নতুন বেতন কাঠামো বাস্তবায়ন দাবি
গাজীপুরে সড়ক অবরোধ করে শ্রমিক বিক্ষোভ পুলিশি বাধায় ছত্রভঙ্গ
প্রকাশ | ১০ মার্চ ২০২৪, ০০:০০
শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি
গাজীপুরের শ্রীপুরে বেতন বাড়ানো ও নতুন বেতনকাঠামো বাস্তবায়নের দাবিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন শ্রমিকরা। এ সময় মহাসড়কের দু'পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। আটকা পড়েন বিভিন্ন কারখানা ও অফিসে কর্মরত হাজার হাজার মানুষ। তবে অবরোধের সময় পুলিশ লাঠিপেটা ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। শ্রমিকরাও পাল্টা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। ঘণ্টা দুয়েক পর পুলিশ শ্রমিকদের সরিয়ে দিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
শনিবার সকালে উপজেলার জৈনাবাজার এলাকার ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে এই বিক্ষোভ করেন এএ ইয়াং মিলস্ লিমিটেড কারখানার শ্রমিকরা। শ্রমিকরা দাবি করেন, পুলিশের লাঠিপেটায় কয়েকজন শ্রমিকের পাশাপাশি পথচারীরা আহত হয়েছেন।
এএ ইয়াং মিলস্ লিমিটেড কারখানার আন্দোলনরত শ্রমিকরা অভিযোগ করে বলেন, আশপাশের সব কারখানায় বেতন বাড়িয়েছে। এখানকার বেতন আগের মতোই রয়ে গেছে। বেতন কম দেওয়া হয়, তাও সময়মতো দেওয়া হয় না। প্রতি মাসের ১২ তারিখের আগে বেতন দেওয়া হয় না। বিষয়টি সমাধানের জন্য এএ ইয়াং মিলস্ লিমিটেড কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলার
জন্য শ্রমিকরা গেলেও তারা গুরুত্ব দেননি।
আন্দোলনরত শ্রমিক রিয়াজ উদ্দিন বলেন, সরকারিভাবে মজুরি নূ্যনতম ১২ হাজার ৫শ' টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু তাদের কারখানা কর্তৃপক্ষ সে অনুযায়ী বেতন পরিশোধ করছে না। ফলে নতুন বেতন কাঠামোর দাবিতে তারা রাস্তায় নেমেছেন।
আন্দোলনকারী নাসিমা বলেন, তিন মাস ধরে বলা হচ্ছে নতুন নিয়মে বেতন দেওয়া হবে। তবে বাস্তবে তা পরিশোধ করার উদ্যোগ নিচ্ছে না কর্তৃপক্ষ।
অপর শ্রমিক রমজান আলী বলেন, 'আমরা আমাদের ন্যায্য দাবি নিয়ে রাস্তায় নেমেছি। অথচ আমাদের ওপর পুলিশ টিয়ারশেল ও গুলি চালিয়েছে। আমরা আমাদের কথা কার কাছে বলবো।'
এএ ইয়ার্ন মিলস্ লিমিটেড কারখানার প্রশাসন বিভাগের কর্মকর্তা মো. সুলতান বলেন, 'ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে শ্রমিকদের দাবি আমরা বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করছি।'
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ্ জামান বলেন, 'খবর পেয়ে আন্দোলনরত শ্রমিকদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। বর্তমানে সেখানকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে।'
চলতি মাসের ৫ তারিখে একই দাবিতে আন্দোলন করেন জমজম স্পিনিং মিলস লিমিটেডের শ্রমিকরা। গত বছরের শেষের দিকে শ্রমিকদের বিভিন্ন সময়ে দাবি-দাওয়ার প্রেক্ষিতে সরকার পোশাক খাতে নূ্যনতম মজুরি ১২ হাজার ৫০০ টাকা নির্ধারণ করে। মোট চারটি গ্রেডে এই বেতন পরিশোধে সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। নিম্নতম মজুরি বোর্ড (এমডবিস্নউবি) শ্রমিকদের নতুন এই বেতন কাঠামো নিয়ে শিল্প মালিক ও অন্যান্য কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় করে। তবে দেশের সুতা উৎপাদনকারী স্পিনিং কারখানাগুলো এই সিদ্ধান্তের আওতায় পড়ে কি না তা নিয়ে ধূম্রজাল সৃষ্টি হয়। মজুরি বৃদ্ধির পর থেকে এই সমন্বয়হীনতার কারণে দেশজুড়ে দফায় দফায় শ্রমিকদের বিক্ষোভ করতে দেখা গেছে।