কোটা নেতা রাশেদকে হত্যার হুমকি

প্রকাশ | ১৫ মার্চ ২০১৯, ০০:০০

তারেক মাহমুদ, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
মোহাম্মদ রাশেদ খান
'যত প্রকার হুমকি দেয়া হোক না কেন ছাত্রসমাজের অধিকার আদায়ের জন্য কাজ করে যাব। কোনো হুমকিতে পিছু হটব না ইনশাআলস্নাহ।' বৃহস্পতিবার দুপুরে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার মুরারীদহ গ্রামের নিজ বাড়িতে এসব কথা বলেন সম্প্রতি শেষ হওয়া ডাকসু নির্বাচনের পরাজিত জিএস প্রার্থী ও কোটা আন্দোলনের অন্যতম নেতা রাশেদ খান। এর আগে বুধবার সন্ধ্যার পর সন্ত্রাসীরা কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক মুহাম্মদ রাশেদ খানকে গুলি করে হত্যা করা হবে বলে হুমকি দেয়। নতুন করে কোন আন্দোলনে নেতৃত্ব দিলে হত্যা করা হবে বলে এদিন সন্ধ্যার পর ঝিনাইদহের পৌর এলাকার মুরারীদাহ গ্রামের বাড়ীতে গিয়ে দুই ব্যক্তি তার হুমকি দিয়ে আসে। এরপর থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রাশেদের মা সালেহা বেগম অসুস্থ্য হয়ে পড়েন। এসব সংবাদ শুনে ঢাকা থেকে বৃহস্পতিবার সকালে রাশেদ ঝিনাইদহের নিজ বাড়িতে যান। রাশেদের বড় বোন রুপালি খাতুন জানান, ছেলেকে হত্যার হুমকি শুনে মা অসুস্থ হয়ে পড়েন। বুধবার সন্ধ্যা রাতে ঝিনাইদহের ইসলামী ব্যাংক কমিনিউটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর বৃহস্পতিবার সকালে অসুস্থ অবস্থায় বাড়িতে আনা হয়েছে। রাশেদ খানের বড় বোন রুপালি খাতুন আরো জানান, বুধবার মাগরিবের নামাজের পর দুইজন অপরিচিত লোক তাদের বাসায় আসে। তারা কে জিজ্ঞেস করলে বলে উপরের নির্দেশে এসেছেন। তারা বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনে যাওয়ার পর নিষেধ করা হয়েছিল আর কোন আন্দোলনে যেন রাশেদ না যায়। তারপরও গেছে। এবার আর বাঁচতে পারবে না রাশেদ।' তাদের পরিচয় জানতে চাইলে তারা তা না জানিয়ে চলে যায়। এ খবরে তার মা জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। ইসলামী ব্যাংক কমিনিউটি হাসপাতালে নেওয়ার পর প্রায় আড়াই ঘন্টা পর তার জ্ঞান ফেরে। তার মা ছালেহা বেগম জানান, 'তারা আমাকে বলেছে তোমার ছেলেকে বোঝাও। নইলে বড় ধরনের ক্ষতি হয়ে যাবে। ঢাকা শহরের ২০/৩০ হাজার টাকায় অস্ত্র ও সন্ত্রাসী পাওয়া যায়। যে কেউ তোমার ছেলেকে মেরে ফেলে দিতে পারবে।' রাশেদ খাঁন জানান, আন্দোলনে নেতৃত্ব দিলে তাকে নাকি গুলি করে মেরে ফেলবে। এটা নাকি ওদের লাষ্ট ওয়ার্নিং। মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য রাজপথে ছিলেন, আছেন এবং থাকবেন। এতে যদি তাকে গুলি করে মেরেও ফেলা হয়, সেটিকে তিনি মেনে নিতে প্রস্তুত। রাশেদ আরো জানায়, কোটা সংস্কার আন্দোলনের সাথে জড়িতদের বিভিন্ন সময় হুমকি-ধামকি দেয়া হয়েছে। তার পরিবারকে হেনস্তা করার চেষ্টা করেছে। তারপরও তারা কিন্তু ছাত্রদের অধিকার আদায়ের জন্য সামনের দিকে এগিয়ে গিয়েছেন। ঝিনাইদহ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিলু মিয়া জানান, রাশেদের হত্যার হুমকির ব্যাপারে বিভিন্ন সূত্রে শুনেছেন। কিন্তু পরিবার পুলিশকে কিছু জানায়নি। তবে অপরিচিত কেউ বাড়িতে গেলে ঝিনাইদহ থানার পুলিশকে জানানোর পরামর্শ দেন এ পুলিশ কর্মকর্তা।