ফেসবুকে পরিচয় ও বিয়ে

সতিন আছে জেনে গলা কেটে হত্যা স্বামীকে

প্রকাশ | ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
গ্রেপ্তার মোসাম্মৎ আশা আক্তার
চট্টগ্রাম নগরের পাহাড়তলী থানার নেছারিয়া আলিয়া মাদ্রাসা এলাকায় যুবক মো. শামীম (২৭) হত্যার ঘটনায় তার দ্বিতীয় স্ত্রী মোসাম্মৎ আশা আক্তারকে (২৩) বগুড়া থেকে গ্রেপ্তার করেছে নগর পুলিশের একটি দল। পুলিশের দাবি, গ্রেপ্তার আশা আক্তার প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তার স্বামীকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টায় নগরের দামপাড়া পুলিশ লাইন্সে সিএমপি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান নগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) কুসুম দেওয়ান। গ্রেপ্তার আশা আক্তার বগুড়া সদরের ঠনঠনিয়া নতুনপাড়া এলাকার আবদুল আজিজের মেয়ে। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আসামি আশা আক্তারের বাসা বগুড়া জেলায়। এর আগে তার আরও একবার বিয়ে হয়েছিল। সে ঘরে তার চার বছরের একটি মেয়ে রয়েছে। পরে সে বিয়ে ভেঙে যায়। প্রায় এক বছর আগে ভিকটিম মো. শামীমের সঙ্গে আশা আক্তারের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পরিচয় ঘটে। সে সময় শামীম নিজেকে অবিবাহিত পরিচয় দেন। পরে তারা বিয়ে করেন। বিয়ের পর আসামি আশা আক্তার শামীমের প্রথমপক্ষের কথা জেনে যান। এ ছাড়া বিভিন্ন সময় শামীম আশার কাছ থেকে টাকা নিতেন। এসব বিষয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে আশা গত শনিবার স্বামী শামীমকে হত্যা করেন। নগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) কুসুম দেওয়ান বলেন, 'ভিকটিম শামীম ফেসবুকে পরিচয়ের সূত্রেই বগুড়া গিয়ে আশা আক্তারকে বিয়ে করেন। তিনি বিভিন্ন সময় বগুড়া গিয়ে আশার বাসায় থাকতেন। কিন্তু আশাকে কখনো চট্টগ্রামে আনেননি। নিজেকে অবিবাহিত পরিচয় দিয়ে বিয়ে করলেও চট্টগ্রামে শামীমের আরও একটি সংসার ছিল। বিয়ের কিছু দিনের মধ্যে আশা সে বিষয়টি জানতে পারেন। এসব নিয়ে তাদের মধ্যে বিভিন্ন সময় ঝগড়াঝাটি হতো।' তিনি আরও বলেন, 'শামীম বিভিন্ন সময় আশার কাছ থেকে টাকা নিতেন। এমনকি স্থানীয় একটি সমিতি থেকে ৬০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে শামীমকে একটি ইজিবাইকও কিনে দিয়েছিলেন। এ ছাড়া পরে আরও ৩০ হাজার টাকা দেন শামীমকে। কিন্তু শামীমের প্রথমপক্ষের বিষয়টি কোনোভাবেই মেনে নিতে পারেননি আশা।' পাহাড়তলী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) অর্ণব বড়ুয়া বলেন, 'স্বামীর প্রথম বিয়ে ও আরও নারীর সঙ্গে সম্পর্কের কথা জেনে এবার শামীম বগুড়া গেলে তার সঙ্গে চট্টগ্রামে আসেন আশা আক্তার। শনিবার সকালে চট্টগ্রাম পৌঁছে স্বামী-স্ত্রী পরিচয় দিয়ে পাহাড়তলী থানার আবদুল আলি নগরের ইউসুফ মিয়ার কলোনিতে বাসা ভাড়া নেন। বগুড়া থেকে নিয়ে আসা ছুরি দিয়ে দুপুরেই শামীমকে জবাই করে হত্যা করেন আশা। পরে তিনি বগুড়া পালিয়ে যান।' অর্ণব বড়ুয়া আরও জানান, ঘটনার তদন্তে নেমে খুনের কাজে ব্যবহৃত ছুরি উদ্ধার করে পুলিশ। পরে আশপাশে জিজ্ঞাসাবাদের সূত্র ও প্রযুক্তির সাহায্য নিয়ে আশার অবস্থান শনাক্ত করা হয়। মঙ্গলবার রাতে বগুড়া থেকে আশাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রাম নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (পশ্চিম) ফারুক উল হক, অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (পশ্চিম) মো. কামরুল ইসলাম, সহকারী কমিশনার (পাহাড়তলী) পঙ্কজ বড়ুয়া, পাহাড়তলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সদীপ কুমার দাশ উপস্থিত ছিলেন।