জনমনে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে :কেন্দ্রীয় ব্যাংক

নানা পদক্ষেপেও থামছে না রিজার্ভের ঘাটতি

প্রকাশ | ৩০ নভেম্বর ২০২৩, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
রিজার্ভ ধরে রাখতে সরকার বেশ কিছু পদক্ষেপ নিলেও ঘাটতি কাটছে না। বাংলাদেশ ব্যাংকের দেওয়া তথ্যে দেখা যাচ্ছে, প্রায় প্রতি মাসেই রিজার্ভের পরিমাণ আগের মাসের তুলনায় কমছে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, ডলারের আয় ও ব্যয়ের মধ্যে ভারসাম্য না থাকার কারণে প্রতি মাসে প্রায় এক বিলিয়ন ডলারের মতো ঘাটতি থাকছে। বিশ্ব ব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বলেন, 'বাজারে ডলারের যে অভাব রয়েছে সেটা আংশিক পূরণ করার জন্য প্রতি মাসে বাংলাদেশ ব্যাংক একশ' কোটি ডলার বিক্রি করছে। এভাবে বিক্রি চলতে থাকলে রিজার্ভ কমতেই থাকবে। আর এটা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে বলতে গেলে বলতে হবে যে, সেটা আসলে শূন্যের নিচে নামার সুযোগ নেই!' কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, সর্বশেষ নভেম্বরে মোট রিজার্ভের পরিমাণ ২৫ দশমিক ১৬ বিলিয়ন ডলার। আর আইএমএফ-এর প্রস্তাবিত বিপিএম৬ পদ্ধতি অনুসরণ করে করা হিসাব অনুযায়ী, রিজার্ভ ১৯ দশমিক ৫২ বিলিয়ন ডলার। এদিকে, চলতি বছরের শুরু থেকে নভেম্বর পর্যন্ত রিজার্ভের পরিমাণ বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, জানুয়ারি মাসে মোট রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৩২ দশমিক ২২ বিলিয়ন ডলার এবং সর্বশেষ নভেম্বরে রিজার্ভ ২৫ দশমিক ১৬ বিলিয়ন ডলারে এসে দাঁড়িয়েছে। এই এগারো মাসের মধ্যে শুধু জুন মাসেই মোট রিজার্ভের পরিমাণ আগের মাসের তুলনায় কিছুটা বেড়েছিল। বাকি মাসগুলোতে ক্রমান্বয়ে রিজার্ভের পরিমাণ কমেছে। এর মধ্যে সেপ্টেম্বরে রিজার্ভের পরিমাণ প্রায় তিন বিলিয়ন ডলার কমেছে। এদিকে গত জুন মাস থেকে আন্তর্জাতিক মুদ্রা সংস্থা আইএমএফ-এর নির্ধারিত হিসাব পদ্ধতি যা ব্যালেন্স অব পেমেন্ট ম্যানুয়াল-সিক্সথ এডিশন বা সংক্ষেপে বিপিএম৬ অনুযায়ী বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের গণনা শুরু হয়। জুন মাসে এই পদ্ধতি অনুযায়ী, রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ২৪ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন ডলার। নভেম্বরে এটি ১৯ দশমিক ৫২ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়ায়। এই ছয় মাসে রিজার্ভ প্রায় প্রতিবারই আগের মাসের তুলনায় কমেছে। বলা হচ্ছে, বিপিএম অনুযায়ী রিজার্ভের পরিমাণ যে ১৯ বিলিয়ন ডলারের কিছু বেশি দেখানো হচ্ছে সেটি আসলে আরও কমবে। কারণ এর থেকে আইএমএফ-এর এসডিআর খাতে থাকা অর্থ, ব্যাংকগুলোর বৈদেশিক মুদ্রা ক্লিয়ারিং হিসাবে থাকা অর্থ এবং আকুর বিল পরিশোধ বাবদ অর্থ বাদ দিলে রিজার্ভ আরও কমে আসবে। অর্থনীতিবিদ আহসান এইচ মনসুর বলেন, 'বর্তমান সময়ের সমস্যা হচ্ছে সরকারের অনেক অপরিশোধিত বিল রয়েছে-যেগুলো এখনো শোধ করা হয়নি। এগুলো পুরোটা শোধ করা হলে রিজার্ভ হয়তো অনেক কমে যাবে।' তবে এক্ষেত্রে দ্বিমত পোষণ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রতিষ্ঠানটির মুখপাত্র মেজবাউল হক বলেন, দুটি পদ্ধতিতে রিজার্ভ হিসাব করে বাংলাদেশ ব্যাংক। একটা হচ্ছে গ্রোস বা মোট, অর্থাৎ যে পরিমাণ বিদেশি সম্পদ হাতে আছে, যা নভেম্বরে ২৫ দশমিক ১৬ বিলিয়ন। আরেকটা হচ্ছে বিপিএম৬ অনুযায়ী হিসাব যা ১৯ দশমিক ৫২ বিলিয়ন। তিনি আরও বলেন, 'এখন আপনি যদি এর থেকে আবার আরও কিছু বাদ দিতে চান, তাহলে সেটার বেসিসটা কী? লায়াবিলিটিস (দায়) তো আমার কত লায়াবিলিটি আছে, সেটা কি আমি সব হিসাব করব? আইএমএফ এর কাছে যে ডিপোজিটটা আছে সেটা কি আমার টাকা না?' মেজবাউল হক মনে করেন, আইএমএফ-এর পদ্ধতি অনুসরণ করে রিজার্ভের হিসাবের পরও মানুষকে আসলে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। কারণ আইএমএফর পদ্ধতি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত একটি পদ্ধতি। তারপরও কেন প্রশ্নটা আসছে? অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বলেন, ব্যাংকে যে অর্থ থাকে তা হিসাবধারীর নিজের টাকা হলেও তার যে দায় আছে সেগুলো ব্যবহার করা যায় না। তাই ব্যবহারযোগ্য টাকাটাই আসলে হিসাবধারীর মূল অর্থ বলে বিবেচিত হয়। একই পদ্ধতি রিজার্ভের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। তিনি আরও বলেন, রিজার্ভের পরিমাণ গড়ে প্রতি মাসে এক বিলিয়ন করে কমার কারণ হচ্ছে ডলারের আয় ও ডলারের ব্যয়ের মধ্যে ভারসাম্যহীনতা। পর্যাপ্ত যোগান না থাকার কারণে আমদানি কমালেও তা রিজার্ভ ধরে রাখতে সহায়ক হয়নি। বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক বলেন, করোনার পর ডলারের চাহিদা অনেক কমে গিয়েছিল। তবে সেসময় তৈরি পোশাক শিল্পের রপ্তানি চালু ছিল। ফলে রপ্তানি আয় ও প্রবাসী আয়ের প্রবাহ চালু ছিল। এই কারণে রিজার্ভ তখন বেড়েছে। তিনি আরও বলেন, করোনা পরবর্তী সময়ে অর্থনৈতিক কার্যক্রম স্বাভাবিক হতে শুরু করলে সব কিছু কেনার প্রবণতা বাড়ে। তখন রিজার্ভ খরচ হওয়া শুরু হয়। এরপর ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে পণ্যের সাপস্নাই-চেইন ব্যাহত হওয়ায় আন্তর্জাতিক বাজারে সব পণ্যের দাম কয়েকগুণ বেড়ে যায়। বেশি দামে পণ্য কেনার কারণে রিজার্ভের উপর চাপ পড়ে। তিনি আরও বলেন, 'নরমাল সময়ে যে ফার্টিলাইজার ২০০-২৫০ ডলার, সেই ফার্টিলাইজার আমরা কিনলাম হচ্ছে ১০৫০ ডলার দিয়ে। রিজার্ভের রিকোয়ারমেন্ট তখন বাড়ল।' এর পরবর্তী সময়ে যুক্তরাষ্ট্রে মুদ্রাস্ফীতির কারণে সুদের হার দশমিক ৫ শতাংশ থেকে বেড়ে ৫.৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। এর কারণেও বাংলাদেশে রিজার্ভে টান পড়েছে। মেজবাউল হক বলেন, ডলারের বিনিময় হারে বড় ধরনের পার্থক্য হয়ে যাওয়ার কারণে ব্যাংকগুলো স্বল্প মেয়াদে যে ঋণ নিয়েছিল লোকসান কমাতে সেগুলো খুব দ্রম্নত শোধ করার চেষ্টা করেছে। এর ফলে একদিকে রিজার্ভের উপর যেমন টান পড়েছে অন্যদিকে আবার লায়াবিলিটি পেমেন্ট বা ঋণের পরিমাণ কমে এসেছে। লায়াবিলিটি পেমেন্ট কমতে কমতে সেপ্টেম্বরে কিন্তু আমাদের ৫০ মিলিয়নে দাঁড়াবে, এক্ষেত্রে কিন্তু একটা বড় ধরনের পজিটিভ জিনিস চিন্তা করছি। অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বলেন, বাংলাদেশে আমদানি ব্যয় ও ঋণ পরিশোধের জন্য যে পরিমাণ ডলার ব্যয় হয়, তার তুলনায় যদি জোগান না বাড়ে তাহলে রিজার্ভের উপর টান থাকবে। আহসান এইচ মনসুর বলেন, বাংলাদেশে বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে চিন্তা করতে হবে যে কীভাবে তহবিলের 'হার্ড ফ্লো' বাড়িয়ে ভারসাম্য আনা যায়। সরকার এখন স্বল্প মেয়াদে নানা ডিল বা চুক্তি করছে। যেটি পরিশোধ করতে গেলে রিজার্ভের উপর চাপ পড়ে যাচ্ছে। এখান থেকে বের হতে হলে ঋণদাতাদের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। তিনি বলেন, বাজেটেও কিছু সংকোচনমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। ২৩ অর্থবছরে সরকার টাকা ছাপানোর যে পদক্ষেপ নিয়েছিল সেটি থেকে সরে আসতে হবে। চলতি অর্থবছরের ফেব্রম্নয়ারি-মার্চ মাসে এই চাপটি আবার আসবে। তখন এটি ধরে রাখা গেলে সেটি অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। অর্থনীতিবিদ আহসান এইচ মনসুর বলেন, অর্থনীতিতে কিছু ইতিবাচক পরিবর্তন হয়েছে। যেমন চলতি হিসাব এখন অনেকটা ভারসাম্যপূর্ণ একটা অবস্থায় চলে এসেছে। বছর খানেক আগেও এই হিসাব ঋণাত্মক ছিল। আমদানি কমিয়ে আনার মাধ্যমে চলতি হিসাবে ভারসাম্য ফেরানো হয়েছে। এটা একটা ইতিবাচক দিক। এছাড়া সুদের হার আমানতের ক্ষেত্রে ৬% এবং ঋণের ক্ষেত্রে ৯% এর জায়গা থেকে সরে এসেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংক সুদহার বাড়ানোর নতুন নির্দেশনা দিয়েছে। এই নির্দেশনা অনুযায়ী, ঋণের সুদের হার এখন সর্বোচ্চ ১১.১৮ শতাংশ হতে পারবে বলে জানানো হয়েছে। অর্থনীতিবিদ আহসান এইচ মনসুর বলেন, সুদ-হার বাড়ানোর পর হয়তো ডলারের মজুতে একটা ভারসাম্য আসতে পারে। বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বলেন, সরকার বিভিন্ন উৎস থেকে অর্থ সংগ্রহের চেষ্টা করছে। এরমধ্যে আইএমএফ-এর দ্বিতীয় কিস্তি ছাড় হলে সেখানে ৬৭০ মিলিয়ন ডলার পাওয়ার কথা রয়েছে। বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে ৫০০ মিলিয়ন ডলার নগদ সহায়তা ছাড় করানোর বিষয়ে আলোচনা চলছে এবং চলতি অর্থবছরের শেষ নাগাদ সেটা পাওয়ার আশা রয়েছে। এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক বা এডিবি থেকেও একই ধরনের অর্থায়নের জোগানের চেষ্টা করা হচ্ছে। এছাড়া ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক-আইডিবি এবং বিভিন্ন দ্বিপক্ষীয় সূত্র যেমন সৌদি আরবের কাছ থেকে ২০০ কোটি ডলারের মতো সহায়তা, জাপান, জাইকার মতো উৎস থেকে অর্থ সংগ্রহের চেষ্টা করা হচ্ছে। তা ছাড়া গত অর্থবছরে রপ্তানি আয়ের যে ৯ বিলিয়ন ডলার আসেনি, তার সিংহভাগ এই অর্থবছরে নির্বাচন সংক্রান্ত অনিশ্চয়তা শেষ হয়ে গেলে, জানুয়ারির পর রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরে আসলে এই ডলারও ফেরত আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এসব অর্থ পাওয়া গেলে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে আট-নয় মাসের মতো একটা সময় পাওয়া যাবে। একইসঙ্গে বিশ্ব অর্থনৈতিক পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলেও বাংলাদেশ আশাবাদী। এরই মধ্যে আমেরিকা ও ইউরোপের মতো বড় বড় অর্থনীতিতে সুদের হার ও মুদ্রাস্ফীতি কমতে শুরু করেছে। সুদের হার কমলে বাংলাদেশের বহির্বাণিজ্যে আর্থিক খাতে যে বড় ঘাটতি আছে সেটা পাল্টে যাবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যাংকের একটা পূর্বাভাস আছে যে, মার্চের মধ্যে তাদের মুদ্রাস্ফীতির হার দুই শতাংশের মধ্যে চলে আসবে। যুক্তরাষ্ট্রের মুদ্রাস্ফীতির হার এরইমধ্যে ক্রমান্বয়ে কমতে শুরু করেছে। তারা মনে করছে, খুব দ্রম্নতই এই হার আর বাড়ার সম্ভাবনা নেই এবং এটি আরও কমে আসবে। এমন অবস্থায় আন্তর্জাতিক মুদ্রা বাজার আবার সক্রিয় হবে এবং বাংলাদেশ এখন যে সুদের হার বাড়িয়েছে সেটি কার্যকর হবে। সে সময় ডলার প্রবাহও স্বাভাবিক হয়ে আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সব মিলিয়ে আগামী বছরের জুন মাস নাগাদ সব কিছু স্বাভাবিক হয়ে অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করবে বলে আশা করা হচ্ছে। জনমনে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে : কেন্দ্রীয় ব্যাংক এদিকে, বুধবার এক বিবৃতিতে বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ১৬ বিলিয়ন ডলারের নিচে বলে জনমনে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। এতে আরও বলা হয়, গ্রোস বা মোট রিজার্ভ স্থানীয় বিনিয়োগসহ হিসাবায়ন হয়। অন্যদিকে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী স্থানীয় বিনিয়োগ ছাড়া হিসাবায়ন হয়। বিপিএম-৬ পদ্ধতিতে হিসাব করা রিজার্ভ তাৎক্ষণিক ব্যবহারযোগ্য ও গ্রোস রিজার্ভ বিনিয়োগ আদায় সাপেক্ষে ব্যবহারযোগ্য। বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংকের গ্রোস রিজার্ভ ২৫ দশমিক ১৬ বিলিয়ন ডলার ও বিপিএম-৬ পদ্ধতিতে হিসাব করা রিজার্ভ ১৯ দশমিক ৫২ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ বিপিএম-৬ অনুযায়ী প্রদর্শিত সম্পূর্ণ রিজার্ভই ব্যবহারযোগ্য। ভবিষ্যতে জনমনে বিভ্রান্তি এড়াতে গ্রোস ও বিপিএম-৬ রিজার্ভ হিসাবের তথ্য পরিবেশনের ক্ষেত্রে অধিকতর সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত মর্মে বাংলাদেশ ব্যাংক মনে করে। সূত্র: বিবিসি বাংলা ডলার কিনছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক: এদিকে, আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশের রিজার্ভ বাড়াতে ডলার খুঁজছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গত সোম ও মঙ্গলবার আর্থিক সংকটে থাকা ইসলামী ব্যাংক থেকে সাত কোটি ডলার কেনে বাংলাদেশ ব্যাংক। ইসলামী ব্যাংক থেকে ডলার কেনার বিষয়টি স্বীকার করে দেশের এক ইংরেজি গণমাধ্যমকে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক বলেন, গত সোমবার পাঁচ কোটি ডলার ও মঙ্গলবার দুই কোটি ডলার কেনা হয়েছে। এ ডলারগুলো কেনা হয়েছে আন্তঃব্যাংক বিনিময় হারে। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোয় অতিরিক্ত ডলার থাকলে আমরা তাদের কাছ থেকে তা কিনব। এ ধরনের লেনদেন স্বাভাবিক। আমাদের রিজার্ভ বাড়াতে হবে। সংশ্লিষ্টরা জানান, ইসলামী ব্যাংক এমন এক সময় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে সাত কোটি ডলার বিক্রি করেছে যখন আমদানির জন্য এলসি খুলতে ব্যাংকটি হিমশিম খাচ্ছে। গত ১ থেকে ২৪ নভেম্বরের মধ্যে ইসলামী ব্যাংকে রেমিট্যান্স এসেছে ২৮ কোটি ডলার। প্রায়ই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে নূ্যনতম তারল্যের স্তর বজায় রাখতে ব্যর্থ হওয়া শরিয়াহভিত্তিক এই ব্যাংকটি ডলারপ্রতি প্রায় ১১৬ টাকায় রেমিট্যান্স সংগ্রহ করে। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে ১১০ টাকা ৫০ পয়সায় ডলার বিক্রি করে ইসলামী ব্যাংক সাড়ে ৩৮ কোটি টাকা লোকসান দেয়। দেশের ৬১টি তালিকাভুক্ত বা তফসিলি ব্যাংকের মধ্যে সবচেয়ে বড় এই ব্যাংকের জন্য এটি বিশাল ধাক্কা।