বিএনপি চোখেমুখে অন্ধকার দেখছে :ওবায়দুল কাদের

প্রকাশ | ০৯ আগস্ট ২০২৩, ০০:০০

ঢাবি প্রতিনিধি
বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে মঙ্গলবার বনানী কবরস্থানে তার সমাধিতে শ্রদ্ধা জানান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ কেন্দ্রীয় নেতারা -যাযাদি
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, 'বিদেশে আমাদের বন্ধু আছে, প্রভু নেই। কোনো বন্ধু আমাদের ক্ষমতায় বসাবে না। ক্ষমতায় বসাবে দেশের জনগণ। জনগণের সঙ্গে আমরা আছি।' এ সময় বিএনপির আন্দোলনের সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, 'চার পাঁচ দিন ধরে দেখছি নরম সুর। আজকে বেলাশেষ হয়ে গেছে, আমার কাছে মনে হচ্ছে এক দফারও বেলা শেষ। দম ফুরিয়েছে, চোখ-মুখে অন্ধকার দেখছে, শুকিয়ে গেছে চোখ মুখ।' মঙ্গলবার বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৯৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ আয়োজিত 'বাংলার মাতা, বাংলাদেশের নেতা' শীর্ষক ছাত্রী সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, 'বাংলাদেশ থেকে নিয়ম অনুযায়ী ওরা (বিদেশি রাষ্ট্রের প্রতিনিধি) এলে আমরা যাই আর আমরা গেলে তারা আসে। চীনের সঙ্গেও এটা হয়েছে। এবার ভারতেও গেছে আমাদের প্রতিনিধি দল। আমাদের পক্ষ থেকে এটা নিয়ম আছে। প্রতিনিধি তাদেরও আসবে আমাদেরও যাবে। করোনার কারণে আমরা নিয়মটা দেরিতে পালন করছি। ভারতে প্রতিনিধি যাওয়ার পর বিএনপি নেতাদের চোখ-মুখে সারারাত দুশ্চিন্তায় ঘুম নেই। আওয়ামী লীগ ভারতে গিয়ে আবার কী করছে, সেই চিন্তায় তাদের ঘুম নেই।' বাংলাদেশের সংসদ নির্বাচনের আগে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের তৎপরতাকে ইঙ্গিত করে সমাবেশে সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী বলেন, 'এ বছর পৃথিবীর ২২টি দেশে নির্বাচন হবে। বাংলাদেশ কি এমন অপরাধী দেশ ইউরোপীয় ইউনিয়ন, অ্যামেরিকা, জাতিসংঘ ঘুরে ঘুরে সবাই শুধু বাংলাদেশে। নাইজেরিয়ার খবর নেই, সোমালিয়ার খবরই নেই, কঙ্গোর খবরই  নেই। প্রতিদিন সুদানে জেনারেলদের সংঘর্ষে বলি হচ্ছে নিরীহ মানুষ। লাখ লাখ মানুষ রিফিউজি হচ্ছে, তাদের খাবারের সংস্থান নেই, এসব নিয়ে কারও মাথাব্যথা নেই।' সমাবেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, 'প্রতি মিনিটে একজন করে মানুষ মরছে সোমালিয়ায়, জাতিসংঘ তাদের জন্য কি করছে। আজকে আমেরিকার কিছু সিনেটর কার লবিংয়ে পড়ে সেখানে তারা বাইডেনের কাছে, জাতিসংঘের মহাসচিবের কাছে আবেদন করেছে বাংলাদেশের ইলেকশন তত্ত্বাবধায়ন করার জন্য। তারাই মার্কিন সিনেট নয়, তারাই মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদ নয়, কিন্তু এ ধরনের ছবি আমাদের বিবেককে নাড়া দেয়।' ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, যারা ১৫ আগস্ট, ৩ নভেম্বর, ২১ আগস্টের খুনি, যারা খুনের মাস্টারমাইন্ড, তাদের হাতে মুক্তিযুদ্ধ নিরাপদ নয়, গণতন্ত্র নিরাপদ নয়, মানবাধিকার নিরাপদ নয়। আজকে এই মহলটি আমাদের সঙ্গে সংঘাতে মেতে উঠেছে। এই মাটি, এই মাটির গভীরে আমাদের শিকড়। আমরা এই মানুষ, এই মাটির বাইরে যাব না, যাওয়ার কোনো দৃষ্টান্ত নেই। আপনার নেতাই (তারেক রহমান) লন্ডনে পালিয়ে আছে, সাহস থাকলে আসুক, রাজপথে মোকাবিলা করুক, ফয়সালা করুক।' বিএনপিকে ইঙ্গিত করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'বাংলাদেশের একটা দল, গত চার পাঁচ বছরে কানাডার ফেডারেল আদালত তাদের দলের পাঁচজনকে আশ্রয় দেয়নি। আদালতের রায় হচ্ছে, সে যে দল করে, সেই দল একটা টেরোরিস্ট অরগানাইজেশন (সন্ত্রাসী সংগঠন)।  এ সময় মির্জা ফখরুলকে উদ্দেশ্য করে  ওবায়দুল কাদের বলেন, 'তিনি কি এই রায় দেখেননি? যখন লাফালাফি করেন, বড় বড় কথা বলেন, বেপরোয়া হয়ে মিথ্যা বলেন। কানাডার আদালতে পরপর পাঁচ বার যে মন্তব্য, এই মন্তব্যটির বাস্তবতা মির্জা ফখরুল উপলব্ধি করেন কিনা- এমন প্রশ্ন রাখেন ওবায়দুল কাদের।  আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, 'জিয়াউর রহমান ১৫ আগস্টের মাস্টারমাইন্ড, ৩ নভেম্বরের মাস্টারমাইন্ড। আর তাদের ছেলে যুবরাজ মুচলেকা দিয়ে বিদেশে পলায়ন করেছে আর রাজনীতি করবে না। এই অঙ্গীকার লিখিত দিয়ে চলে গেছে লন্ডনে। আর এখন রাজনীতিই শুধু করে না, প্রতিদিন বক্তৃতা করে, প্রতিদিনই পরামর্শ দেয়। আদালত বলেছেন, তার সাজা হয়েছে, দন্ডিত আসামি। তার বক্তব্য, মন্তব্য, কোনো প্রচারযন্ত্রে প্রচার হবে না। এরপরও আদালত অবমাননা করে কেন প্রতিদিন, কে তাকে দুঃসাহস দিল? আজকে লন্ডনে বসে বসে বাংলাদেশবিরোধী অপপ্রচার করছে এবং মিথ্যাচার করে যাচ্ছে।' বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের সভাপতিত্বে সমাবেশটি সঞ্চালনা করেন- ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন ও ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ছাত্রী হল, ইডেন মহিলা কলেজ, কলেজ অব অ্যাপস্নাইড হিউমেন সায়েন্সসহ ছাত্রলীগের বিভিন্ন ইউনিটের নারী নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।