সুস্থ হয়ে উঠছে রাবি ছাত্র তারিকুল ইসলাম

প্রকাশ | ১৬ জুলাই ২০১৮, ০০:০০ | আপডেট: ১৬ জুলাই ২০১৮, ১০:১৭

রাবি প্রতিনিধি
হাসপাতালের বেডে তারিকুল ইসলাম

কোটা সংস্কার আন্দোলনে হামলায় গুরুতর আহত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষাথীর্ তারিকুল ইসলাম তারিকের শারীরিক অবস্থার উন্নতি হচ্ছে। আর কয়েকদিন পরে ক্র্যাচে ভর দিয়ে হাঁটাচলাও করতে পারবেন। তবে পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠতে আরও কমপক্ষে তিন মাস সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। তারিকুল বতর্মানে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। তার নিরাপত্তা ও চিকিৎসার স্বাথের্ হাসপাতালের নাম প্রকাশ করছেন না সহপাঠী ও তার পরিবারের লোকজন। আর তাই অনেকটা গোপনেই তার চিকিৎসা চলছে। তারিকুলের সঙ্গে থাকা তার সহপাঠী মোশের্দুল আলম জানান, গত ৯ জুলাই তারিকুলের পায়ে অস্ত্রোপচার করা হয়। বতর্মানে তার অবস্থা কিছুটা ভালোর দিকে। তবে পায়ে এখনো ব্যথা রয়ে গেছে। প্রতিদিনই ড্রেসিং করা হচ্ছে, পায়ের ফোলা কমে আসছে। পিঠের নিচের দিকে এখনো হাতুড়ির আঘাতজনিত কারণে রক্ত জমাটবেঁধে আছে। পিঠের বিভিন্ন স্থানে লাঠির আঘাতের চিহ্ন এখনো স্পষ্ট। মাংসপেশিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তারিকুলের বোন ফাতিমা খাতুন বলেন, ভাইয়ের শরীরজুড়ে এখনো ব্যথা রয়েছে। শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন ও রক্ত জমাট বেঁধে আছে। তাকে নিয়মিত ফিজিওথেরাপি দেয়া হচ্ছে। কোমরে যে হাতুড়িপেটা হয়েছিল, সেটার কারণে ওঠাবসায় বেশ কষ্ট হচ্ছে। তারিকুলকে কোথায় চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে? তা জানতে চাইলে তারিকুলের সহপাঠী মাসুদ মোন্নাফ বলেন, ‘আমরা তারিকুলের নিরাপত্তার অভাব বোধ করছি। এর আগে তার অসুস্থ হওয়া সত্তে¡ও তাকে জোর করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেয়া হয়। তারিকুলের নিরাপত্তার শঙ্কা ও চিকিৎসার স্বাথের্ হাসপাতালের নাম প্রকাশ করছি না।’ তিনি বলেন, ‘এখন পযর্ন্ত বন্ধু, পরিচিতজনদের সহায়তায় চিকিৎসা চলছে। কিন্তু আমরা আর কুলিয়ে উঠতে পারছি না। হাসপাতালের বিল পরিশোধ করা যায়নি। পায়ে অস্ত্রোপচারের সব টাকা এখনো বাকি আছে। তারিকুলের পরিবারের অবস্থা তেমন ভালো না। পরিবারের পক্ষেও সেভাবে সম্ভব হচ্ছে না চিকিৎসার খরচ বহন করা। চিকিৎসার খরচ নিয়ে আমরা বেশ দুশ্চিন্তায় আছি।’ গত দুই জুলাই বিকেলে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে রাজশাহী-ঢাকা মহাসড়কে পতাকা মিছিল বের করে। আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, সে সময় তাদের মিছিলে ছাত্রলীগের কিছু নেতাকমীর্ হামলা চালায়। এতে আন্দোলনকারীদের ১৫ জন আহত হয়। এদের মধ্যে তারিকুলকে ধাওয়া দিয়ে ধরে রাম দা, হাতুড়ি, লোহার পাইপ ও লাঠি দিয়ে উপযুর্পরি আঘাত করে হামলাকারীরা। আঘাতে তারিকুলের ডান পায়ের হাড় ভেঙে যায়। এছাড়া মাথায়ও গুরুতর জখম হয় তার। পরে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে রামেক হাসপাতালে ভতির্ করে। কিন্তু শুক্রবার তারিকুলকে ওই হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দিয়ে দেয়া হয়। পরে তার সহপাঠীরা তাকে নগরীর রয়্যাল হাসপাতালে ভতির্ করেন। সেখানে অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় চিকিৎসক তারিকুলকে ঢাকায় স্থানান্তরের পরামশর্ দেন।