আরিফকে সমথর্ন দিয়ে সরে দঁাড়ালেন সেলিম

প্রকাশ | ২০ জুলাই ২০১৮, ০০:০০

সিলেট অফিস
বৃহস্পতিবার সিলেট সিটি করপোরেশন নিবার্চনে বিএনপির প্রাথীর্ আরিফুল হক চৌধুরীকে সমথর্ন জানিয়ে নিজের প্রাথির্তা প্রত্যাহার করে সংবাদ সম্মেলনে বক্তৃতা করেন বদরুজ্জামান সেলিম Ñযাযাদি
সিলেট সিটি করপোরেশন নিবার্চনে বিএনপির ‘বিদ্রোহী’ মেয়রপ্রাথীর্ বদরুজ্জামান সেলিম দল মনোনীত প্রাথীর্ আরিফুল হক চৌধুরীকে সমথর্ন দিয়ে নিবার্চন থেকে সরে দঁাড়িয়েছেন। বৃহস্পতিবার বিকাল পৌনে ৩টার দিকে আরিফুল হক চৌধুরীর বাসভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন করে বদরুজ্জামান সেলিম নিবার্চন থেকে সরে যাওয়ার কথা জানান। বিএনপির ‘বিদ্রোহী’ মেয়রপ্রাথীর্ বদরুজ্জামান সেলিম বলেন, দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও বিএনপি মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নিদেের্শ তিনি নিবার্চন থেকে সরে গেলেন। একইসঙ্গে দল মনোনীত প্রাথীর্ আরিফুল হক চৌধুরীকে সমথর্ন করছেন। ধানের শীষে ভোট দিয়ে ৩০ জুলাই বিএনপির প্রাথীের্ক জয়যুক্ত করার আহŸান জানাচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘আমি আমার মায়ের নিদেের্শ মেয়র পদেপ্রাথীর্ হয়েছিলাম। এখন মায়ের সম্মতি নিয়েই নিবার্চন থেকে সরে দঁাড়ালাম। বক্তব্য দেয়ার সময় সেলিমের পাশেই তার মা ও স্ত্রী উপস্থিত ছিলেন।’ এ সময় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান বলেন, ‘সেলিম ও আরিফের নিরাপত্তা চাই। কারণ আজও সেলিমকে পুলিশ তুলে নেয়ার চেষ্টা করেছে। কিন্তু বিএনপির কৌশলের কাছে পুলিশ পরাজিত হয়।’ আমান বলেন, সেলিম নিবার্চন থেকে সরে দঁাড়ানোর পর থেকেই অটোমেটিকভাবে মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের পদ ফিরিয়ে দেয়ার নিদের্শ দিয়েছেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাজাহান, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদীর, কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য নাজিম উদ্দিন আলম, কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য আরিফুল হক চৌধুরী, বিএনপির ইসলামী ঐক্যজোটের একাংশের চেয়ারম্যান ও নেজামে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা আব্দুর রকিব, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাক, ডা. শাহরিয়ার হোসাইন, সাবেক এমপি কলম উদ্দিন মিলন, মহানগর বিএনপির সভাপতি মো. নাসিম হোসাইন, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদ, মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আজমল বখত সাদেক, বিএনপি নেতা মহবুব চৌধূরী, ইমরান আহমদ চৌধূরী, জিয়াউল গণি আরেফিন জিল্লুর, মিফতা সিদ্দিকী প্রমুখ। দুপুর দেড়টার দিকে নগরজুড়ে খবর রটে যায় নিবার্চন থেকে সরে দঁাড়াচ্ছেন মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও দলের বিদ্রোহী মেয়রপ্রাথীর্ বদরুজ্জামান সেলিম। এমন খবর ছড়িয়ে পড়ার পরপরই মহানগর পুলিশ ও র‌্যাবের একাধিক দল সেলিমের বাসার সামনে গাড়ি নিয়ে অবস্থান নেয়। এর আগে বুধবার দিনগত রাতে সেলিমের বাসায় গিয়েছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি একটি দল। বুধবার রাতে সেলিমের শাহী ঈদগাহের হাজারীবাগস্থ বাসায় যান দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান এবং কেন্দ্রীয় সদস্য নাজিম উদ্দিন আলম। তারা সেলিমের মায়ের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন এবং বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। আলোচনার একপযাের্য় নিবার্চন নিয়ে কথা উঠলে সেলিমকে নিবার্চন থেকে সরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেন কেন্দ্রীয় নেতারা। তারা বলেন, ‘তুমি দলের লোক, তোমাকে দলে ফিরিয়ে আনতেই আমরা এসেছি।’ এ সময় বিএনপির প্রাথীর্ আরিফুল হক চৌধুরীও সেলিমের বাসায় উপস্থিত হন। তখন তিনিও বদরুজ্জামান সেলিমকে নিবার্চন থেকে সরে যাওয়ার ব্যাপারে অনুরোধ করেন। কিন্তু সেলিম নিবার্চনের ব্যাপারে তাদের কোনো সিদ্ধান্ত জানাননি। পরে একসঙ্গে সেলিমের বাসায় রাতের খাবার খেয়ে ১২টার দিকে বেরিয়ে যান আরিফসহ বিএনপি নেতারা। এ ব্যাপারে বদরুজ্জামান সেলিম বলেন- আমান উল্লাহ আমান এবং নাজিম উদ্দিন আলমের সঙ্গে তার দীঘির্দনের সম্পকর্। রাজনৈতিক সম্পকের্র পাশাপাশি তাদের সঙ্গে তার পারিবারিক সম্পকর্ তৈরি হয়েছে। তারা সিলেটে এসেছেন। তাই রাতের খাবার খেতে তার বাসায় আসেন। এ সময় আরিফুল হক চৌধুরীও উপস্থিত হন। আলাপকালে তারা তাকে নিবার্চন থেকে সরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। কিন্তু তিনি সেটি করতে পারবেন না বলে তাদের জানিয়ে দেন। কিন্তু সেলিমের রাতের মন্তব্য দুপুরে পাল্টে যায়। এর আগে বদরুজ্জামান সেলিম আরিফের ব্যাপারে বিভিন্ন রকম অভিযোগ তোলেন। আরিফুল হক চৌধুরীকে দলের জন্য ক্ষতিকারক, দলের সুবিধাভোগী হিসেবেও উল্লেখ করেন। আরিফকে দেয়া দলের মনোনয়ন মেনে নিতে পারেননি বদরুজ্জামান সেলিম। নাগরিক কমিটির ব্যানারে মেয়রপদে প্রাথীর্ হন তিনি।