাচ্ছেন।
তিনি আরও বলেন, আমরা অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কিছু বিষয় নিয়ে গণ অধিকার পরিষদের অভ্যন্তরে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি বিরাজ করছে। বেশ কিছু ক্ষেত্রে দলের অভ্যন্তরে গণতান্ত্রিক পরিবেশ ও গঠনতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ও ন্যায়বিচারের চর্চা ব্যাহত হয়েছে, যা এ দলের প্রতি মানুষের অপরিসীম প্রত্যাশাকে ক্ষুণ্ন করেছে।
যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক হাসান বলেন, দলের গঠনতন্ত্রের ৩৮ ধারা অনুযায়ী আহ্বায়কের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব পাস ও অপসারণ করতে হলে কেন্দ্রীয় কমিটির মোট সদস্যের দুই তৃতীয়াংশ অর্থাৎ ১২১ জন সদস্যের মধ্যে অন্তত ৮১ জন সদস্যের সমর্থন প্রয়োজন হয়। কাজেই মাত্র ৪৫ জন সদস্য উপস্থিতি বিশিষ্ট সভায় আহ্বায়ককে অপসারণ অসম্ভব। কিন্তু সভায় সদস্যরা গোপন ব্যালটে ভোট গ্রহণের আহ্বান জানালে তা না করে প্রকাশ্যে হাত তুলে সমর্থন জানাতে বলা হয়। ফলে অনেকেই ভোটদানে বিরত থাকেন। কিন্তু সভা শেষে গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে রেজা কিবরিয়াকে দুই তৃতীয়াংশের ভোটে অপসারণ করা হয়েছে বলে দাবি করা হয়, যা সম্পূর্ণ অগঠনতান্ত্রিক ও প্রতারণামূলক।
তিনি বলেন, আমরা কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যরা গণ অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক ডক্টর রেজা কিবরিয়ার নেতৃত্বে বাংলাদেশের গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার, অধিকার ও জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় কাজ চালিয়ে যাব। তারই অংশ হিসেবে আমরা দ্ব্যর্থহীনভাবে সুনির্দিষ্ট দাবি পেশ করছি।
১) অবিলম্বে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করে শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করতে হবে। শেখ হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচন হতে পারে না। ২) অবিলম্বে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া, জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান ও হেফাজত নেতা মাওলানা মামুনুল হকসহ সব রাজবন্দির নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে। ৩) বাংলাদেশ পাসপোর্টে পূর্বের ন্যায় এক্সেন্ট ইসরাইল (ঊীপবঢ়ঃ ওংৎধবষ) লেখাটি পুনর্বহাল করতে হবে। ইসরাইলের সঙ্গে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের গোপন কোনো সম্পর্ক থাকলে তা তদন্ত করে রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন গণ অধিকার পরিষদের একাংশের যুগ্ম আহ্বায়ক সাদ্দাম হোসেন, কর্নেল মিয়া মশিউজ্জামান, জাকারিয়া পলাশ, মুফতি সোহাইবি ও আবুল কালম আজাদ।