নিরাপদ আশ্রয়ই শেষে কাল হলো তাদের

প্রকাশ | ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
আগুন লাগার পর নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে অনেকেই পাশের ওয়াহিদ ভবনের দোকানে প্রবেশ করেছিল। কিন্তু সেই নিরাপদ আশ্রয়ই কাল হলো তাদের। চকবাজারের এই ভবনটিতে আগুনে পুড়ে যত মানুষ মারা গেছেন তার ৮০ শতাংশই নিচের কয়েকটি ফ্লোরের ব্যবসায়ী। স্থানীয়রা বলেন, উপরের ফ্লোরের বাসিন্দারা দ্রম্নত ভবন থেকে বের হতে পারলেও নিচের ফ্লোরগুলোর লোকজন বের হতে পারেননি। কারণ যখন সড়কে আগুন লাগে, তখন আগুন থেকে বাঁচতেই ব্যবসায়ীরা দোকানের শাটার বন্ধ করে ভেতরে অবস্থান নেন। পথচারীরাও অনেকে দৌড়ে নিচের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোর ভেতরে ঢোকেন। কিন্তু সেখান থেকে বেঁচে ফিরতে পারেননি অধিকাংশই। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের অদূরে চকবাজারের ওয়াহিদ ম্যানশন। পুরান ঢাকার ব্যস্ত এই এলাকায় বুধবার রাত ১০টায়ও ব্যস্ত মানুষের আনাগোনা ছিল। ছিল সরু এই সড়কে যানজটও। কিন্তু হঠাৎ করেই রাত পৌনে ১১টায় আতংক ছড়িয়ে পড়ে। কি ঘটেছিল সেখানে? কীভাবে লেগেছিল আগুন? প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, রাত পৌনে ১১টার দিকে হঠাৎ সড়কে রাখা একটি কার অথবা পিকআপের সিলিন্ডার বিস্ফোরণ ঘটে। মুহূর্তের মধ্যে আগুন ছড়িয়ে পড়ে পাশের ওয়াহিদ ভবনে। পুরান ঢাকার চকবাজারের ওয়াহিদ ভবনে ব্যবসা করতেন নোয়াখালীর হেলাল উদ্দিন। গত রাতের ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে হেলাল চলে গেছেন পরপারে। হেলালের পুরো পরিচয় পাওয়া না গেলেও তার পরিচিত আসাদ জানান, 'তারা একসঙ্গে মাঝে মধ্যে রাতে ব্যাডমিন্টন খেলতেন। তিনি হেলালের মৃতু্য কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না। তিনি বলেন, আমি শুধু জানি ওনার বাড়ি নোয়াখালীতে। এছাড়া আর কোনো কিছু জানা নেই।' চকবাজারের একটি দোকানে কাজ করেন আজাদ মিয়া। তিনি জানান, তার পরিচিত একজন মুফতি ওই ভবনেই থাকতেন। তিনি প্রাণে বেঁচে গেলেও তার দোকানের প্রচুর ধর্মীয় কিতাব পুড়ে ছাই হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল জব্বার বলেন, 'আমরা সবাইকে নিয়ে বসবো। সরকারকে বলব, শুধু এলাকাবাসী কেমিক্যাল গোডাউন মুক্ত করতে পারবে না। এজন্য সরকারের সহযোগিতা প্রয়োজন। বড় দুর্যোগ থেকে বাঁচতে এখনই উদ্যোগ প্রয়োজন। না হলে কঠিন দুর্যোগ আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে।'