রাজধানীতে ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে যুবক নিহত

প্রকাশ | ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
ঢাকার উত্তরার ৭ নম্বর সেক্টরের জসীমউদ্‌দীন সড়কের বিএনএস সেন্টারের সামনে ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে দেলোয়ার হোসেন (২৭) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন নিহতের ছোট ভাই আনোয়ার হোসেন (২৫)। ঘটনার বর্ণনা দিয়ে নিহত দেলোয়ার হোসেনের ছোট বোনের জামাই চা দোকানি হাবিবুর রহমান রাসেল যায়যায়দিনকে বলেন, নিহত দেলোয়ার হোসেন ঢাকার দক্ষিণখান এলাকায় থাকতেন। ওই এলাকার একটি বাড়ির কেয়ারটেকার হিসেবে কাজ করতেন। তার স্ত্রীর নাম শরীফা খাতুন। তাদের সংসারে রাইসা নামের তিন বছর বয়সি এক মেয়ে সন্তান আছে। হাবিবুর রহমান রাসেল বলেন, আমার শ্বশুর ও শাশুড়ি ঢাকার ডেমরা থানাধীন সারুলিয়ার দক্ষিণ টেংরার লাল শাহ মাজার এলাকার একটি ভাড়া করা বাসায় বসবাস করছিলেন। দ্রব্যমূল্যে ঊর্ধ্বগতিসহ নানা কারণে ঢাকায় বসবাস করা কঠিন হয়ে পড়েছে। তাই আমার শ্বশুর-শাশুড়ি গ্রামের বাড়িতে থাকার সিদ্ধান্ত নেন। সেই সিদ্ধান্ত চলতি মাসেই ভাড়া বাসা ছেড়ে দেন তারা। স্থায়ীভাবে গ্রামের বাড়িতে বসবাসের সিদ্ধান্ত নেন। সেই সিদ্ধান্ত মোতাবেক আমিও তাদের সহযোগিতা করতে যাই। রাত ১০টা থেকে বাসার মালামাল ময়মনসিংহ জেলার মুক্তাগাছা নেওয়ার জন্য একটি পিকআপে তোলা শুরু করি। মালামাল তোলার পর রওনা হতে রাত ১২টা বেজে যায়। আমার শ্বশুর-শাশুড়ি পিকআপের সামনের সিটে বসে ছিলেন। আর ছোট পিকআপের পিছনের দিকে মালামালের সঙ্গে বসে ছিলেন দেলোয়ার ও আনোয়ার দুই ভাই। তারা পেছনে বসে মোবাইল দেখছিলেন। তিনি বলেন, রাত আড়াইটার দিকে গাড়িটি উত্তরার ওই জায়গায় পৌঁছালে দুই ছিনতাইকারী দেলোয়ারের মোবাইলটি ছিনিয়ে নিয়ে যায়। দেলোয়ার সঙ্গে সঙ্গে পিকআপ থেকে লাফিয়ে নেমে এক ছিনতাইকারীকে জাপটে ধরে। এ সময় আরেক ছিনতাইকারী তাকে ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। না ছাড়লে ওই ছিনতাইকারী তখন দেলোয়ারকে ছুরিকাঘাত করে। তারপরেও যখন ছাড়ছিল না, ছিনতাইকারী দলের আরেক সদস্য সেখানে গিয়ে দেলোয়ারকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করতে থাকে। এমন পরিস্থিতিতে আনোয়ার তার ভাই দেলোয়ারকে বাঁচাতে তার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। দুই ভাই দুর্বল হয়ে মাটিতে পড়ে গেলে ছিনতাইকারীরা পালিয়ে যায়। এ সময় পিকআপের চালক, হেলপার ও বাবা-মা তাদের স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পুলিশ কেস দেখে তাদের অন্যত্র নিয়ে যেতে বলেন। পরে দেলোয়ারকে কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃতু্য হয়। পরে তার লাশ ঢাকার শেরেবাংলা নগর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায় পুলিশ। বিকালে পুলিশ লাশ হস্তান্তর করেছে। দেলোয়ারের বোন জামাই রাসেল আরও জানান, আহত আনোয়ারকে রাতেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি করা হয়। বুধবার বিকালে আনোয়ারকে হাসপাতাল থেকে বাসায় পাঠিয়েছেন চিকিৎসকরা। তবে সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ আনোয়ারের জ্ঞান ফেরেনি। এ ঘটনায় নিহতের বাবা আলাউদ্দিন মন্ডল বাদি হয়ে উত্তরা পশ্চিম থানায় অজ্ঞাত খুনিদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে এসআই (উপপরিদর্শক) শহীদুল ইসলামকে। তদন্তকারী কর্মকর্তা জানান, হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।