ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত

কমিউনিটি ক্লিনিকের জন্য কেনা হচ্ছে ১৫০ কোটি টাকার ওষুধ

প্রকাশ | ০১ মার্চ ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
দেশের ১৪ হাজার ২৫০টি কমিউনিটি ক্লিনিকের জন্য সরকারি প্রতিষ্ঠান এসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেড থেকে সরাসরি ১৫০ কোটি টাকার ওষুধ কিনবে সরকার। অন্যদিকে, স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বাজার থেকে ৪৩৮ কোটি ৯১ লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ টাকার ইউরিয়া, ডিএপি সার ও ফসফরিক অ্যাসিড এবং ৪২৪ কোটি ৫৪ লাখ ৩৫ হাজার টাকার তেল, ডাল ও গম কিনতে যাচ্ছে সরকার। বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলনকক্ষে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এ সংক্রান্ত পৃথক প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান সাংবাদিকদের জানান, দেশের ১৪ হাজার ২৫০টি কমিউনিটি ক্লিনিকে ওষুধ সরবরাহের জন্য কমিউনিটি বেইজড হেলথ কেয়ার (সিবিএইচসি) অপারেশনাল পস্ন্যানের ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে জিওবি (উন্নয়ন) খাতের আওতায় সরকারি প্রতিষ্ঠান এসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেড থেকে সরাসরি ক্রয়পদ্ধতিতে (ডিপিএম) ওষুধ ক্রয়ের প্রস্তাব। এতে ব্যয় হবে ১৪৯ কোটি ৯৯ লাখ ৯৩ হাজার ১৯২ টাকা। এর আগে সকালে অর্থনৈতিক বিষয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির তৃতীয় সভায় দুটি প্রস্তাবের নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এর মধ্যে মশক নিধন কার্যক্রম নিরবচ্ছিন্ন রাখতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন কর্তৃক সরাসরি ক্রয়পদ্ধতিতে কীটনাশক আমদানির নীতিগত অনুমোদন। এদিকে, স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বাজার থেকে ৪৩৮ কোটি ৯১ লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ টাকার ইউরিয়া, ডিএপি সার ও ফসফরিক অ্যাসিড কেনার অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এর মধ্যে ২৫৩ কোটি ৪৪ লাখ টাকার ডিএপি সার। ১২২ কোটি ৫৫ লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ টাকার ইউরিয়া সার এবং ৬২ কোটি ৯২ লাখ টাকায় ফসফরিক অ্যাসিড রয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান সাংবাদিকদের জানান, রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির আওতায় জি টু জি পদ্ধতিতে সৌদি আরবের মা আদেন থেকে দ্বিতীয় লটের ৪০ হাজার মেট্রিক টন ডিএপি সার কেনার অনুমোদন। এতে মোট ব্যয় হবে ২৫৩ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। প্রতি মেট্রিক টনের দাম পড়বে ৫৭৬ মার্কিন ডলার। যা আগে ছিল ৫৮৯ মার্কিন ডলার। তিনি বলেন, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড (কাফকো) বাংলাদেশের কাছ থেকে ১৪তম লটে ৩০ হাজার মেট্রিক টন ব্যাগড গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার কিনবে সরকার। এতে মোট ব্যয় হবে ১২২ কোটি ৫৫ লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ টাকা। প্রতি মেট্রিক টনের দাম পরবে ৩৭১.৩৭৫ মার্কিন ডলার। যা আগে ছিল ৩১৬. ৬২৫ মার্কিন ডলার। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ১০ হাজার মেট্রিক টন ফসফরিক অ্যাসিড কেনার অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এতে মোট ব্যয় হবে ৬২ কোটি ৯২ লাখ টাকা। প্রতি মেট্রিক টনের দাম পড়বে ৫৭২ মার্কিন ডলার। যা আগে ছিল ৫৮২ ডলার। প্রধান সরবরাহকারী বা প্রস্তুতকারক চায়নার জুনজুয়াই ইকো টেকনোলজি কোম্পানি লিমিটেড। ঢাকার প্রতিনিধি হিসেবে মেসার্স বেস্ট ইস্টার্ন সরবরাহ করবে বলেও জানান এই কর্মকর্তা। অন্যদিকে, স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বাজার থেকে ৪২৪ কোটি ৫৪ লাখ ৩৫ হাজার টাকার তেল, ডাল ও গম কিনতে যাচ্ছে সরকার। এর মধ্যে ১৭৪ কোটি ৬৬ লাখ ৯০ হাজার টাকা দিয়ে সয়াবিন তেল কেনা হচ্ছে। আর ৮৩ কোটি ১২ লাখ টাকার মসুর ডাল এবং ১৬৬ কোটি ৭৫ লাখ টাকার গম কেনা হবে। সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি এই তেল, ডাল ও গম কেনার অনুমোদন দিয়েছে। সচিব সাঈদ মাহবুব খান জানান, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে সিঙ্গাপুরের প্রতিষ্ঠান এমএস এগ্রো কট ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড থেকে ৫০ হাজার মেট্রিক টন গম কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এই গম কিনতে মোট ব্যয় হবে ১৬৬ কোটি ৭৫ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। প্রতি মেট্রিক টন গমের মূল্য পড়বে ৩০৩ দশমিক ১৬ ডলার। আগের ক্রয় মূল্য ছিল ৩১৫ দশমিক ২৯ ডলার। এদিকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) জন্য স্থানীয়ভাবে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে ৮ হাজার মেট্রিক টন মসুর ডাল কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়। রাজশাহীর নাবিল নবা ফুডস লিমিটেড থেকে এই মসুর ডাল কিনতে মোট খরচ হবে ৮৩ কোটি ১২ লাখ টাকা। প্রতি কেজি মসুর ডালের দাম পড়বে ১০৩ টাকা ৯০ পয়সা। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আরও এক প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে স্থানীয় উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে এক কোটি ১০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কেনার অনুমোন দেওয়া হয়েছে। সিটি এডিবল অয়েল লিমিটেড থেকে এই তেল কিনতে মোট ব্যয় হবে ১৭৪ কোটি ৬৬ লাখ ৯০ হাজার টাকা। আর প্রতি লিটারের জন্য খরচ হবে ১৫৮ টাকা ৭৯ পয়সা। আগের ক্রয় মূল্য ছিল ১৬৫ টাকা ২৫ পয়সা। এ ছাড়া এডিবির ঋণ সহায়তায় এবং বাংলাদেশ সরকারের আর্থিক সহায়তায় বাস্তবায়নাধীন গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া-কোটালিপাড়া উপজেলার জলাবদ্ধতা নিরসনে সমন্বিত পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা বাস্তবায়ন শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় প্রাতিষ্ঠানিক শক্তিশালীকরণ এবং প্রকল্প ব্যবস্থাপনা শীর্ষক পরামর্শক সেবা কাজ কোয়ালিটি অ্যান্ড কস্ট বেইজড সিলেকশন (কিউসিবিএস) পদ্ধতিতে ক্রয়ের ক্ষেত্রে পিপিআর - ২০০৮ এর ধারা ১১৭ এর উপধারা ২৪(খ) মোতাবেক গুণ ও ব্যয়ের ক্ষেত্রে গুরুত্ব (কোয়ালিটি টু কস্ট রেসিও) যথাক্রমে শতকরা ৯০ এবং শতকরা ১০ নির্ধারণে সিসিইএ-এর নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।