নুসরাত হত্যার উত্তর দিতে আমরা ব্যর্থ হয়েছি: ফখরুল

প্রকাশ | ১৮ এপ্রিল ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
রাজধানীর ইনস্টিটিউশন অব ডিপেস্নামা ইঞ্জিনিয়ার্সে বুধবার 'শাপলাকুঁড়ি'-এর পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে বিজয়ীদের মাঝে সনদ তুলে দেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর -যাযাদি
যাযাদি রিপোর্ট ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফি হত্যার উত্তর দিতে আমরা ব্যর্থ হয়েছি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বুধবার রাজধানীর ইনস্টিটিউশন অব ডিপেস্নামা ইঞ্জিনিয়ার্সে ১০ম জাতীয় শিশুশিল্পী প্রতিযোগিতা 'শাপলাকুঁড়ি'-এর পুরস্কার বিতরণী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে তিনি এমন মন্তব্য করেন। জিয়া শিশু একাডেমি এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। শিশুদের উদ্দেশ্য করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমরা কেন এই হিংসা, প্রতিহিংসা, ক্ষোভ, হত্যাযজ্ঞের মধ্যে নেমে পড়েছি? কেন আমাদের রাফিকে এভাবে নির্যাতিত হয়ে মরতে হয়? কেন? আমি জানি না। এই উত্তর আমাদের রাজনীতিবিদদেরকেই দেয়ার কথা। কিন্তু আমরা ব্যর্থ হয়েছি। সুন্দর বাংলাদেশ দিতে আমরা ব্যর্থ হয়েছি। ব্যর্থ হয়েছি, তোমাদেরকে নিরাপত্তা দিতে। তিনি বলেন, তারপরও আমি স্বপ্ন দেখি। স্বপ্ন দেখি এই বাংলাদেশ একটা সুন্দর ও সমৃদ্ধির দেশ হবে। আমি স্বপ্ন দেখি এই শিশুরা নির্ভয়ে বিচরণ করবে। কোথাও তাদের ওপর কখনও আঘাত আসবে না। আমাদের মেয়েদেরকে পুড়িয়ে মারবে না। এই স্বপ্নগুলো আমরা দেখি। নিজের শৈশবের স্মৃতিচারণ করে শিশুদের উদ্দেশ্য করে তিনি আরও বলেন, প্রতি মুহূর্তে আমরা যান্ত্রিক হয়ে যাচ্ছি। যন্ত্রের কাছে চলে যাচ্ছি। প্রতি মুহূর্তে আমরা প্রযুক্তির কাছে হেরে যাচ্ছি। মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম। কেন করেছিলাম? আমরা সবাই বইয়ে পড়ি স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করেছিলাম। তাই না? কিন্তু সেই স্বাধীনতাযুদ্ধ কেন করেছিলাম? তখন আমরা যে দেশে বাস করছিলাম, সেই দেশটা নিজেদের দেশ বলে মনে হচ্ছিল না। মনে হচ্ছিল, কেউ বুঝি আমাদের বুকের ওপর চেপে বসে আছে। আমরা নিশ্বাস নিতে পারতাম না। এটা থেকে আমরা বের হয়ে আসতে চেয়েছিলাম। সেই কারণে আমরা যুদ্ধ করেছিলাম। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধে আমাদের যারা নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, তারা অত্যন্ত শ্রদ্ধেয় মানুষ। কিন্তু যে মানুষটি স্বাধীনতাযুদ্ধের ঘোষণা দিয়েছিলেন এবং নিজেই অস্ত্র নিয়ে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন- সেই মানুষটির নামেই জিয়া শিশু একাডেমি 'জিয়াউর রহমান'। তোমরা নামটা শুনেছ, কিন্তু জান না। কারণ তোমাদের বই থেকে আস্তে আস্তে নামটা মুছে দেয়া হচ্ছে! কিন্তু নামটা বারবার আমরা বলতে চাই। কারণ যে মানুষটি স্বাধীন, মুক্ত বাতাসের স্বপ্ন দেখিয়েছেন। এই কথাটি আজকে ভুলে গেলে চলবে না। আয়োজক সংগঠনের মহাপরিচালক এম হুমায়ুন কবিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ড. এমাজউদ্দীন আহমদ, ১০ম জাতীয় শিশুশিল্পী প্রতিযোগিতার বিচারক চলচ্চিত্রকার ছটকু আহমেদ, অভিনেত্রী রিনা খান, শিল্পী শফি মন্ডল, শিল্পী জিনাত রেহানা প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে আবৃত্তি, অভিনয়, সংগীত, নৃত্যের ১৩টি একক ও ৩টি দলীয় বিষয়ে ক ও খ দুই বিভাগে ১ম, ২য় ও ৩য় স্থানপ্রাপ্ত ৮৫ জন খুদে শিল্পীকে পুরস্কার ও সনদ প্রদান করা হয়। পরে পুরস্কারপ্রাপ্ত খুদে শিল্পীরা মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করে।