ভাসানচরে রোহিঙ্গা স্থানান্তরে সহায়তা দেবে জাতিসংঘ

প্রকাশ | ২৫ মার্চ ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
সীমান্তে মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থী -ফাইল ছবি
কক্সবাজারের শিবির থেকে সরিয়ে রোহিঙ্গাদের নোয়াখালীর হাতিয়ার ভাসানচরে স্থানান্তরে বাংলাদেশকে সহায়তা করার পরিকল্পনা করছে জাতিসংঘ। এ-সংক্রান্ত একটি নথির বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। তবে এই স্থানান্তর চান না অনেক রোহিঙ্গা। তাই এতে নতুন সংকট তৈরি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে মানবাধিকার সংস্থাগুলো। ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের রোহিঙ্গা-অধু্যষিত রাখাইন রাজ্যে সামরিক অভিযান শুরু হলে প্রায় সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশের কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়ায় পালিয়ে আসে। সেখানে আগে থেকে অবস্থান করা আরও প্রায় চার লাখ রোহিঙ্গাসহ ১১ লাখ বাড়তি মানুষ এখন উপজেলা দুটির শরণার্থীশিবিরে ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে বসবাস করছে। কক্সবাজারের ওপর চাপ কমাতে রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তরের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। রোহিঙ্গাদের কক্সবাজার থেকে ভাসানচরে নিতে নৌকাযোগে কয়েক ঘণ্টা সময় লাগবে। তবে মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, রোহিঙ্গাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে ভাসানচরে নিলে নতুন সংকট দেখা দেবে। তারা বলছে, দ্বীপটি বন্যাপ্রবণ, ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কাও অনেক। এ ছাড়া জোয়ারের সময় দ্বিপটি পুরোপুরি নিমজ্জিত হয়। এ বিষয়ে সহায়তা দিতে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি একটি নথি তৈরি করেছে। তারা একটি বিস্তারিত পরিকল্পনা বাংলাদেশ সরকারের কাছে সরবরাহ করেছে। যেখানে বলা হয়েছে, কয়েক সপ্তাহের মধ্যে হাজার হাজার রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে ওই দ্বীপে পৌঁছাতে কী ধরনের সহায়তা দেওয়া হবে। এই নথিতে মানবিক নীতি সমুন্নত রেখে স্বেচ্ছায় যেতে আগ্রহীদের ভাসানচরে স্থানান্তর করা হয়-সেই কথা বলা হয়েছে। রয়টার্স বলছে, গত ১২ মে তৈরি করা 'কনসেপ্ট অব অপারেশনস' শীর্ষক ওই নথিতে বলা হয়েছে, ভাসানচরে যেতে আগ্রহী রোহিঙ্গাদের চিহ্নিতকরণ, স্থানান্তর ও টেকসই বসতির জন্য ৮৬ লাখ থেকে ১ কোটি ৯০ লাখ ডলার তহবিলের জন্য বিশ্বের কাছে আবেদন জানানো হতে পারে। এর আগে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর জানায়, কক্সবাজারের শিবির থেকে সরিয়ে রোহিঙ্গাদের নোয়াখালীর হাতিয়ার ভাসানচরে স্থানান্তরে বাংলাদেশ সরকারের নেওয়া উদ্যোগকে স্বাগত জানায় তারা। তবে সংস্থাটি বলছে, জোর করে রোহিঙ্গাদের সেখানে পাঠানো যাবে না। স্বেচ্ছায় রোহিঙ্গারা সেখানে যেতে চাইলে স্থানান্তর-প্রক্রিয়ায় আপত্তি থাকবে না জাতিসংঘের। কক্সবাজারের শিবির পরিদর্শন শেষে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে এই মন্তব্য করেন জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) সুরক্ষাবিষয়ক সহকারী হাইকমিশনার ভলকার টার্ক।