নৌ-ধর্মঘট স্থগিত, প্রাণ ফিরেছে সদরঘাটে

প্রকাশ | ১৮ এপ্রিল ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
সদরঘাট টার্মিনালে লঞ্চে উঠছেন যাত্রীরা -যাযাদি
যাযাদি রিপোর্ট সরকার নির্ধারিত কাঠামোয় বেতন দেয়াসহ ১১ দফা দাবি পূরণের আশ্বাস পেয়ে সারা দেশে নৌ-ধর্মঘট স্থগিত করেছে বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন। মঙ্গলবার গভীর রাতে শ্রম অধিদপ্তরে মালিক, শ্রমিক ও সরকারের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় বৈঠক শেষে ধর্মঘট স্থগিতের ঘোষণা আসে। বিআইডবিস্নউটিএর পরিবহন পরিদর্শক দিনেশ কুমার সাহা জানান, ধর্মঘট উঠে যাওয়ায় বুধবার সকাল থেকে ঢাকা সদরঘাটের চিত্র স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। পন্টুনে লঞ্চ ভিড়ছে, যাত্রীরাও আসছেন। মিতালী লঞ্চের মাস্টার মোস্তাফিজুর রহমান সকালে বলেন, 'দাবি মেনে নেয়ার আশ্বাসে ধর্মঘট প্রত্যাহার হয়েছে। সবাই লঞ্চ চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।' নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের ডাকে মঙ্গলবার প্রথম প্রহর থেকে এই ধর্মঘটে সারা দেশে সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ থাকে। ঘাটে এসে লঞ্চ না পেয়ে ভোগান্তি পোহাতে হয় যাত্রীদের। ব্যবসায়ীরাও বিপাকে পড়েন। যাত্রীবাহী লঞ্চের কর্মীদের জন্য ২০১৬ সালের ঘোষিত বেতন কাঠামোর পূর্ণ বাস্তবায়ন, সব শ্রমিকের বিনা পয়সায় খাবারের ব্যবস্থা করা অথবা খাদ্যভাতা দেয়া, কর্মস্থলে কিংবা দুর্ঘটনায় মৃতু্যতে শ্রমিকদের ১০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়া, প্রত্যেক নৌ-শ্রমিককে নিয়োগপত্র দেয়া, মাস্টার পরীক্ষার সনদ দেয়া ও নবায়নে অনিয়ম বন্ধ করা, বাল্কহেডসহ সব নৌযান ও নৌপথে সন্ত্রাস চাঁদাবাজি বন্ধ করা, নদীর নাব্যতা রক্ষা ও বয়া-বাতি স্থাপন করার মতো দাবি রয়েছে শ্রমিকদের ১১ দফার মধ্যে। লঞ্চমালিকরা মঙ্গলবার দুপুরে ধর্মঘট উপেক্ষা করেই লঞ্চ ছাড়ার ঘোষণা দেন। এরপর দক্ষিণাঞ্চলের কয়েকটি লঞ্চ ঢাকা সদরঘাট ছেড়েও যায়। কিন্তু পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা যায়নি। এরপর রাতে শ্রম অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে শ্রমিক ও মালিক প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠকে বসেন শ্রম প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান। দীর্ঘ বৈঠক শেষে সিদ্ধান্ত হয়, শ্রমিকদের সাতটি দাবি ৪৫ কার্যদিবসের মধ্যে 'ত্রিপক্ষীয় আলোচনার মাধ্যমে' সমাধান করতে হবে। বাকি চারটি দাবির বিষয়ে সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানানো হবে। ওই সভায় ঐকমত্যের ভিত্তিতে বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন ধর্মঘট স্থগিত করার ঘোষণা দেয় বলে শ্রম অধিদপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি শাহ আলম ভূঁইয়া, সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী আশিকুল আলম, বাংলাদেশ কার্গো ভ্যাসেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক নূরুল হক, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম ট্যাংকার্স ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক শফিকুর রহমান ভূঁইয়া, জাতীয় শ্রমিক লীগের কার্যকরী সভাপতি ফজলুল হক মন্টু, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের সভাপতি হাবিব উলস্ন্যাহ বাচ্চু উপস্থিত ছিলেন ওই সভায়। আর সরকারের পক্ষ থেকে শ্রম প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন শ্রম সচিব (ভারপ্রাপ্ত) উম্মল হাছনা এবং শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এটিএম মিজানুর রহমান।