৩৫-এর বেশি হলে মাদ্রাসায় শিক্ষক নিয়োগ হবে না

প্রকাশ | ১৮ জুলাই ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি রিপোটর্
মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষক নিয়োগে ৩৫ বছরের বয়সসীমার বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হচ্ছে। এর আগে বয়সসীমা না রেখেই ‘বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের (কারিগরি ও মাদ্রাসা) জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা-২০১৮’ চ‚ড়ান্ত করা হয়েছিল। কিন্তু এতে বিতকর্ ওঠায় নীতিমালায় বয়সের বিষয়টি নতুন করে সংযোজন করা হচ্ছে। এর সঙ্গে শিক্ষকদের বদলির বিষয়টিও যুক্ত হচ্ছে খসড়া নীতিমালায়। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (মাদ্রাসা) রওনক মাহমুদ বলেন, ‘কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষক নিয়োগে বয়সসীমা ৩৫ বছর রাখা হচ্ছে। বেসরকারি স্কুল-কলেজের শিক্ষক নিয়োগ নীতিমালার মতোই থাকছে এতে। খসড়া চ‚ড়ান্ত করার পর সচিব, প্রতিমন্ত্রী এবং মন্ত্রী অনুমোদন দিলে নীতিমালাটি জারি করা হবে।’ সম্প্রতি নীতিমালাটির খসড়া অথর্ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের পর তিনি বলেছিলেন, ‘কারিগরি ও মাদ্রাসার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিও নীতিমালায় শিক্ষক নিয়োগে বয়সসীমা রাখা হচ্ছে না। কারণ, সাধারণ শিক্ষার সঙ্গে মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষার পাথর্ক্য রয়েছে। অভিজ্ঞ শিক্ষক নিয়োগ দেয়ার জন্যই বয়সের বাধা রাখা হয়নি।’ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ১২ জুন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ ‘বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের (স্কুল ও কলেজ) জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা-২০১৮’ জারি করে। ওই নীতিমালায় শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে বয়সসীমা নিধার্রণ করা হয় ৩৫ বছর। পাশাপাশি বদলির ব্যবস্থাও রাখা হয়। কিন্তু ‘বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের (কারিগরি ও মাদ্রাসা) জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা-২০১৮’ চ‚ড়ান্ত করা হয় বয়সসীমা নিধার্রণ না করেই। এতে বিতকর্ দেখা দেয়। প্রশ্ন ওঠে দেশের স্কুল-কলেজের শিক্ষকদের নিয়োগ পেতে বয়স ৩৫ বছর থাকবে, আর কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষকদের নিয়োগে কোনো বাধ্যবাধকতা থাকবে না, সমমানের পদে নিয়োগে এই নিয়ম অনৈতিক। কিন্তু এই সিদ্ধান্তে স্থির থাকতে পারেনি কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগ। বিষয়টি নিয়ে বিতকর্ উঠলে সেটা পরিবতর্ন করে নতুন করে বয়সসীমা ৩৫ আরোপ করার সিদ্ধান্ত নেয়। সম্প্রতি খসড়া চ‚ড়ান্ত করার কাজ করা হচ্ছে নতুন করে। এতে চাকরিতে প্রবেশে বয়সসীমা নিধার্রণ ছাড়া বদলির ব্যবস্থা থাকছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (মাদ্রাসা) রওনক মাহমুদ বলেন, ‘সরকার চাইলে যে কোনো সময় কোনো শিক্ষককে বদলি করতে পারবে, বদলি নীতিমালা করে।’ এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন ও অথর্) একেএম জাকির হোসেন ভ‚ঞা বলেন, ‘অথর্ মন্ত্রণালয় নীতিমালাটি অনুমোদন দিয়েছে। মাদ্রাসা ও কারিগরির ক্ষেত্রে কিছু পাথর্ক্য রয়েছে। সেগুলো ঠিক করে আগামী সপ্তাহে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।’ মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে জানা গেছে, দেশে মোট মাদ্রাসার সংখ্যা ৯ হাজার ১৩৭টি। মোট শিক্ষক এক লাখ ২৫ হাজার ৩৪৪ জন। এর মধ্যে দাখিল ও কামিল মাদ্রাসায় শিক্ষক রয়েছেন এক লাখ ১৯ হাজার ৫৮৭ জন, এবতেদায়ি শিক্ষক চার হাজার ৫২৯ জন এবং আইসিটি শিক্ষক রয়েছেন এক হাজার ২২৮ জন। মোট মাদ্রাসার মধ্যে এমপিওভুক্ত দাখিল-কামিল মাদ্রাসা সাত হাজার ৬১৮টি। অনুদানভুক্ত স্বতন্ত্র এবতেদায়ি এক হাজার ৫১৯টি। সম্প্রতি অনুদানভুক্ত এক হাজার ৫১৯টি মাদ্রাসাসহ আরও বেশ কিছু মাদ্রাসা অনুদান না পাওয়া এবং নন-এমপিও মাদ্রাসা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির দাবি জানিয়ে আসছে। অনুদানভুক্ত স্বতন্ত্র এবতেদায়ি মাদ্রাসা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের দাবি জানিয়ে আসছে দীঘির্দন থেকে।