নাগরিকত্ব হারাচ্ছেন আইএসের শামীমা

প্রকাশ | ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
আন্তর্জাতিক জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটে (আইএস) যোগ দেয়া বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত শামীমা বেগমের ব্রিটিশ নাগরিকত্ব ছিনিয়ে নেয়া হচ্ছে। তবে সন্তানকে নিয়ে যুক্তরাজ্যে ফেরার আকুতি জানিয়ে যাচ্ছেন শামীমা। এদিকে শামীমার নাগরিকত্ব কেড়ে নেয়ার সঙ্গে উঠে আসছে বাংলাদেশ প্রসঙ্গ। বলা হচ্ছে, মা-বাবা সূত্রে তিনি বাংলাদেশের নাগরিক। যদিও শামীমা দাবি করেছেন, তিনি বাংলাদেশে কখনো ছিলেন না। বুধবার বিবিসি অনলাইনের খবরে বলা হয়, হোয়াইট হল জানিয়েছে যে ১৯ বছর বয়সি শামীমা এখন অন্য দেশের নাগরিকত্ব পাওয়ার উপযোগী। এ অবস্থায় তার ব্রিটিশ নাগরিকত্ব ছিনিয়ে নেয়া সম্ভব। তবে শামীমার পরিবারের আইনজীবী তাসনিম আকুঞ্জে বলেছেন, ব্রিটিশ সরকারের এমন সিদ্ধান্ত তাদের 'হতাশ' করেছে। এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করতে 'সব আইনি পথ' খতিয়ে দেখছেন তারা। শামীমা বেগম ২০১৫ সালে পূর্ব লন্ডন ছেড়ে আইএসে যোগ দেন। তখন তার বয়স ছিল মাত্র ১৫ বছর। গত সপ্তাহে তাকে সিরিয়ার একটি শরণার্থী শিবিরে পাওয়া যায়। কয়েক দিন আগে তিনি একটি ছেলেসন্তানের জন্ম দেন। গত সোমবার বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে শামীমা বলেন, তিনি কখনো আইএসের 'পোস্টার গার্ল' (প্রচারের জন্য ব্যবহৃত মেয়ে) হতে চাননি। এখন তার একটাই সাধারণ চাওয়া, সন্তানকে যুক্তরাজ্যে বড় করা। শামীমার মায়ের কাছে ব্রিটিশ সরকারের এক চিঠিতে বলা হয়েছে, তার মেয়েকে জানাতে যে তার নাগরিকত্ব কেড়ে নেয়া হচ্ছে। আইটিভি নিউজের সংগ্রহে চিঠিটির একটি কপি রয়েছে। ব্রিটিশ নাগরিকত্ব আইন অনুসারে, একজন ব্যক্তি নাগরিকত্ববঞ্চিত হতে পারে যদি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মনে করেন যে এটা 'জনস্বার্থের জন্য সহায়ক'। তবে ওই ব্যক্তি রাষ্ট্রহীন হতে পারবেন না। শামীমা জানান, তিনি তার বোনের ব্রিটিশ পাসপোর্ট নিয়ে সিরিয়া গিয়েছিলেন। তবে সীমান্ত পাড়ি দেয়ার পর তাদের কাছ থেকে পাসপোর্ট নিয়ে যাওয়া হয়। শামীমাকে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বলা হলেও বিবিসির সাক্ষাৎকারে শামীমা বলেছেন, তার বাংলাদেশি পাসপোর্ট নেই এবং তিনি কখনো বাংলাদেশে ছিলেন না। সন্ত্রাসবিষয়ক আইন পর্যবেক্ষক লর্ড চার্লি বলেছেন, শামীমা বেগমের মা যদি বাংলাদেশি হয়ে থাকেন, তবে বাংলাদেশি আইন অনুসারে শামীমাও বাংলাদেশি। এদিকে শামীমার নবজাতক ছেলের ব্যাপারে বলা হয়েছে, ব্রিটিশ বাবা-মায়ের নাগরিকত্ব কেড়ে নেয়ার আগে সন্তান জন্ম নিলে সেই সন্তানকে ব্রিটিশ নাগরিক বলে বিবেচনা করা হবে। তবে সম্ভাব্য কোনো ঝুঁকির কথা তুলে ধরে সেই শিশুরও নাগরিকত্ব একসময় বাতিল করার ক্ষমতা রয়েছে কর্তৃপক্ষের। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাজিদ জাভেদ বলেছেন যে ব্রিটেনে বসবাসরত মানুষের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করাকেই তিনি অগ্রাধিকার দিচ্ছেন। মেট্রোপলিটন পুলিশের সাবেক প্রধান তত্ত্বাবধায়ক এবং শামীমার পরিবারের বন্ধু ডাল বাবু স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের চিঠির ব্যাপারে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এমন 'চটজলদি প্রতিক্রিয়ায়' তারা 'খুবই অবাক' হয়েছেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, 'শামীমা কখনো বাংলাদেশে ছিল না। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এ সিদ্ধান্তকে অবাস্তব মনে হচ্ছে। আমি বুঝতে পারছি না, এটা কীভাবে আইনিভাবে দাঁড়াবে।'